আমার লেখার “স্বয়ংক্রিয় ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় বিবর্তনের বিষয়টি তখনই পুরোপুরি মানা যেতে পারে যখন আপনি মলিকিউলার লেভেলে ‘বড় আকারের’ জেনেটিক ইনফরমেশন যোগ হওয়ার প্রসেস দেখাতে পারবেন” কথাটির প্রেক্ষিতে একজন নিচের লিংকটি দিয়েছেন যার শিরোনাম:
“Gene Genesis: Scientists Observe New Genes Evolving from Mutated Copies”
– https://www.scientificamerican.com/article/gene-genesis-scientists/
এবং বলেছেন যে, র্যানডম মিউটেশনের মাধ্যমে নাকি অহরহ নতুন জিন তৈরী হচ্ছে। তার দাবী কেন সঠিক নয় তার উত্তরটি আমি কমেন্টে দিলেও সবার জানার জন্য এখানে সংযোজন করা প্রয়োজন মনে করছি-
এই লিংকে জিন ডুপ্লিকেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। জিন ডুপ্লিকেশনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত সর্বচ্চো যেটা করা গিয়েছে তা হলো নিম্নরুপ- ধরুন, একটি ব্যাকটেরিয়াতে অলরেডি এক্সিসটিং এনজাইম, যার ডুয়েল ফাংশন আছে, এর মধ্যে একটি ফাংশন ‘ক’ শক্তিশালী এবং একটি ফাংশন ‘খ’ দুর্বল। উক্ত ব্যাকটেরিয়াতে ‘খ’ ফাংশন সম্পাদনকারী শক্তিশালী এনজাইমটি না থাকলে যেটা হবে (প্রয়োজনীয় প্রতিকূল পরিবেশে যেখানে উক্ত ‘খ’ এনজাইমটির ফাংশন খুবই জরুরী) প্রথম এনজাইমটির জিন ডুপ্লিকেটেড হবে এবং ডুপ্লিকেটেড কপিতে মিউটেশনের মাধ্যমে ‘খ’ ফাংশনটি এক পর্যায়ে শক্তিশালী হয়ে যাবে।
এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়-
এক, আগে মনে করা হতো এই প্রক্রিয়াটি পুরোপুির র্যানডম। কিন্তু, জেমন শ্যাপিরো দেখাচ্ছেন যে, ব্যাকটেরিয়ার ভিতর কঠিন পরিবেশে এডাপ্ট করার জন্য কতগুলো প্রক্রিয়া ইনবিল্ট আছে। ফলে ব্যাকটেরিয়া নতুন কোন পরিবেশে এলে তার ‘নির্দিষ্ট’ কিছু জেনেটিক রিজিওনে ‘র্যানডম মিউটেশন জেনারেটিং’ প্রক্রিয়া এক্টিভেট করে। যেন অভিনব পরিবেশে সে খাপ খাওয়াতে পারে। অর্থাৎ, আদতে এই প্রক্রিয়াটি র্যানডম না। বিষয়টার সাথে ভার্টিব্রেট জীবের ইমিউন সিস্টেমের পদ্ধতিগত মিল আছে।
দুই, জিন ডুপ্লিকেশনের মাধ্যমে যদি এমন কোন এডাপটেশনের প্রয়োজন হয় যেখানে দুই বা ততোধিক অ্যামাইনো এসিড দরকার হবে এবং ফলে একাধিক পয়েন্ট মিউটেশনের দরকার হবে, সেক্ষেত্রে উক্ত এডাপটেশনটি জিনোমে ফিক্স হতে যে পরিমাণ অর্গানিজম দরকার তার সংখ্যা অনেক বেশী ১০^৯। কার্যত, ব্যাকটেরিয়া জাতীয় এককোষী প্রাণী ছাড়া এ ধরনের মিউটেশন সম্ভব নয়। (১)
তৃতীয়ত, ক্লোরোকুইন রেজিসেন্ট-এর প্রাকটিকেল উদাহরণ হতে দেখা যায় যে যেখানে দুটো প্রোটিন প্রোটিন ইন্টারেকশন সাইটে সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশন লাগে সেখানে মিনিমাম অর্গানিজম দরকার ১০^২০। (২)
চতুর্থত, একটি এনজাইমকে ভিন্ন ফাংশনের একটি এনজাইমে পরিণত করতে দরকার ৭ বা ততোধিক সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশন। (৩)
অর্থাৎ, আপনার আর্টিকেল থেকে র্যানডম প্রক্রিয়ায় নতুন তথ্য যোগ অহরহ হয় বলে যে দাবী করলেন এটা এক্সাজারেশন। বরং, র্যানডম প্রক্রিয়ায় নতুন তথ্য যোগ হওয়া সম্ভব হলেও তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্গানিজম আপনি পৃথিবীর ইতিহাসে খুজে পাবেন না। বস্তুত, চারটি সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশনের জন্য দরকার ১০^৪০ টি ব্যাকটেরিয়া (অর্গানিজম)। যা পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো ব্যাকটেরিয়া তৈরী হয়েছে তার সমান। (২)
1. http://onlinelibrary.wiley.com/doi/10.1110/ps.04802904/full
2. Michael Behe, Edge of evolution
3. http://bio-complexity.org/…/view/BIO-C.2011.1/BIO-C.2011.1
Leave a Reply