চোখের সামনে ফিঞ্চ পাখির নতুন স্পিসিস-এর ‘ম্যাক্রো’ নয় ‘মাইক্রো’ বিবর্তন হতে দেখা গেল

গত ২৩ শে নভেম্বর সায়েন্স জার্নালে একটি রিপোর্ট পাবলিশ হয়েছে । ল্যামিচ্যানী এবং তার সহযোগী রিসার্চারগন গালাপোগোস দ্বীপপুঞ্জে নতুন স্পিসিস-এর আবির্ভাবটি পর্যবেক্ষণ এবং রিপোর্ট করেন(1) ।

এসপানোলা থেকে গালাপোগোসের ড্যাফনি মেজোরে আগত একটি ডারউইনের ফিঞ্চ পাখির প্রজাতি Geospiza conirostris গালাপোগোসের ন্যাটিভ প্রজাতি Geospiza fortis-এর সাথে ব্রিডিং করে। ফলে, একটি নতুন হাইব্রিড প্রজাতি জন্ম নেয় যা পূর্ববর্তী প্রজাতি থেকে বড়। এই হাইব্রিড প্রজাতিটি গালাপোগোস-এ ক্ষরার সময় প্রাপ্ত খাদ্য রিসোর্সকে অভিভাবক প্রজাতি থেকে বেশী ব্যবহার করতে সক্ষম হয় এবং প্রাকৃতিক ভাবে বেঁচে থাকার সুবিধে পেয়ে নির্বাচিত হয়।

সংঙ্গানুযায়ী একটি প্রজাতির পরবর্তী বংশধরকে নতুন প্রজাতিতে পরিণত হতে হলে প্রয়োজন ‘রিপ্রোডাক্টিভ আইসোলেশন’। ‘রিপ্রোডাক্টিভ আইসোলেশন’ হল প্রজাতির এমন একটি বৈশিষ্ট্য যার ফলে সে আরেকটি প্রজাতির সাথে মেটিং করে না (অর্থাৎ একটি প্রজাতির পুরুষ, আরেকটি প্রজাতির নারীর সাথে মিলিত হয় না এবং ভাইস ভারসা)।

ফিঞ্চ পাখির একটি বৈশিষ্ট্য হলো এটির মেটিং চয়েজ (অর্থাৎ কোন পাখির সাথে মিলিত হবে) তা নির্ভর করে পাখির গানের ধরন এবং গঠনের ওপর। যেহেতু নতুন প্রজাতিটি Geospiza fortis প্রজাতি থেকে বড় এবং ভিন্ন সুরে গান গেতে শুরু করেছে, ফলে এটি মা-এর প্রজাতি থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, Geospiza fortis প্রজাতির অন্য কোন পাখির সাথে এটি মিলিত হয় না। সুতরাং, হাইব্রিড প্রজাতিটি স্পেসিয়েশনের সংঙ্গা অনুযায়ী নতুন একটি প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে।

আপনি কি কখনও লক্ষ্য করেছেন, কেন আপনার সন্তানের গঠন, চেহারা, কণ্ঠ হুবুহু আপনার বা আপনার স্পাউজের মত হয় না? কারণ, জননকোষের ডিএনএতে ক্রসিং ওভারের মাধ্যমে জেনেটিক রিকম্বিনেশন হয়। অর্থাৎ, মা ও বাবা থেকে আগত ক্রোমোজোমদ্বয়ের নির্দিষ্ট স্থানে জেনেটিক তথ্যের আদান প্রদান হয়, যেন জেনেটিক ভ্যারিয়েশন তৈরী হতে পারে। এটি জননকোষের একটি ‘বিল্ট-ইন’ প্রক্রিয়া।

অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে ধরুন এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরবর্তী বংশধরে এমন একটি পরিবর্তন এল যার ফলে পরবর্তী প্রাণীটি বিদ্যমান খাদ্যের উৎসকে বেশী ব্যবহার করতে পারে এবং একই সাথে যেই বৈশিষ্ট্যগুলো উক্ত প্রাণীর ক্ষেত্রে মেটিং চয়েজ নির্ধারণ করে (যেমন: ফিঞ্চ পাখির ক্ষেত্রে গানের সুর এবং শারীরিক গঠন) সেগুলোর একটিতে পরিবর্তন আসল। সেক্ষেত্রে উক্ত বংশধরটি পূর্ববর্তী প্রজাতি থেকে ধীরে ধীরে পৃথক প্রজাতিতে পরিণত হবে। এটির আরেকটি নাম আছে – সেক্সুয়েল সিলেকশন (2)।

বস্তুত, এই ভাবে প্রজাতি তৈরীর ঘটনা প্রকৃতিতে নতুন নয়। সালামান্দার প্রজাতি Ensatina eschschoitzi-এর ৭টি উপপ্রজাতি যুক্তরাস্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রশান্ত মহাসাগর তীরবর্তী স্যান জাওকিন ভ্যালির আশেপাশে বাস করে (3)। উপ-প্রজাতিগুলোর মূল পার্থক্য তাদের গায়ের রঙ-এর নকশা (প্যাটার্ন) এবং (সম্ভবত) ফেরোমোন। সালামান্দারের গায়ের রং-এর নকশা পরিবর্তন হয় হোমোলোগাস রিকম্বিনেশন-এর মাধ্যমে। সহজ কথায়, শুক্রাণু ও ডিম্বাণু তৈরী হওয়ার এক পর্যায়ে এক জোড়া ক্রোমোজামের মধ্যে ক্রসিংওভার নামক একটি ঘটনা ঘটে। এ প্রক্রিয়ায় জিনোমের কিছু সুনির্দিষ্ট অংশের আদান প্রদান এবং পুনঃবিন্যাস হয়। যদিও রিকম্বিনেশন হচ্ছে র‍্যাণ্ডমভাবে, কিন্তু তা হচ্ছে একটি নিয়ন্ত্রিত সীমায় কিছু বিনিময় যোগ্য এলিলির (জিন) মধ্যে।

এভাবে সৃষ্ট ভ্যারিয়েশনের মাধ্যমে ভ্যালীর উত্তরে অবস্থিত Ensatina eschschoitzi picta উপ-প্রজাতিটি দক্ষিণ দিকে এসে এমন দুটো উপ-প্রজাতি Ensatina eschschoitzi klauberi এবং Ensatina eschschoitzi eschschoitzii–তে পরিণত হয়েছে, যারা পরস্পর যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হয় না। সালামান্দার প্রজাতি যৌনক্রিয়ার জন্য বিপরীত লিঙ্গ বাছাই করতে সাধারণত ফেরোমোন নামক শরীর থেকে নিঃসৃত বিশেষ গন্ধ উৎপাদনকারী পদার্থ ব্যবহার করে। (এছাড়া, কোন কোন প্রজাতি স্পর্শ এবং কোন কোন প্রজাতি দৃষ্টি-সম্বন্ধীয় সূত্র তথা ভিজুয়্যাল কিউ ব্যবহার করে থাকে)। সে হিসেবে  Ensatina eschschoitzi klauberi এবং Ensatina eschschoitzi eschschoitzii উপ-প্রজাতি দুটোতে ক্রসিং ওভারের মধ্য দিয়ে রং এবং ফেরোমোনের যথেষ্ট পার্থক্য হয়ে যাওয়ায় তারা প্রজাতির সংজ্ঞানুযায়ী আলাদা প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে।

গুগোলে রিং স্পিসিস লিখে সার্চ দিলে এরকম আরও কিছু উদাহরণ পাওয়া যাবে। মূল বিষয়টি হলো, এসব ক্ষেত্রেই এমন কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজাতি তৈরী হয়ে যাচ্ছে যা হওয়ার জন্য জিনোমে ইতোমধ্যে নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা করা আছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই ‘এলোপাতাড়ি মিউটেশনের’ কোন ভূমিকা নেই।
স্পেসিয়েশন অর্থ হলো একটি নতুন প্রজাতি তৈরী হওয়া।

জেনেটিক্যালী স্পেসিয়েশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে-
– হাইব্রিড স্পেসিয়েশন –যেমন অদ্য আর্টিকেলে ফিঞ্চ পাখি।
– পলিপ্লয়েড স্পেসিয়েশন- যেটা জবা ফুলে বেশ দেখা যায়।
– ট্রান্সপজিশন- থিওডসিয়াস ডবঝানস্কি ফ্রুট ফ্লাইতে এই ধরনের স্পেসিয়েশন দেখিয়েছেন।

প্রতিটি ক্ষেত্রে কোষের ‘ইন-বিল্ট’ প্রক্রিয়ায় কিছু জেনেটিক ভ্যারিয়েশন তৈরী হয়। তবে রিপ্রোডাক্টিভ আইসোলেশনের ক্ষেত্রে যে সকল প্রক্রিয়া ভূমিকা রাখে সেগুলো হল ন্যাচারাল সিলেকশ (রি-ইনফোর্সমেন্ট ও ইকোলোজিকাল) এবং সেক্সুয়েল সিলেকশন। (২)

এ সবগুলো প্রক্রিয়াকে আপনি সহজেই ‘মাইক্রো-ইভল্যুশন’-এর কাতারে ফেলতে পারবেন। কারণ, প্রতিটি ক্ষেত্রেই কোন বড়-মাত্রার জেনেটিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না। অর্থাৎ, আপনি চোখের সামন একটি জেনাসের অন্তর্গত একাধিক স্পিসিস তৈর হতে দেখবেন। কিন্তু, একটি ফ্যামিলির অধীনে নতুন কোন জেনাস তৈরীর ঘটনা চোখের সামনে দেখতে পারবেন না।

ডারউইনবাদীদের দাবী অনুযায়ী বড় মাত্রার জেনেটিক পরিবর্তন হয় অনেক সময় নিয়ে, ফলে এটি চোখের সামনে দেখা যায় না। জেনাসের আগমন আপনি কখনও সচক্ষে দেখতে পারবেন না। কারণ, এর জন্য যে মিলিয়ন বছর সময় দরকার সে পর্যন্ত আপনি বাঁচবেন না। নতুন জেনাস যে কমন ডিসেন্টের মাধ্যমে অন্য কোন কমন জেনাস থেকে এসেছে তার প্রমাণ হলো ফসিল এবং মলিকুলার হোমোলজি। যেমন: হোমো জেনাস (মানুষ জাতীয় দোপেয়ে প্রাণী) এবং প্যান জেনাস (শিম্পাঞ্জী)-এর একটি কমন এনসেস্টর ছিলো।

অস্ট্রালোপিথেকাস, আর্ডিপিথেকাস এদের গঠন পুরোপুরি শিম্পাঞ্জির মত না, কিছুটা মানুষের কাছাকাছি। অন্যদিকে নিয়েন্ডারথ্যাল, ডেনিসোভা হোমিনিন-এরা মানুষের মত গঠনযুক্ত ছিলো। কিন্তু, অস্ট্রালোপিথেকাস-কে আপনি শিম্পাঞ্জীর কাতারে ফেলবেন, নাকি নতুন একটি ফ্যামিলি হিসেবে নাম দিবেন সেটা কিন্তু পুরোপুরি আপনার ওপর নির্ভর করছে। এগুলোর ক্ষেত্রে জীবাশ্ম হাড় ছাড়া আমাদের কাছে অন্য কোন এভিডেন্স নেই। ঠিক তেমনি সংস্কৃতিমনা নিয়েন্ডারথেল বা ডেনিসোভাকে-যে আপনি মানুষ বলতে চাইছেন না তার-ই বা ভিত্তি কি?

অন্যদিকে, হোমোলজি, তা মলিকুলার হোক বা মরফোলজিকাল, কমন ডিজাইনের কারণেও হতে পারে। সুতরাং, প্রজাতির কমন ডিসেন্ট আর্গুমেন্ট তখনই গ্রহণযোগ্য হবে যখন আপনি ডিএনএ-তে নতুন কার্যকরী তথ্য যোগ হওয়ার স্পষ্ট উদাহরণ দিতে পারবেন। আপনি বিভিন্ন জিন নিয়ে ‘মলিকিউলার ফাইলোজেনী’ আঁকলে একেকটির জন্য একেকটি কমন এনসেস্ট্রির সময় পাওয়া যাবে (4)।

সুতরাং, স্বয়ংক্রিয় ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় বিবর্তনের বিষয়টি তখনই পুরোপুরি মানা যেতে পারে যখন আপনি মলিকিউলার লেভেলে ‘বড় আকারের’ জেনেটিক ইনফরমেশন যোগ হওয়ার প্রসেস দেখাতে পারবেন। নব্য-ডারউইনবাদের র‍্যানডম মিউটেশন যে এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে অক্ষম তা অনেক দার্শনিক ও বিজ্ঞানীরাও বুঝতে পারছেন। (৫)

এই ভ্যারিয়েশন আসার বিষয়টি কিভাবে সম্ভব সেটা নিয়ে ‘পদ্ধতিগত প্রকৃতিবাদ’-এর গণ্ডির মধ্যে থেকেই অনেক বিজ্ঞানী নতুন থিওরী দিচ্ছেন। জেমস শ্যাপিরোর ন্যাচারাল জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, লিন মার্গুলিসের সিমোবায়োসিস এবং সুসুম ওহনো-এর জিন ডুপ্লিকেশন- এর মধ্যে অন্যতম।

লক্ষ্যণীয় এই প্রতিটি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেই ‘এলোপাতারী’ শব্দটি পরিত্যাক্ত হয়েছে, কারণ এগুলো নিয়ণ্ত্রিত। এগুলো যদি দিন শেষে যথাযথ হিসেবে প্রমাণিতও হয় সবগুলোই একটা কমন এনসেস্টর থেকে শুরু হবে যার মধ্যে অসংখ্য সুনিয়ন্ত্রিত বিবর্তিত হওয়ার প্রক্রিয়া প্রথম থেকেই প্রথিত আছে। অর্থাৎ, আপনি ‘পদ্ধতিগত প্রকৃতিবাদ’ থেকে ‘দার্শনিক প্রকৃতিবাদ’-এ গিয়ে নিজের চূড়ান্ত প্রশ্নগুলোকে আটকে রাখবেন যেন একটি ‘বুদ্ধিমান’ সত্ত্বার অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যায়, সেটি দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়।

রেফারেন্স:
1. Lamichhaney S, Han F, Webstar MT, Andersson L, Grand BR, Grant PR. Rapid hybrid speciation in Darwin’s finches. Science (80- ). 2017;(November).
2. Speciation. In: Wikipedia. 2017.
3. Rosa Rubicondior: Ring Species – Evolution in Progress [Internet]. [cited 2017 Nov 29]. Available from: http://rosarubicondior.blogspot.com/…/ring-species-evolutio…
4. Stephen Meyer, Darwin’s Doubt 2013
5. Thomas Nagel, Mind and Cosmos 2012

…………………..

“স্বয়ংক্রিয় ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় বিবর্তনের বিষয়টি তখনই পুরোপুরি মানা যেতে পারে যখন আপনি মলিকিউলার লেভেলে ‘বড় আকারের’ জেনেটিক ইনফরমেশন যোগ হওয়ার প্রসেস দেখাতে পারবেন”  আমার লেখার এই অংশটির প্রেক্ষিতে একজন ফেসবুক ডারউইনবাদী নিচের লিংকটি দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, র‍্যানডম মিউটেশনের মাধ্যমে অহরহ নতুন জিন তৈরী হচ্ছে!! তার দাবী কেন সঠিক নয় সেটা ব্যাখ্যা করতে আমি একটি বিস্তারিত মন্তব্য লিখি। সবার জানার জন্য এখানে সংযোজন করে দিচ্ছি।

লিংক: “Gene Genesis: Scientists Observe New Genes Evolving from Mutated Copies”

– https://www.scientificamerican.com/…/gene-genesis-scientis…/

উত্তর:  লিংকে জিন ডুপ্লিকেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। জিন ডুপ্লিকেশনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত সর্বচ্চো যেটা করা গিয়েছে তা হলো নিম্নরুপ- ধরুন, একটি ব্যাকটেরিয়াতে অলরেডি এক্সিসটিং এনজাইম, যার ডুয়েল ফাংশন আছে, এর মধ্যে একটি ফাংশন ‘ক’ শক্তিশালী এবং একটি ফাংশন ‘খ’ দুর্বল। উক্ত ব্যাকটেরিয়াতে ‘খ’ ফাংশন সম্পাদনকারী শক্তিশালী এনজাইমটি না থাকলে যেটা হবে (প্রয়োজনীয় প্রতিকূল পরিবেশে যেখানে উক্ত ‘খ’ এনজাইমটির ফাংশন খুবই জরুরী) প্রথম এনজাইমটির জিন ডুপ্লিকেটেড হবে এবং ডুপ্লিকেটেড কপিতে মিউটেশনের মাধ্যমে ‘খ’ ফাংশনটি এক পর্যায়ে শক্তিশালী হয়ে যাবে।

এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়-
এক, আগে মনে করা হতো এই প্রক্রিয়াটি পুরোপুির র‍্যানডম। কিন্তু, জেমন শ্যাপিরো দেখাচ্ছেন যে, ব্যাকটেরিয়ার ভিতর কঠিন পরিবেশে এডাপ্ট করার জন্য কতগুলো প্রক্রিয়া ইনবিল্ট আছে। ফলে ব্যাকটেরিয়া নতুন কোন পরিবেশে এলে তার ‘নির্দিষ্ট’ কিছু জেনেটিক রিজিওনে ‘র‍্যানডম মিউটেশন জেনারেটিং’ প্রক্রিয়া এক্টিভেট করে। যেন অভিনব পরিবেশে সে খাপ খাওয়াতে পারে। অর্থাৎ, আদতে এই প্রক্রিয়াটি র‍্যানডম না। বিষয়টার সাথে ভার্টিব্রেট জীবের ইমিউন সিস্টেমের পদ্ধতিগত মিল আছে।

দুই, জিন ডুপ্লিকেশনের মাধ্যমে যদি এমন কোন এডাপটেশনের প্রয়োজন হয় যেখানে দুই বা ততোধিক অ্যামাইনো এসিড দরকার হবে এবং ফলে একাধিক পয়েন্ট মিউটেশনের দরকার হবে, সেক্ষেত্রে উক্ত এডাপটেশনটি জিনোমে ফিক্স হতে যে পরিমাণ অর্গানিজম দরকার তার সংখ্যা অনেক বেশী ১০^৯। কার্যত, ব্যাকটেরিয়া জাতীয় এককোষী প্রাণী ছাড়া এ ধরনের মিউটেশন সম্ভব নয়। (১)

তৃতীয়ত, ক্লোরোকুইন রেজিসেন্ট-এর প্রাকটিকেল উদাহরণ হতে দেখা যায় যে যেখানে দুটো প্রোটিন প্রোটিন ইন্টারেকশন সাইটে সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশন লাগে সেখানে মিনিমাম অর্গানিজম দরকার ১০^২০। (২)

চতুর্থত, একটি এনজাইমকে ভিন্ন ফাংশনের একটি এনজাইমে পরিণত করতে দরকার ৭ বা ততোধিক সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশন। (৩)

অর্থাৎ, আপনার আর্টিকেল থেকে র‍্যানডম প্রক্রিয়ায় নতুন তথ্য যোগ অহরহ হয় বলে যে দাবী করলেন এটা এক্সাজারেশন। বরং, র‍্যানডম প্রক্রিয়ায় নতুন তথ্য যোগ হওয়া সম্ভব হলেও তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্গানিজম আপনি পৃথিবীর ইতিহাসে খুজে পাবেন না। বস্তুত, চারটি সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশনের জন্য দরকার ১০^৪০ টি ব্যাকটেরিয়া (অর্গানিজম)। যা পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো ব্যাকটেরিয়া তৈরী হয়েছে তার সমান। (২)

1. http://onlinelibrary.wiley.com/doi/10.1110/ps.04802904/full
2. Michael Behe, Edge of evolution
3. http://bio-complexity.org/…/view/BIO-C.2011.1/BIO-C.2011.1

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *