চিকুনগুনিয়া

চিকুনগুনিয়ার অন্যতম লক্ষণ হল জ্বর, অস্থি:সন্ধি তথা গিড়ায় ব্যাথা, স্কিন র‍্যাশ, মাংসপেশীর ব্যাথা, মাথাব্যাথা, চুলকানী এবং শরীর ফুলে যাওয়া। সাধারনত চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত হলে জ্বর দিয়ে লক্ষণ শুরু হয়, অতঃপর অন্যান্য লক্ষণগুলো আসে। তবে, আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে  ৭০%-এর বেশী রোগীর সমস্যা শুরু হয়েছে জ্বরের আগে গিড়া ব্যাথা দিয়ে । পরবর্তীতে শতভাগ রোগীই ব্যাথায় আক্রান্ত হন। পঁচাশি শতাংশ রোগী তীব্র ব্যাথার কথা বলেন।

আমাদের গবেষণায়, ব্যাথার তীব্রতা পরিমাপ করতে নিউমেরিকাল পেইন রেটিং-স্কেল নামক একটি স্বীকৃত পরিমাপক ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্কেল অনুযায়ী রোগীকে ব্যাথার তীব্রতা অনুপাতে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত যে কোন একটি নাম্বার দিতে বলা হয়। ব্যাথার তীব্রতা কম হলে ১ এবং ব্যতার তীব্রতা বেশী হলে ১০। এই স্কেল অনুসারে আমাদের গবেষণায় রোগীদের গড় ব্যাথার তীব্রতা ছিলো ৮.৩।

প্রায় ৫৬% রোগীর চার-এর অধিক গিড়া আক্রান্ত পাওয়া গিয়েছে এবং প্রায় ৪০% রোগীর ক্ষেত্রে আক্রান্ত গিড়ার সংখ্যা ছিলো দুই থেকে চারটি। দেহের বিভিন্ন গিড়ার মধ্যে পায়ের গোড়ালী এবং হাতের কবজির সন্ধি আক্রান্ত হয়েছিলো সবচেয়ে বেশী।  রোগী ব্যাথার জন্য প্রায় ৭০% রোগীর দৈনন্দিন কাজে ব্যঘাত ঘটে এবং প্রায় ৬৬ শতাংশ রোগীর ঘুমে ব্যঘাত ঘটে।

আমাদের গবেষণায় বয়স, লিঙ্গ এবং পূর্বাপর শারিরীক অবস্থার উপর ভিত্তি করে রোগের লক্ষনের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। পনের বছরের নিচের বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দুই থেকে চারটি গিড়ায় ব্যাথা এবং স্কিন র‍্যাশ বেশী দেখা যায়। অন্যদিকে ষাটোর্ধ্ব রোগীদের ক্ষেত্রে গিড়া ফুলে যাওয়া ছিলো অন্যতম প্রধান লক্ষণ। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যথার তীব্রতা অভিযোগ ছিল সবচেয়ে বেশী।

এ গবেষণা দেখা গেছে চিকুনগুনিয়ার কারণে ৯৫% রোগী বিছানায় পড়ে আছেন। আক্রান্ত রোগী কাজে যেতে পারছেন না, ঘরের কাজ করতে পারছেন না এবং বাচ্চার স্কুলে যেতে পারছে না। প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী ১০ দিন পর্যন্ত কোন কাজই ঠিক মত করতে পারেন নি। এ মহামারীতে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশী চাপে ছিলো তারা যাদের মাসিক আয় ২৫০০০ টাকার কম।  এমন কি দীর্ঘদিন কাজে অনুপস্থিত থাকার কারণে কারও কারও ক্ষেত্রে চাকুরী চলে যাওয়ার ঘটনাও পাওয়া গেছে।

বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত ও বহুল ব্যবহৃত প্রশ্নমালা দিয়ে জীবনযাত্রার মান যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে যাদের বয়স ৬০-এর বেশী, যাদের মাসিক আয় ৫০০০০ টাকার বেশী, চাকুরীজীবি এবং ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান অন্যদের তুলনায় বেশী কমে গিয়েছিলো। 

আমাদের এ গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশের চিকুনগুনিয়ার প্রধান লক্ষনগুলো চিহ্নিত করেছি এবং জীবনযাত্রার উপর এর প্রভাব নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক অধ্যয়ন করেছি। আমরা আশা করছি এই গবেষণা জাতীয় পর্যায়ে চিকুনগুনিয়া রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধে নীতিনির্ধারনে সহায়ক হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দালিলীক অবদান হিসেবে থেকে যাবে।         

ঢাকা শহরে গতবছর চিকুনগুনিয়ার বড় আকারের মহামারী হয়ে গেল। এ সময়  আমরা চেষ্টা করেছি চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীদের লক্ষণ, জীবনযাত্রার মান( Quality of Life) এবং রোগাক্রান্ত থাকার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি নিয়ে গবেষণা করার।  আমাদের গবেষণায় আমরা ১৩২৬ জন চিকুনগুনিয়া রোগী থেকে তথ্য নিয়েছি। যেটি আমাদের জানামতে বিশ্বে এ সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় কাজ।

চিকুনগুনিয়ার অন্যতম লক্ষণ হল জ্বর, অস্থি:সন্ধি তথা গিড়ায় ব্যাথা, স্কিন র‍্যাশ, মাংসপেশীর ব্যাথা, মাথাব্যাথা, চুলকানী এবং শরীর ফুলে যাওয়া। সাধারনত চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত হলে জ্বর দিয়ে লক্ষণ শুরু হয়, অতঃপর অন্যান্য লক্ষণগুলো আসে। তবে, আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে  ৭০%-এর বেশী রোগীর সমস্যা শুরু হয়েছে জ্বরের আগে গিড়া ব্যাথা দিয়ে । পরবর্তীতে শতভাগ রোগীই ব্যাথায় আক্রান্ত হন। পঁচাশি শতাংশ রোগী তীব্র ব্যাথার কথা বলেন।

আমাদের গবেষণায়, ব্যাথার তীব্রতা পরিমাপ করতে নিউমেরিকাল পেইন রেটিং-স্কেল নামক একটি স্বীকৃত পরিমাপক ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্কেল অনুযায়ী রোগীকে ব্যাথার তীব্রতা অনুপাতে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত যে কোন একটি নাম্বার দিতে বলা হয়। ব্যাথার তীব্রতা কম হলে ১ এবং ব্যতার তীব্রতা বেশী হলে ১০। এই স্কেল অনুসারে আমাদের গবেষণায় রোগীদের গড় ব্যাথার তীব্রতা ছিলো ৮.৩।

প্রায় ৫৬% রোগীর চার-এর অধিক গিড়া আক্রান্ত পাওয়া গিয়েছে এবং প্রায় ৪০% রোগীর ক্ষেত্রে আক্রান্ত গিড়ার সংখ্যা ছিলো দুই থেকে চারটি। দেহের বিভিন্ন গিড়ার মধ্যে পায়ের গোড়ালী এবং হাতের কবজির সন্ধি আক্রান্ত হয়েছিলো সবচেয়ে বেশী।  রোগী ব্যাথার জন্য প্রায় ৭০% রোগীর দৈনন্দিন কাজে ব্যঘাত ঘটে এবং প্রায় ৬৬ শতাংশ রোগীর ঘুমে ব্যঘাত ঘটে।

আমাদের গবেষণায় বয়স, লিঙ্গ এবং পূর্বাপর শারিরীক অবস্থার উপর ভিত্তি করে রোগের লক্ষনের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। পনের বছরের নিচের বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দুই থেকে চারটি গিড়ায় ব্যাথা এবং স্কিন র‍্যাশ বেশী দেখা যায়। অন্যদিকে ষাটোর্ধ্ব রোগীদের ক্ষেত্রে গিড়া ফুলে যাওয়া ছিলো অন্যতম প্রধান লক্ষণ। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যথার তীব্রতা অভিযোগ ছিল সবচেয়ে বেশী।

এ গবেষণা দেখা গেছে চিকুনগুনিয়ার কারণে ৯৫% রোগী বিছানায় পড়ে আছেন। আক্রান্ত রোগী কাজে যেতে পারছেন না, ঘরের কাজ করতে পারছেন না এবং বাচ্চার স্কুলে যেতে পারছে না। প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী ১০ দিন পর্যন্ত কোন কাজই ঠিক মত করতে পারেন নি। এ মহামারীতে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশী চাপে ছিলো তারা যাদের মাসিক আয় ২৫০০০ টাকার কম।  এমন কি দীর্ঘদিন কাজে অনুপস্থিত থাকার কারণে কারও কারও ক্ষেত্রে চাকুরী চলে যাওয়ার ঘটনাও পাওয়া গেছে।

বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত ও বহুল ব্যবহৃত প্রশ্নমালা দিয়ে জীবনযাত্রার মান যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে যাদের বয়স ৬০-এর বেশী, যাদের মাসিক আয় ৫০০০০ টাকার বেশী, চাকুরীজীবি এবং ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান অন্যদের তুলনায় বেশী কমে গিয়েছিলো। 

আমাদের এ গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশের চিকুনগুনিয়ার প্রধান লক্ষনগুলো চিহ্নিত করেছি এবং জীবনযাত্রার উপর এর প্রভাব নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক অধ্যয়ন করেছি। আমরা আশা করছি এই গবেষণা জাতীয় পর্যায়ে চিকুনগুনিয়া রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধে নীতিনির্ধারনে সহায়ক হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দালিলীক অবদান হিসেবে থেকে যাবে।         

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *