ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন (আইডি)-এর প্রবক্তাদের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো তারা জীববিজ্ঞানের অত্যন্ত জটিল বিষয়গুলো সাবলিল ভাবে উপস্থাপন করতে পারে। মলিকিউলার বায়োলজিস্ট, আইকনস অব ইভল্যুশন ও জম্বি সায়েন্স বই দুটির লেখক ড. জোনাথান ওয়েলস তাদের মধ্যে একজন। বরাবরের মতই তার চমৎকার আরেকটি লেখা আজকে পড়লাম তাদের মুখপাত্র সাইট www.evolutionnews.org-এ। (কমেন্টে পোস্টটির লিংক শেয়ার করলাম)
প্রকৃতিতে Complex Specified Information (CSI) শুধুমাত্র বুদ্ধিমান সত্তার মানসিক কার্যক্রম (Mental activity) থেকে আসতে দেখা যায়। কোষের ডিএনএ-তে আছে CSI। প্রোটিনের গঠন নির্ধারণকারী এই তথ্য আছে সরলরৈখিক ফর্মে। এর বাইরেও কোষের ডিএনতে আরও কিছু কোড আছে: ডিএনএ-র কোন অংশ চালু হবে আর কোনটা চুপ থাকবে তার জন্য এপিজেনেটিক কোড, ডিএনএ-তে থেকে আরএনএ তৈরী হওয়া পর স্প্লাইসিং-এর জন্য স্প্লাইসিং কোড, ডিএনএ-থেকে ম্যাসেঞ্জার আরএনএ-তৈরী হয়ে কোথায় যাবে তার জন্য প্রয়োজনীয় জিপ কোড ইত্যাদি। এগুলো এক ধরনের সরলরৈখিক কোড যা একমাত্রিক।
এর বাইরের কোষের গঠন এবং এক কোষ (জাইগোট) থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রাণী হওয়ার জন্য আরও কিছু স্থানিক (Spatial) কোড আছে- বায়োইলেকট্রিক কোড এবং সুগার কোড। যেগুলো দ্বিমাত্রিক এবং ত্রিমাত্রিক কোড।
বায়োইলেকট্রিক কোড-এর উপর নির্ভর করে এমব্রায়োর গঠন। অর্থাৎ, একটি কোষ থেকে বিভাজিত হতে হতে বহুকোষী প্রাণীতে পরিণত হওয়া সময়, কোষের ঝিল্লীতে তৈরী হওয়া আয়ন চ্যানেল গুলো এক ধরনের বায়োইলেকট্রিক ফিল্ড গঠন করে, যার উপর নির্ভর করছে এমব্রায়োর মাথা থেকে পা পর্যন্ত গঠনের সঠিক অবস্থান। অর্থাৎ, কোথায় মাথা হবে, কোথায় হাত-পা হবে, এগুলোর স্থানিক তথ্য ধারন করে এই বায়োইলেকট্রিক কোড।
সুগার কোড নির্ধারণ হয় কোষঝিল্লীতে অবস্থিত গ্লাইকেন দ্বারা। সুগার কোডের কাজ হলো কোষ ঝিল্লীর ‘পোস্ট অফিস’ তৈরী এবং তার পোস্ট কোড নির্ধারণ করা। ঐ যে ডিএনএ থেকে বের হওয়ার আরএনএ যার মধ্যে জিপকোড ট্যাগ করা আছে, সে উক্ত পোস্ট কোডের উপর ভিত্তি করে কোষ ঝিল্লীর নির্দিষ্ট স্থানে যাবে। সুগার কোডের তথ্য বহনকারী কণার বৈশিষ্ট্যের কারণে সুগার কোড ডিএনএ-র জেনেটিক কোড অনেক বেশী জটিল।
ফলে, সুগার কোড এবং বায়োইলেকট্রিক কোড জেনেটিক কোডের চেয়েও বেশী CSI ধারণ করে।
যেখানে বিতর্কিত নিওডারউইনিয়ান প্রক্রিয়ায় জেনেটিক কোডের CSI ব্যাখ্যা করা সম্ভব না, সেখানে একটি কোষের অবস্থিত কয়েক লেয়ারের CSI কিভাবে এলোপাতাড়ি প্রক্রিয়ায় আসবে বলে দাবী করা যেতে পারে তা যে কোন ‘Sane’ ব্যক্তির জন্য বোঝাটা কঠিন।
উল্লেখ্য, যে জেনেটিক কোড আবিস্কারের পর থেকে নিওডারউইনিজমের আধিপত্যের কারণে সেন্ট্রাল ডগমা নামক একটি দৃষ্টিভঙ্গি জীববিজ্ঞানের জগতে প্রচলিত ছিল। যেটি হল DNA থেকে RNA থেকে প্রোটিন (থেকে জীব)। ফলে ডিএনএ-র বাইরেও যে জটিল কোড থাকতে পারে এই প্রশ্নগুলো অনেক মুখ থুবড়ে পড়ে ছিলো। কিন্তু, নতুন নতুন আবিস্কারের মধ্য দিয়ে ডারউইনিয়ান প্যারাডাইম তার অন্তিম যাত্রাপথে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে থাকায় উক্ত প্রশ্নগুলো আলোর মুখ দেখছে।
Leave a Reply