বসে আছি একা ভাবছি কেন যে
পৃথিবীটা এত মায়াময় এত গূঢ় রহস্যে ঘেরা?
চাঁদের পিঠের কালো দাগ যেন,
সবুজ পাতায় লাল ফুল যেন,
কোমল গালের কালো তিল মত,
মানুষ সৃষ্টি সেরা।
বিশাল সাগরে একলা দ্বীপটি যেমনি দিচ্ছে ভাঁড়,
ধরার সুষমা রূপসী গলেতে পর্বত হয়ে হার,
নিকষ আধারে তারারা জ্বালিয়ে দুষ্টু মিষ্টি বাতি
হলদে প্রভাত রক্তিম ঊষা গড়ছে দিবস রাতি,
তেমনি ভুবনে সবুজ শ্যামল শান্ত ধীর স্থির
রকমারি রঙে অযুত গল্প নিয়ত করছে ভিড়।
সাজিয়ে তুলছে ধ্রুব ক্যানভাস স্রষ্টার রঙ-তুলি,
মরুতে সাগরে গিরিতে শূন্যে তরঙ্গ অঞ্জলি।
পরতে পরতে অজানা শিল্প
অণুতে অণুতে অদেখা কল্প’,
মুগ্ধ নয়নে শিখছি নিত্য
গ্রহ উপগ্রহ শশী আদিত্য
বিজ্ঞানে চলাফেরা,
জানছি কেন যে পৃথিবীটা এত গূঢ় রহস্য ঘেরা।
চোখ ও চোখের পাপড়িতে যেই অনুপম সংযোগ
খাদ্যের সাথে ক্ষুধার তেমনি তৃপ্তিতে যোগাযোগ।
তৃষ্ণা আর্ত মরুপথবাহী পথিকের তরে বারি,
শ্রম-ক্লান্ত শ্রমিকে নিদ্রা প্রশান্তি সঞ্চারী।
উর্বর জমি ক্ষর তপ্ত বৃষ্টিতে প্রাণ তার,
দু:খ-শোকের মিলন লগ্নে সুখ যেন উপহার।
ক্লান্তির সাথে বিশ্রাম করে সর্বদা কোলাকুলি
বিপদের সাথে বিপদমুক্তি সাফাইয়ের সাথে ধূলি
কষ্টের সাথে কেষ্টের যোগ
সুস্থতা সাথে চির-সাথী রোগ
প্রেমের সঙ্গে বিরহের খেলা
জন্মের সাথে মৃত্যর চলা
মাটি হয়ে মাটি ফেরা
বুঝছি কেন যে পৃথিবীটা এত গূঢ় রহস্যে ঘেরা।
কপোলের তিলে, চাঁদে’ কলঙ্কে,
গোলাপের কাঁটা নিখুঁত অঙ্কে
একে অপরের অংশ হয়েছে মায়াময় বন্ধনে,
গূঢ় রহস্য সঞ্চিত করে
অপরূপ রূপে মোহনীয় স্মরে
নন্দিত স্পন্দনে,
সুমধুর সুরে অবারিত গানে
বর্ণালী রঙে অবিচল প্রাণে
পৃথিবী মমতা ঘেরা,
বুঝেছি মর্মে-
মাটি আলো বারি
বায়ু পশু পাখি
তরুলতা সারি
সবকিছু মাঝে মানুষ কেন যে স্রষ্টা সৃষ্টি সেরা।
আবদুল্লাহ সাঈদ খান
১৪/০১/২০১৩, ঢাকা