Category: কবিতা ও ছড়া
প্রার্থনা
হে মহাকালের মহাস্রষ্টা!
হে মহাজ্ঞানী! সর্বদ্রষ্টা!
হে অনাদি অনন্ত অসীম!
আমি ক্ষুদ্র দরিদ্র সসীম।
আমি পাপী,
আমি অগণন পাপে ভাসমান পরিতাপী।
মোর অশ্রুসজল নয়ন, সিক্ত মন,
যুঝে ঝঞ্চাপ্রবণ গ্লানী সর্ব ক্ষণ,
বুঝে যুক্তি
খুঁজে মুক্তি,
যাচে সংশয়হীন চিত্ত নিত্যদিন,
চায় নিত্যানন্দ, শান্তি, চিন্তাবি’ন
আত্মা,
হে অসীম দয়ালু সত্ত্বা!
আমি অধম, অসাড়, অনিয়ম,
আমি ক্ষমা প্রত্যাশী অক্ষম।
তবো দয়া, তবো সকরুণ দৃষ্টি,
আমায় নতুন করিয়া করিবে আবার সৃষ্টি।
দিবে প্রাণ-
অম্লান,
দিবে নিত্য সত্য মুক্ত পথের দিশা,
ঘুচবে আমার অন্তর-অমানিসা।
হে আমার রব,
তবো ক্ষমা,
করি আশা,
যাচি সৃষ্টির তরে স্রষ্টার ভালোবাসা!
….
২৫.০৩.২০২২
রিজিক
প্রতিদিন ভোর ঊষার প্রহর কিচির মিচির শব্দে
জাগছে পাখি, দিনভর তা কি করে রিজ্কের চিন্তা?
রিজিক দাতার ভরসাতে যার দিনের খোড়াক লব্ধে
বের হয় ভোড়ে সন্ধ্যায় ফিরে কর্মেই কাটে দিন তার।
………………….
সাঈদ
২০.০৪.২০২২
ভোর ৫.৩০, শ্যামলী
হে আদম সন্তান!
এক মহাবিস্ফোরণ!
স্থান-কাল সৃষ্টি হলো
শক্তি ক-ণা বৃষ্টি হলো
স্ফিতি ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত হইলো প্রসারণ।
ম-হা-বিশ্ব সূচিত হলো – হইলো সঞ্চালন,
নি-হারি-কা ধুম্রকুঞ্জো
অ-গনিত কণাপুঞ্জ
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা হইলো সাত আসমান,
সবুজ ধরার সৃষ্টি হইলো, হইলো সৃষ্টি প্রাণ।
লক্ষ লক্ষ বছর পরে
সবুজ শ্যামল এই ভূ-ধরে,
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সৌষ্ঠব অম্লান,
বুদ্ধি দীপ্ত তুখোর কণ্ঠ মানুষ গাইলো গান।
ইচ্ছে শক্তি ভালো মন্দ
স্বার্থে ত্যাগে হলো দ্বন্দ,
রক্ত-যুদ্ধে প্রাণ হরিল, সৃষ্টির অপমান
করলো মানব, হারাইলো তার অর্জিত সম্মান।
যুগে যুগে বাণী এলো
স্রষ্টা হইতে সৃষ্টি পেলো
ধ্বংস হইতে মুক্তি পথে জ্ঞা-নের পরিত্রাণ।
অল্প কজন শুনতে পাইলো মুক্তির আহবান!
এক মহা-শব্দ-রণ!
ধ্বংস হবে বিশ্ব যবে
সব মানিবে বুঝবে তবে,
তীব্র রৌদ্র কনকনে শীত হাশরের ময়দান,
ইচ্ছে শক্তি বিচার-বুদ্ধি সকলই হইবে ম্লান।
মহান প্রভুর দরবারে সব
কাঁদবে বলবে, “ইয়া রব, ইয়া রব!”
আমলনামার কার্যক্রমই করবে হিসেব দান।
সময় থাকতে সাবধান হই, হে আদম সন্তান !
..
সাঈদ
০১.০৪.২০২২
স্ফিতি ক্ষেত্র – Inflationary field
বর্ষা
নীলাকাশ ঢাকে ঘন কালো মেঘে আধারে জড়ায় ধরা
বজ্রনিনাদে কেঁপে ওঠে ভূ বর্ষে অঝোরে জল
শির শির বাতায়ন গরমের শেষে
কাটে রাত আসে আলো স্নিগ্ধতা বেশে,
তেমোনী জীবন, মাঝে মাঝে সে যে প্রলয়ের ঢল,
সময়ের ডাকে সেও চলে যায় মুছে জীবনের জরা।
————
সাঈদ
বিকেল ৪.৫৩; ঝড়ের সময়
২২.০৪.২০২২
স্বরবৃত্ত(১৮,১৬,১৪,১৪,১৬,১৮)
এতিম নামাজ
ঘুরে ফিরে এলো রমজান মাস রাখছে সকলে রোজা
ঘুরে ঘুরে চা’য় ফরজ নামাজ করছে সকলে কাজা।
আমি কি এমনই এতিম অনাথ এতই তোমার বোঝা?
আমাতে কি নেই খোদার আদেশ নেই কি আমাতে জাঝা?
আমি কি শুধুই জুমার দিনের হাজিরা দেবার খাতা?
কলমা নামাজ যাকাত ও হজ্ব সবাই তোমার ত্রাতা।
শুধু রোজা রেখে স্রষ্টা পাইবে তাই কি হবার কথা?
তবে শুধু কেনো না খেয়ে থাকার এই আয়োজন তথা?
পেরেছো কি তুমি ছাড়িতে মিথ্যা, সুদ, ঘুষ, দূর্ণীতি?
পেরেছো কি মেধা মনন গড়তে, ছাড়তে সজন প্রীতি?
রোজা নাতো শুধু সারাদিন ধরে উপোষ থাকার রীতি,
অলসতা আর অহংকারের আজিকেই টানো ইতি।
আসুক সে বোধ, সব রোজাদার ঘুম থেকে যেন্ জাগে
স্রষ্টার তরে নিজেকে বিলীন করিতে নামাজ আগে,
ছুটে ছুটে চলো মসজিদ পানে জামাত হয়নি কাজা,
সিজদায় লুটে ক্ষমা চেয়ে দেখো পূর্ণতা পাবে রোজা।
….
সাঈদ
২৩.০৪.২০২২
রাতের দ্বিতীয় প্রহর
কবি
এতদিন ভাই লিখে গেছি তাই যা আসে মনে
ছন্দ ছাড়াই ছাই-পাশ যাই লিখিয়াছি ক্ষণে।
লেখক যারা জানেন তারা ছন্দ বুনন রীতি
হাতের নিপুন ছোয়ায় দারুণ লিখতে পারেন গীতি।
শিল্পী মনন নিত্য বুনন করছে নুতন ছবি
তারাই লেখক তারাই সাধক তারাই আসল কবি।
সাঈদ
২৩/০৪/২০২২
বিদায় বেলায়
রমাদান রুহামাহ রাহে নাজাত বার্তা বহে এক-মাস
চলে যায় দ্রুততায়, যেন এক পশলা হিম বৃষ্টি
খরতাপে রুড়তায় দীর্ণ শুষ্ক মাঠে, করে সৃষ্টি
সবুজের সমারোহ, চোখে বহে মুগ্ধতা এক-রাশ।
আকাশ বিষন্ন আজ মেঘেরা অশ্রু ফেলে সরবে
অনাথ হৃদয় আজ বেদনা বিধুর ব্যাথা ক্লান্ত
কবর কাদিয়া কয় জীবিত জীবন যদি জানত
কি সুযোগ চলে যায় আলস্য জড়তায় নিরবে?
হে আমার রব তব দরবারে এ পাপীর আকুতি
শূণ্য আমলনামা হাতে, অজস্র গুনাহ্বৃত দুচোখে
রমাদান শেষ রাতে, তোমার কুদরতী পা সমুখে
সিজদায় লুটে রব, কর্-জোরে এ পাপীর মিনতি-
বিদায়ের এ বেলায়, ক্ষমা করো অধমেরে আর
ফিরাও তোমার পথে, খুলে দাও রহমের দ্বার!
হে অসীম হে অনন্ত হে আমার পরওয়ারদিগার!
২৯ রমাদান, ১৪৪৩ হিজরী
৩০ এপ্রিল, ২০২২
(সম্ভাব্য কদরের রাত)
Rate this:
Rate This
ঈদুল ফিতর
অবশেষে রোজা শেষে এলো হেসে ঈদ,
ছোট বড় হয়ে জড়ো গাইছে নাশিদ।
তাকবির তাকবির ওই দেখো চাঁদ,
কি যে খুশী কি যে খুশী দাও দাও হাত
আসো আসো দেই বসো মেহেদীর সাজ
নানা স্বাদে মা-রা রাঁধে কতকিছু আজ।
চল চল ঘুমে চল ভোর হলে পর
ঈদের নতুন সাজে সাজব এ ঘর।
নতুন নতুন জামা পড়ব সবাই।
তাকবীর বলে চল ঈদগাহে যাই,
ঈদের নামাজ শেষে
হেসে হেসে বাড়ি এসে
জর্দা পায়েস আর লাচ্ছা সেমাই
সবে মিলে বসো এসে মজা করে খাই।
বাবামার পদধূলি নেই এর পর
সবার বাসায় ঘুরি সারাদিন ভর।
ঈদের সেলামি নেয়া গুনে গুনে আজ
ব্যাগে ভরা জমা করা দিন রাত কাজ
খুশিতে খুশিতে যায় ঈদুল ফিতর
থাকে যেন ভাল সব থাকে সব ঘর।
তবে ভাই বলে যাই বলি শেষ কথা
মনে যেন থাকে ঐ গরীবের ব্যাথা
তাদেরকে দেই যেন দেই হাত ভরে,
খুঁজে নিয়ে মিসকিন দেই অকাতরে।
তাদের ঈদেও যেন মুখে থাকে হাসি,
স্রষ্টার তরে তাই তারে ভালোবাসি।
মিলে মিশে হেসে হেসে ঈদ হোক পার,
সবার জীবনে ঈদ হোক বারে বার।
…
ঈদুল ফিতরের দিন
০৩.০৫.২০২২