শ্রোডিঞ্জারের বিড়াল বক্সের ভিতর বেঁচে আছে না কি রেডিয়েশনের কারণে মরে গেছে তা ‘না দেখার’ আগ পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া সম্ভব না। কারণ, এলিমেন্টারী পার্টিকেলগুলো অবজার্ভ করার আগ পর্যন্ত কোয়ান্টাম সুপারপজিশনে থাকে। যখন অবজার্ভ করা হয় তখনই কেবল তাদের সুপারপজিশনের ডিকোহারেন্স হয়।
অর্থাৎ, তাকানোর আগ পর্যন্ত বিড়াল হয়ত একই সাথে মৃত এবং জীবিত অবস্থায় আছে।
ঠিক একই ভাবে আকাশে যখন চাঁদ ওঠে, চাঁদে তাকানোর আগ পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত নই যে চাঁদ আকাশের ওই অবস্থানেই আছে কি না। যদি ধরে নেই, আমি না তাকানো পর্যন্ত চাঁদ কোয়ান্টাম সুপারপজিশনে থাকে, তার অর্থ হলো আমি না তাকানো পর্যন্ত চাঁদ একক, দ্বিখন্তিত, চূর্ণবিচূর্ণ যে কোন অবস্থায় থাকতে পারে।
কিন্তু, আমি তাকানোর পড়ে চাঁদ কেন সব সময় একটাই দেখায়? এইখানে এসে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ইন্টারপ্রিটেশনের অসংখ্য বিভিন্নতা তৈরী হয়েছে। এই সকল ইন্টারপ্রিটেশন বিভিন্ন দিক থেকে করা হয়েছে। প্রতিটি ইন্টারপ্রিটেশন যে আবার মিউচুয়্যালী এক্সক্লুসিভ তাও না। এর মধ্যে বোর ও হাইজেনবার্গের কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিটেশনকে ধরা হয় ‘স্ট্যান্ডার্ড’ ইন্টারপ্রিটেশন।
একটি ইন্টারেস্টিং ইন্টারপ্রিটেশন হল ভন নিউম্যান ইন্টারপ্রিটেশন। এটা অনুযায়ী ‘কনসাসনেস’ কোয়ান্টাম কোল্যাপস–এ ভূমিকা রাখে। এমনকি, জন আর্চিবাল্ড হিলার-এর মতে ইউনিভার্স-এর এক্সিসটেন্স-এর পেছনে কনসাসনেস-এর ভূমিকা আছে।
মোদ্দাকথা, কোয়ান্টাম ডাবল-স্লিট এক্সপেরিমেন্ট বারবার দেখিয়েছে যে কনাগুলো দেখার আগ পর্যন্ত কোয়ান্টাম সুপারপজিশনে থাকে। এমনকি কয়েকদিন আগে ২০০০ পরমানুর অনুতেও এটা পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে।
এখানে যদি আমরা ইমাম গাজ্জালির ওকেশনালিজম (পূর্ণ রূপে বা আংশিক ভাবেও) নিয়ে আসি তাহলে এভাবে বলা যায় যে মহাবিশ্বের সকল ঘটনা একটা হবার সম্ভাব্যতার মধ্যে থাকে এবং যেগুলো ঘটে সম্পূর্ণ আল্লাহ আজ্জা ওয়া জল্লার ইচ্ছেতেই ঘটে। একটা ইভেন্ট-এর সাথে আরেকটা ইভেন্ট-এর ডাইরেক্ত কজাল রিলেশনশিপ নাই, যা আছে তা হলো কোরিলেশনাল।
সহজ বাংলায় আল্লাহ তাআলা আমাদের যেভাবে দেখান আমরা সেভাবেই দেখি। সুতরাং, আল্লাহ তাআলা যদি এক মূহুর্তের জন্য নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহ উপস্থিত সাহাবাদের চাঁদ দ্বিখন্ডিত করে দেখিয়ে থাকেন তা বর্তমান বিজ্ঞানের গবেষণালব্ধ জ্ঞান অনুসারেও কনক্লুসিভলি ভুল ভাবার কোন কারণ নাই।