কাপ্তাই লেইকের একটা রিসোর্টে ফ্যামিলি সহ ঘুরতে গিয়েছিলাম। ছবিটা রিসোর্টের একটি কটেজের ব্যালকনি থেকে তোলা। এই ধরনের ভ্রমনের অনুভূতি ঠিক ছবিতে তুলে আনা সম্ভব হয় না।
সারাদিনের ক্লান্তিকর সফর শেষে যখন কটেজের ব্যালকনি থেকে কাপ্তাই লেকের নয়নাভিরাম দৃশ্য ও হিম শীতল বাতাসের পরশ গায়ে এসে লাগল, তখনই যেন সকল ক্লান্তি এক নিমিষেই দূর হয়ে গেল, অস্থির চিত্ত প্রশান্ত হল। কটেজগুলো লেকের ঠিক পার ঘেষে তৈরী করা। পুরোপুরি আধুনিক নির্মাণশৈলীতে তৈরী রুমগুলো যথেষ্ট স্পেশাস ও কমফোর্টেবল।
আমাদের সবারই মনের চাওয়া এরকম প্রশান্তিপূর্ণ একটি বাসস্থান। কিন্তু, পৃথিবীতে খুব অল্প মানুষের সামর্থ বা সুযোগ আছে যে, এরকম একটি স্থানের মালিক হতে পারবে। এমনকি এ ধরনের একটি স্থানে ঘুরতে গিয়ে একটু সময় কাটিয়ে আসার সক্ষমতাও হয়ত অধিকাংশের নেই। কারণ, এ স্থানগুলোতে আপনাকে সময় কিনে নিতে হবে। যার দামটা একেবারে কম নয়।
তবে, পৃথিবীর সীমাবদ্ধ ভূমিতে সব মানুষের এ ধরনের ঘর থাকা সম্ভবও নয় এবং সীমাবদ্ধ সময়ে এ ধরনের বাসস্থানের কোন প্রয়োজনীয়তাও নেই।
কিন্তু, একটা জায়গায় গেলে আমাদের সবার জন্য এ ধরনের আলাদা ঘর থাকা অসম্ভব না। ইন ফ্যাক্ট, ওখানে এমন ঘর থাকবে যা হয়ত আরও পরিপূর্ণ, আরও প্রশান্তি দায়ক। ঐ ঘরের পাশে শুধু লেক নয়, হয়ত ঝর্ণাধারাও থাকবে। হয়ত থাকবে পাহাড়, হৃদ ও সমুদ্রের অপূর্ব মিশেল। থাকবে সুস্বাদু খাবারের অ্যাবান্ডেন্স। থাকবে যতদিন ইচ্ছে, ততদিন থাকার সুযোগ। এবং, যতবার ইচ্ছে, ততবার। কোন সীমা নেই এই সময়ের। হতে পারে তা আমাদের কল্পনার চেয়েও সুন্দর হবে। সাথে থাকবে অপরিবর্তনীয় মালিকানা। কেননা, এই জমিনের একাধিক উত্তারিকারী থাকবে না, অন্য কেউ কখনও দখলের দাবি করতে আসবে না।
তবে, এই ঘরের মালিকানা পেতে আমাদের একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং কষ্ট করতে হবে। আমাদের রবের দেয়া এথিকাল গাইডলাইন ফলো করতে হবে, আমৃত্যু । দুনিয়ার একটি সুন্দর জায়গায় কিছুক্ষণ থাকার জন্য অর্থ জমাতে গিয়ে যদি আমরা এত কষ্ট করতে পারি। তাহলে, পরপারের সেই সময়ের জন্য প্রস্তুতি নেয়াও আমাদের জন্য সম্ভব। শুধুমাত্র দরকার এই সত্যের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন এবং মন থেকে তার সত্যতার ব্যপারে উপলব্ধি করা।
চলুন না, যিনি আমাদের সুন্দরাবোয়বে তৈরী করলেন, তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি এবং তাঁর পথে সুন্দর কাজ করে সেই সময়ের প্রস্তুতি নিতে থাকি।
হ্রদের পাশে ঘর
২৪.০২.২০২৪
Leave a Reply