Category: নিউরোসায়েন্স

  • Artificial Intelligence কি কখনও মানুষের বুদ্ধিমত্তার কাছাকাছি যেতে পারবে?

    এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য চলুন কিছুক্ষণ ব্রেইন স্টর্মিং করি।

    মানুষের বুদ্ধিমত্তা ‘অনন্য’ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মানুষ দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন সম্পর্কহীন বস্তুকে নিজের ইচ্ছে মত জুরে দিতে পারে।

    একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বুঝাই। আমরা যখন কথা বলি তখন কতগুলো ধ্বনিসমষ্টি  উচ্চারণ করি। যার ক্ষুদ্র স্বাধীন অংশ হল স্বরধনি।

    যেমন – অ, আ।

    লক্ষ্যনীয় এখানে আমি যখন ‘অ’ বলছি তখন একটি নির্দিষ্ট ধরনের আওয়াজ করছি। কিন্তু, যখন আমি উক্ত আওয়াজকে লিখছি, তখন এক নির্দিষ্ট ধরনের ‘বক্ররেখা’ ব্যবহার করছি।

    বক্ররেখা এজন্য বললাম- ‘অ’ তো আসলে কোন সরলরৈখিক চিত্র না। বরং, এক ধরনের বক্ররেখা বা বক্ররেখার সমষ্টি।

    খেয়াল করুন- এখানে আমার ‘অ’-এর সাথে যে উচ্চারণ আমি সংশ্লিষ্টতা দিচ্ছি তা আসলে ‘আরবিট্রারী’, যদিও আমরা ছোটবেলা থেকে এভাবে শিখছি বলে লিখছি।

    তবে একজন মানুষ ইচ্ছে করলে যে কোন বক্ররেখাকে ‘অ’ ধ্বনির সাথে জুরে দিতে পারে। ধরুন একজন সাংকেতিক ভাষায় একটি ম্যাসেজ দিতে চায়। যেখানে সে – ‘আ’ বর্ণটিকে ‘অ’ ধ্বনির সাথে সংশ্লিষ্ট করবে বলে ঠিক করেছে। তাহলে সে যখন ‘আ’ লিখবে, তার ‘কোড’ অনুযায়ী এর উচ্চারণ হবে ‘অ’।

     বস্তুত, এই যে মানুষ ইচ্ছে করলে সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস (একটি ধ্বনির সাথে একটি বক্ররেখা)-কে বিধিবহির্ভূতভাবে জুরে দিতে পারছে, মানুষের এই যোগ্যতাটি হচ্ছে তার ‘mind’ এর ইউনিক একটি বৈশিষ্ট্য।

    কম্পিউটারের নিউরাল নেটওয়ার্কের একবারে ব্যাসিক কর্মপ্রক্রিয়ার সাথে তুলনা করলে এ বিষয়টি বুঝা আরও সহজ হয়।

     ‘একজন প্রোগ্রামার’ চিন্তা করল যে নিউরাল নেটওয়ার্ককে ‘অ’ অক্ষর দেখালে ‘অ’ উচ্চারণ করা শেখাবে। সে নিউরাল নেটওয়ার্কের ইনপুট এন্ডে বিভিন্ন ধরনের ইমেজ দিয়ে ট্রেইনিং দেয়াবে এবং আউটপুট এন্ডে ‘অ’ ধ্বনির উচ্চারনটা ‘সিলেক্ট’ করে দেবে। নিউরাল নেটওয়ার্ক কিন্তু, নিজে থেকে আগে জানে না যে ‘অ’ বর্ণ দেখলে ‘অ’ উচ্চারন করতে হয়।

    কিন্তু ধরুন, আপনি এমন একটি রোবট তৈরী করলেন যেটি প্রাথমিকভাবে ‘শূণ্য স্লেটের’ মত এবং এটি এমনভাবে তৈরী করা যে যা শুনে সংরক্ষণ করতে পারে এবং উক্ত সাউণ্ডের সাথে ‘আপনি’ যদি কোন ‘বক্ররেখা’কে জুরে দেয়া শিখিয়ে দেন সে উক্ত ‘সম্পর্ক’টাও তার মেমরীতে সংরক্ষণ করতে পারে। তাহলে উক্ত রোবট আপনার শেখানো বর্ণমালা দিয়ে কিছু ধ্বনিসমষ্টি তৈরী করতে পারবে।

    ধরি, উক্ত রোবটকে ‘কলম’ দেখে বলতে বলা হলো। সে  ‘কলম’ সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারবে।

    উক্ত রোবটকে যদি একটি মানব শিশুর সাথে তুলনা করা হয়, মনে প্রশ্ন জাগতে পারে তাহলে কি মানব মাইন্ড কোন উন্নতমানের ‘AI’? কারণ আমরা আমাদের শিশুকে যে ভাষায় শিখাই, যে বর্ণমালার সাথে যে ধ্বনিমালা ‘relate’ করতে শেখাই, সে সেই ভাষাতেই কথা বলে এবং তথ্য বিনিময় করে।

    কিন্তু, একটি উন্নত ‘AI’ কি সম্পূর্ণ ‘আরবিট্রারী’ভাবে একটি ‘বক্ররেখার’ সাথে একটি ধ্বনিকে জুরে দিতে পারবে? হিউম্যান মাইন্ড কিন্তু এই কাজটি খুব ইফিসিয়েন্টলি করতে পারে এবং করে। শুধু তাই না, হিউম্যান মাইণ্ড কিছুক্ষন এই ধরনের হিডেন মিনিং যুক্ত সিম্বল নিয়ে ঘাটাঘাটি করলে তার ইনহ্যারেন্ট মিনিং বের করতে পারে। কোন উন্নত কম্পিউটার কি এটা করতে পারবে?

    পাঠক, আপনার কি মনে হয়?

    …….

    আসলে এই প্রশ্নটার উত্তরের জন্যে আমাদের একটু গণিত এবং দর্শনের কাছেও ধর্না দিতে হবে। কারণ, কম্পিউটারের আন্ডারলাইং স্ট্রাকচার হচ্ছে ম্যাথমেটিকাল । কম্পিউটারের তার প্রসসরে সেট করা অ্যাসেম্বলি ল্যাঙ্গুয়েজ অনুযায়ী কাজ করে। একটি খুবই সরলিকৃত কম্পিউটারে ইন্সট্রাকশন দেয় হয় বাইনারী ফর্মে যা প্রসেসর অ্যাসেম্বলি ল্যাংগুয়েজ অনুযায়ী ইন্টারপ্রিট করে। 

    কিন্তু, কম্পিউটার তার ইন্টস্ট্রাকশনের অর্থ না বুঝে জাস্ট অন্ধভাবে ফলো করে। (দেখুন- The Chinese Room Thought Experiment by John Searle)

    কম্পিউটার কোন Consistent Formal Mathematical System-এ তৈরী হয়ে থাকলে এমন কিছু গানিতিক স্টেটমেন্ট আছে যা উক্ত Formal System এর রুল দিয়ে প্রুভ বা ডিসপ্রুভ করা যায় না, কিন্তু আমরা জানি যে সেগুলো সত্য। (দেখুন – Godel’s Incompleteness Theorem)

    যদি সেটি কোন Inconsistent Formal Mathematical System-এ তৈরী হয়ে থাকে Lucas-Penrose Argument অনুযায়ী দেখানো যাবে উক্ত ইনকসটেন্স সিস্টেমেও গোডেলের আর্গুমেন্টকে এক্সটেণ্ড করা যায়।

    …..

    If you want to learn the criticisms of the hyperbolic claims of AI reaching human intelligence in no time you may follow this site- https://mindmatters.ai

    Further reading-

    1. Modern physics and ancient faith- Stephen Barr

    2. Emperor’s New Mind – Sir Roger Penrose

    3. Shadows of The Mind – Sir Roger Penrose

    4. The Mystery of Consciousness – John Searle

  • ফ্রি উইল / ফ্রি ওন্ট

    গতদিন ArcGIS দিয়ে স্প্যাটিয়াল ম্যাপিং শিখলাম। নতুন কিছু জানার মধ্যে অসম্ভব মজা। কিন্তু দীর্ঘদিন একই জিনিস নিয়ে পড়ে থাকলে পানসে হয়ে যায়।

    মজার বিষয় হল আমাদের ব্রেইনও সবসময় নতুনত্ব খুঁজে নেয়ার জন্য টিউনড। আমাদের চোখের এক ধরনের মুভমেন্ট আছে যাকে বলে স্যাক্কাডস। মূল কথা হল চোখ কোন জায়গায় স্থির থাকলেও খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে স্ক্যান করতে থাকে। অর্থাৎ সে এক জায়গায় স্থির থাকে না, সবসময় একটা অসিলেটরী মুভমেন্ট হয়।

    এটা যে শুধুমাত্র চোখের ক্ষেত্রে হয় তা নায়। ইন্টারনেট এডিকশন বা পর্ণএডিকশন নামক উত্তরাধুনিক রোগেরও মূল উৎস হচ্ছে, নতুনত্বের প্রতি মস্তিস্কের অদম্য উৎসাহ। এই যে ফেসবুকে ঘন্টার পর ঘন্টা স্ক্রল করছেন সময় কোন দিক যাচ্ছে টের পাচ্ছেন না, তার একটা কারণও সম্ভবত ব্রেইনের উক্ত টিউনিং।

    মজার বিষয় হল মানুষের নার্ভাস সিস্টেমের এই ধরনের আরও কিছু উদাহরণ পাওয়া যায়। যেমন মাংসপেশীর সংকোচন প্রসারণ নিয়ন্ত্রনের জন্য দুই ধরনের নিউরণ দিয়ে ব্রেইন ও পেশীতন্তু সংযুক্ত থাকে- আপার মোটর নিউরন এবং লওয়ার মোটর নিউরন। লওয়ার মোটর নিউরনের কাজ হল কন্টিনিউয়াস ইমপালস তৈরী করতে থাকা যেন পেশীগুলো সংকুচিত থাকে। আপার মোটর নিউরনের কাজ হলো লওয়ার মোটর নিউরনকে বিভিন্ন মাত্রায় ইনহিবিট করে মাংসপেশীর মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রণ করা।

    ফ্রি উইল / ফ্রি ওন্ট

    Will Power

    আমাদের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি তথা ফ্রি-উইল-এর সাথে এর একটা সংযোগ চিন্তা করা যায়। ম্যাটেরিয়ালিস্টদের মতে সব কিছু ডেটারমিনিস্টিক। মানুষের কোন ফ্রি উইল নাই। তারা বেঞ্জামিন লিবেট-এর একটা এক্সপেরিমেন্টকে উদাহরণ হিসেবে টানে যেখানে তিনি দেখিয়েছেন যে, আমরা যখন আমাদের আঙ্গুল নাড়াতে যাই তখন আমাদের চিন্তার আগেই মোটরকর্টেক্স থেকে সংশ্লিষ্ট নিউরনাল সিগনাল তৈর হয়ে যায়। কিন্তু, বস্তুবাদীরা যেটি সঙ্গোপনে এরিয়ে যায় তা হল উক্ত বেঞ্জামিন লিবেট-ই দেখিয়েছেন যে সিগনাল তৈরী আমাদের সবাকনসাশে হলেও, উক্ত সিগনাল হাতে পৌছার আগে থামিয়ে দেয়ার কাজটা আমরা কনসাস উইল দিয়ে করতে পারি।

    অর্থাৎ আমাদের ফ্রি-উইল (Free Will) আসলে ফি ফ্রি-ওন্ট (Free Wont’)।

    গুনাহ করার ইমপালস মানুষের মধ্যে সহজাত। কিন্তু, উক্ত ইমপালসকে কন্ট্রোল করা হল মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির চর্চা। নইলে, গুনাহতে গা ভাসিয়ে দেয়া আমাদের ও পশুর মধ্যে পার্থক্য থাকল কোথায়?


    Bibliography:

    1. Purves, D. Neuroscience (Textbook)
    2. Libet, B. Mind Time: The Temporal Factor in Consciousness

  • সমকামিতা ও মানুষের মস্তিষ্ক

    নিউরোপ্লাস্টিসিটি সম্পর্কে আমরা কমবেশী জানি। সহজ কথায় মানুষের ব্রেইনের কানেকশনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা যায় চর্চার মধ্য দিয়ে। লণ্ডনের বাস ও ট্যাক্সি ড্রাইভার দিয়ে নিয়ে একটি নিউরোইমেজিং স্টাডি আছে, সেখানে দেখা গেছে যারা অনেকদিন ধরে শহরের আঁকাবাঁকা পথে অলিতে-গলিতে গাড়ি চালিয়ে অভ্যস্ত তাদের হিপ্পোক্যাম্পাসের পিছনের দিকের অংশ বেশ বড় হয়ে গেছে।[১] কারণ, স্থানসংক্রান্ত স্মৃতি ধারণে এই অংশটার ভূমিকা আছে।

    ঠিক তেমনি মস্তিষ্কের যেই অংশটা মানুষের যৌনতা সংক্রান্ত বিষয়ে ভূমিকা রাখে সেই অংশটা বেশী ব্যবহার করলে বা সেই অংশ স্বাভাবিক উপায়ে ব্যবহৃত না হয়ে অন্য উপায়ে ব্যবহৃত হলে সেই অংশে পরিবর্তন আশা করাটাই স্বাভাবিক।

    এখন ধরুন, আপনি কিছু সেক্স ওয়ার্কারদের নিয়ে ইমেজিং স্টাডি করলেন। আপনি এদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশটা অন্যদের চেয়ে বড় পেতে পারেন। বাংলাদেশে যারা Male who sex with Male (MSM) বা সহজ ভাষায় হোমোসেক্সুয়েল (গে বা সমকামী)-দের নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছেন তারা জানেন, এরা অধিকাংশই হয় সেক্স-ওয়ার্কার। সুতরাং, এদের স্টাডিতে ব্রেইনের নির্দিষ্ট অংশ বড় পাওয়াটা অস্বাভাবিক না। এ অবস্থায় আপনার অনুসিদ্ধান্ত নিচের কোনটি হওয়া স্বাভাবিক:

    ১. হোমোসেক্সুয়্যালিটির কারণে উক্ত অংশ বড় পাওয়া গিয়েছে

    ২. উক্ত অংশ বড় হওয়ার কারণে তারা হোমোসেক্সুয়েল

    যারা দ্বিতীয়টির ব্যাপারে মত দিবে, তাদের দুটো অবস্থা হতে পারে:

    ১. তারা বিজ্ঞানের ইনফারেন্স কিভাবে টানতে হয় জানেনা

    ২. তারা হোমোসেক্সুয়েলীটিকে জন্মগত বোঝাতে চাচ্ছে

    প্রসঙ্গত ইঁদুরের ব্রেইনে এই অংশটি তথা নিউক্লিয়াস গ্রুপের নাম Sexually Dimorphic Neucleas (SDN), যা হাইপোথ্যালামাসের অংশ।

    ১৯৯১ সালে সাইমন লিভে নারী ও পুরুষের মরদেহের মগজ নিয়ে একটি স্টাডি করেন। পুরুষদের মধ্যে ১৯ জনকে হোমোসেক্সুয়েল ও ১৬ জন হেটারোসেক্সুয়েল বলে তিনি ধরে নেন( Presumed !)। [২],[৩] তার স্টাডি অনুযায়ী হাইপোথ্যালামাসের সামনের দিকের অংশে ‘ইন্টারস্টিসিয়াল নিউক্লিয়াস অব হাইপোথ্যালামাস’-এর নিউক্লিয়াসের চারটি গ্রুপের মধ্যে ৩নং গ্রুপটি মেয়ে হেটারোসেক্সুয়েলদের চেয়ে ছেলে হেটারোসেক্সুয়েলদের এবং ছেলে হেটারোসেক্সুয়েলদের চেয়ে ছেলে হোমোসেক্সুয়েলদের প্রায় দ্বিগুণ বড় থাকে। [৩] তিনি এর থেকে সিদ্ধান্ত দেন যে সেক্সুয়েল অরিয়েন্টেশনের পার্থক্য হওয়ার একটি বায়োলজিক্যাল কারণ আছে: সহজ কথায় গ্রুপ ৩ বড় বলেই ‘হোমো’রা হোমো।

    পাঠক এবার চিন্তা করে দেখুন, আপনার কাছে নিউরোপ্লাস্টিসিটি ও হোমোসেক্সুয়েলদের সেক্সুয়েল প্র্যাকটিস সম্পর্কে যে জ্ঞান আছে তাতে কি আপনি এরকম সিদ্ধান্তে হঠাৎ চলে যাবেন?

    মজার বিষয় হল, ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডাম-এর নিউরো-বায়োলজির প্রফেসর সোয়াব, ট্রান্সসেক্সুয়েলিটির প্রফেসর গোরেন এবং  হফম্যান  ১৯৯৫ সালে দেখান যে, জন্মের সময় SDN-এর নিউক্লিয়াস সংখ্যা, ২ থেকে ৪ বছর বয়সে SDN-এর নিউক্লিয়াস সংখ্যার ২০ শতাংশ থাকে। অত:পর ২ থেকে ৪ বছর বয়স পর্যন্ত একই হারে এই সংখ্যা বাড়তে থাকে। ৪ বছরের পরে গিয়ে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই অংশটি ছোট হয়ে যেতে থাকে। তারা আরও বলেন: “No difference in SDN cell number was observed between homosexual and heterosexual men.” অর্থাৎ হোমো এবং হেটারোদের কোষ সংখ্যায় কোন পার্থক্য পাওয়া যায়নি। তাদের মতে সেক্সুয়েল অরিয়েন্টেশন নিয়ন্ত্রণে জেনেটিক্সের সাথে পারিপার্শ্বিক এবং মন-সামাজিক প্রভাবকগুলোও ভূমিকা রাখে। [৪]

    সুতরাং নিউরোপ্লাস্টিসিটি বিষয়টি যে এখানে ভূমিকা রাখছে সেই দিকেইতো সিদ্ধান্ত যাওয়ার কথা।  ড. কেনেথ ক্লিভিনটনও একই কথা বলছেন:

    “There is a body of evidence that shows the brain’s neural networks reconfigure themselves in response to certain experiences. Therefore, the difference in homosexual brain structure may be a result of behavior and environmental conditions.” [৫]

    অন্যদিকে সাইমন লিভে তার রিসার্চ প্রকাশ করার সাথে সাথে নিউজ মিডিয়া (নিউইয়র্ক টাইমস) তার স্টাডি নিয়ে যেভাবে রিপোর্ট করেছে [৬] তিনি যখন পরিষ্কার করেছেন যে তার রিসার্চ হোমোসেক্সুয়েলিটিকে জেনেটিক প্রমাণ করেনি তখন কিন্তু মিডিয়ায় সেভাবে কভারেজ পায়নি। তিনি বলেন:

     “It’s important to stress what I didn’t find. I did not prove that homosexuality is genetic, or find a genetic cause for being gay. I didn’t show that gay men are born that way, the most common mistake people make in interpreting my work.” [৭]

    সাইমন লিভের আর্টিকেলটির আরও কিছু দুর্বলতা নিয়ে রবার্ট নাইট আলোচনা করেছেন।[৮] তিনি দেখান যে লিভের স্টাডিতে ৬ জন সমকামী এইডস-এর মারা যায়। অন্যদিকে ড. বাইন দেখিয়েছেন যে এইডস আক্রান্ত রোগীর সাইড ইফেক্ট হিসেবে উক্ত গ্রুপ থ্রি নিউক্লিয়াস বড় হতে পারে। এছাড়াও, সাইমন লিভের এ বিষয়ে কোন ফলোআপ স্টাডি নেই। [৯]

    তদুপরি, সাইমন লিভে নিজে ছিলেন প্রকাশ্য হোমোসেক্সুয়েল এবং তার এই রিসার্চের পিছনে স্পষ্ট এজেণ্ডা ছিল হোমোসেক্সুয়েলিটিকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা। তিনি বলেন:

     “It’s important to educate society, I think this issue does affect religious and legal attitudes.” [৫]

    সুতরাং পুরো বিশ্বে অস্বাভাবিক যৌনাচারকে স্বাভাবিক করার যে প্রচেষ্টা চলছে, অপেক্ষাকৃত রেজিস্টান্ট মুসলিম দেশগুলোতেও ঠিক একই এজেণ্ডা নিয়ে নেমেছে অভিজিৎ গং। বিভ্রান্তিকর, দুর্বল রিসার্চ ও মিথ্যাচারের উপর ভিত্তি করে তারা হোমোসেক্সুয়েলীটির মত মানসিক রোগের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে অনেক মানুষকে, তাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে এইডস এর মত ভয়াবহ রোগের দিকে। [১০]

    [হোমোসেক্সুয়েলিটির আরও দুটো তথাকথিত এভিডেন্স ‘টুইন স্টাডি’ এবং ‘হোমোসেক্সুয়াল জিন’ নিয়ে পরবর্তীতে লিখা থাকবে]

    তথ্যসূত্র:

    ১. Maguire EA1, Woollett K, Spiers HJ. London taxi drivers and bus drivers: a structural MRI and neuropsychological analysis. Hippocampus 2006[cited 2014 March 24];16(12):1091-101. Available at: PubMed

    ২. What does science say about homosexuality.[Internet] 2006 April 4 [Cited 2014 March 24]; Available at: http://www.inqueery.com/html/science_and_homosexuality.html

    ৩. Simon L. A Difference in hypothalamic structure between heterosexual and homosexual men. Science. 1991 Aug 30 [cited 2014 March 24];253(5023):1034-7. Available at: Pubmed

    ৪. Swaab DF1, Gooren LJ, Hofman MA. Brain research, gender and sexual orientation. J Homosex. 1995[cited 2014 march 24];28(3-4):283-301. Available at: Pubmed

    ৫. D. Gelman, D. Foote, T. Barrett, M. Talbot, “Born or Bred,” Newsweek, 24 February 1992, 46-53.

    ৬. Natalie Angier. Zone of brain linked to men’s sexual orientation. New York Times;. [Internet]. 1991 Aug 30 [cited 2014 March 24 ]; Available at: http://www.nytimes.com/1991/08/30/us/zone-of-brain-linked-to-men-s-sexual-orientation.html

    ৭. Sex and the Brain. Discover, March 1994, Vol. 15, No. 3, p. 64.

    ৮. Robert Knight. BORN OR BRED? Science Does Not Support the Claim That Homosexuality Is Genetic. [Internet] [Cited 2014 March 24]; Available at: http://www.cwfa.org/images/content/bornorbred.pdf

    ৯. Jonathan Marks. What it means to be 98% Chimpanzee. London: University of California Press; 2002; p 114.

    ১০. “Gay, bisexual, and other men who have sex with men (MSMa), particularly young black/African American MSM, are most seriously affected by HIV.” Fast Facts;[Cited 2014 March 24] Available at: http://www.cdc.gov/hiv/statistics/basics/ataglance.html

  • মাইণ্ড-বডি প্রবলেম: কিছু ভাবনা

    মাইণ্ড-বডি প্রবলেম: কিছু ভাবনা

    পাঁচ বছরের বয়সের আগে একটি শিশুর বাম অথবা ডান দিকের সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার এপিলেপসির কারণে যদি অপারেশন করে ফেলে দেয়া হয় কি হতে পারে বলুনতো?

    আপনারা হয়তো ভাবছেন বাচ্চাটির একদিক পঙ্গু হয়ে পড়বে, একদিকের দৃষ্টি বাঁধাগ্রস্থ হবে, এক কানে শুনতে পারবে না, বাম দিক ফেলে দিলে কথা বলতে পারবে না ইত্যাদি। কিন্তু বাস্তবতা হল এ ধরনের সমস্যাগুলো সাধারণত হয় না। এর কারণ হলো নিউরোপ্লাস্টিসিটি।

    ডেভোলপমেন্টের সময় আমাদের মস্তিস্কের এক বিলিয়ন নিউরনের এক ট্রিলিয়ন কানেকশন যদি একটার পর একটা করে তৈরী হত তাহলে ব্রেইন তৈরী হতে হতে আমাদের হায়াত শেষ হয়ে যেত। কিন্তু মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সময়টাতে আমাদের নিউরনের কোষগুলো তৈরী হলেও কানেকশনগুলো তথা ডেনড্রাইট ও এক্সনগুলো তাদের জায়গা খুঁজে নেয় জন্মের পরে।

    যে সদ্যজাত শিশুটির কোমলতা ও মায়া আমাদের আচ্ছন্ন করে রাখে, সেই শিশুটির মস্তিস্কে ঘটে যেতে থাকে বিস্ময়কর রকমের জটিল ঘটনা। আমাদের কান, চোখ, নাক, স্বাদ, স্পর্শ ইত্যাদি অনুভূতি বহনকারী নার্ভের এক্সনগুলো এ সময়ে ব্রেইনের কর্টেক্সে তাদের জায়গা করে নিতে থাকে। অন্যদিকে ব্রেইনের কোষগুলোর প্রতিটির প্রায় ১০০ থেকে ১০০০টি ডেনড্রাইট এই সাথে একই সময় তৈরী হয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং পার্শ্ববর্তী নিউরনের সাথে যোগাযোগ তৈরী করে। তবে যে ড্রেনড্রাইট এবং এক্সনগুলো ব্যবহার হয় না সেগুলো নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ায় নষ্ট হয়ে যায়। যে নিউরণগুলো ব্রেইন থেকে শরীরের অন্যান্য অংশকে যুক্ত করে তাদের সাথেও একই ঘটনা হয়।

    মজার বিষয় হলো, যে শিশুটি জন্মগত অন্ধ হয়ে জন্মায় তার স্পর্শানুভূতি পোস্ট সেন্ট্রাল জাইরাসের পাশাপাশি, দেখার জন্য নিয়োজিত ব্রেইনের অক্সিপিটাল কর্টেক্সেও জায়গা করে নেয়। ফলে ব্রেইল ব্যবহার করে পড়ালেখা করার মতো কাজটি জন্মান্ধ ব্যাক্তিরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করতে পারে। তাদের কানের নার্ভগুলোর এক্সন সুপিরিওর টেম্পোরাল লোবের পাশাপাশি ব্রেইনের পিছনের অংশেও পৌছায়। ফলে এদের শ্রবণ শক্তিও হয় তুখোর।  

    কিন্তু একবার যখন এক্সনগুলো নিজেদের জায়গা করে নেয় তখন যদি তার জায়গা থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করা হয় কিংবা জায়গাটাকেই নষ্ট করে দেয়া হয়, সেক্ষেত্রে কি হবে? প্রকৃত পক্ষে এই ক্ষেত্রে এক্সনগুলো ব্রেইনের অন্য জায়গায় ভাগ বসায় এবং ব্রেইনের অন্য অংশগুলোও স্বাচ্ছন্দে তাদের জায়গার ভাগ দেয়। এ ঘটনাকেই বলে নিউরোপ্লাস্টিসিটি। 

    পাঁচ বছরের শিশুদের ব্রেইন সবচেয়ে প্লাস্টিক থাকে। ফলে এ সময়ে একটি হেমিস্ফিয়ার কেঁটে ফেলে দিলেও অন্য হেমিস্ফিয়ারটিতে ব্রেইনের রিঅর্গ্যানাইজেশন হয়। শিশুটি বড় হলে কথাও বলতে পারে, ঠিকমত দেখতে সমস্যা হয় না এবং কোন পাশ পঙ্গুও হয়ে পড়ে না।

    কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রে কি এ ধরনের ঘটনা হয়? উত্তর: হয়। আগে মনে করা হত এডাল্ট ব্রেইনে রিঅর্গ্যানাইজেশন হয় না। কিন্তু নিউরোসায়েন্সের নতুন গবেষনা সমূহ এই নোশনকে ভুল প্রমাণিত করেছে। এ কারণেই দেখা যায় ঠিকমত ফিজিওথেরাপী নিতে পারলে স্ট্রোক রোগীরা আগের মতই চলতে পারছে। তবে এ বিষয়টি এত সহজ নয়। স্ট্রোক হয়ে যাওয়া পর যে হাতটি কার্যত নড়ছে না তাকে নড়ানোর চেষ্টা করাটা অনেক ধৈর্য্যের ব্যপার। প্রচণ্ড মানসিক শক্তির ব্যপার।

    হ্যাঁ, মানসিক শক্তির ব্যবহারেই ব্রেইনে সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষনযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ওয়েট এ মিনিট! মানসিক শক্তির ব্যবহারে ফিজিক্যাল পরিবর্তন? ইয়েপ, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডারের রোগীদের ‘কনস্ট্রেইন ইনডিউসড থেরাপী’ প্রয়োগ করলে তাদের এই সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কারণ এই বিশেষ ধরনের বিহেভিওরাল থেরাপী ব্যবহার করে দেখা গেছে  পর্যাপ্ত মেন্টাল প্রশিক্ষন ব্রেইনের দায়ী সার্কিটগুলোকে রিঅর্গানাইজ করতে পারে। ডিজটোনিয়ার রোগীদের এ ধরনের প্রশিক্ষন দিয়ে চিকিৎসা করা গেছে।

    সুতরাং পর্যবেক্ষন বলছে, মানসিক শক্তি ব্রেইনের উপর সামহাউ অনির্ভরশীলভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। সুবহানআল্লাহ, মাইণ্ডবডি প্রবলেমের এই বিষয়গুলো আমাদের আত্মা সম্পর্কে এবডাক্টিভ ইনফারেন্স নিতে নি:সন্দেহে  উৎসাহিত করে।

    রেফারেন্স রিডিং:

    The Mind and the Brain: Neuroplasticity and the Power of Mental Force by

    Jeffrey M. Schwartz, M.D., and Sharon Begley

  • মেমোরী, প্রোডিজি এবং ইচ্ছাশক্তি

    মেমোরী তথা স্মরণশক্তি দু ধরনের। ডিক্ল্যারেটিভ ও ননডিক্ল্যারিটিভ। প্রথমটি হল সে ধরনের মেমোরী যা আমরা কথার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারি। যেমন: কোন কিছুর নাম, সংখ্যা, কোন ঘটনার স্মৃতি ইত্যাদি।  দ্বিতীয়টি হল সে ধরনের যেগুলো কথার মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় না। যেমন: যে কোন ধরনের কাজ- সাইকেল চালানো, ড্রাইভিং, কিবোর্ড টেপা ইত্যাদি। দ্বিতীয় ধরনের মেমোরী আমাদের ‘সাবকনসাস’-এ প্রোথিত হয়। এমনকি এই ধরনের মেমোরী স্মরণ করতে গিয়ে সেটা সম্পর্কে ‘কনসাস’ হতে গেলে কাজটির ব্যাঘাত ঘটে। যেমন: একজন টেনিস খেলোয়ার বলে ব্যাট লাগাতে গেলে তার মন ‘সাবকনসাসলি’ মাপাঝোকা করে দেয়, এ সময় প্রতিপক্ষের মারা বলের দিকে মোনযোগ দিতে গেলে শট মিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।।

    ডিক্ল্যারেটিভ ও ননডিক্ল্যারেটিভ দুধরনের মেমোরীই বৃদ্ধি করা যায়, পুন:পুন: চর্চার মাধ্যমে। তবে মনে রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল যা শিখছি তার প্রতি গভীর আগ্রহ।  

    আলেকজান্ডার অ্যাটকিন তেরো বছর বয়সে মনে মনে অঙ্ক কষার বিষয়টিতে গভীর আগ্রহ অনুভব করেন। তিনি ‘পাই’ এর মান দশমিকের পড়ে ১০০০ ঘর পর্যন্তু মুখস্ত করেছিলেন। পরবর্তীতে এই ব্যাক্তি এডিনবার্গ-এ ম্যাথমেটিক্সের প্রফেসর হয়েছিলেন। তবে বর্তমানে পাইয়ের মান দশমিকের পড়ে মনে রাখতে পারার ‘ওয়ার্ল্ড রেকর্ড’ টি গড়েছেন চিনের চাউ লু। এই ব্যাক্তি পাই এর- মান দশমিকের পর ৬৭৮৯০ ঘর পর্যন্ত বলতে পেড়েছেন, মুখস্ত! 

    ওলফগ্যাঙ এমাদেওস মোজার্ট চার বছর বয়সে পিয়ানো শেখেন এবং আট বছর বয়সে তার প্রথম সিমফোনী রচনা করেন। তাকে অন্যতম প্রধান মিউজিক প্রোডিজি বিবেচনা করা হয়। লাডউইগ ভ্যান বেথোভেন তার শেষ জীবনে বধির হয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় তিনি কিছু সোনাটা ও কোয়ার্ট্রেট রচনা করেন। সমসাময়িক মিউজিসিয়ানদের অবোধ্য হওয়ায় সমালোচিত হলেও পরবর্তীতে এই মিউজিকগুলোকেই তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে বিবেচিত হয়।

    পাবলো পিকাসোকে পূর্ণাঙ্গ আর্টিস্ট হিসেবে বিবেচনা করা হত যখন তার বয়স বারো। লিউনার্দো দ্যা ভিঞ্চি ছিলেন একজন পলিম্যাথ(অর্থাৎ বিভিন্ন বিষয়ের বিজ্ঞানী)।  বিশ বছর বয়সে তিনি আর্টিস্টদের গাইড, ‘গাইড অব সেন্টলুকের’ মাস্টার নির্বাচিত হয়েছিলেন।

    দাবার ওয়ার্ল্ড রেটিং এ বর্তমানে এক নাম্বার খেলোয়ার ম্যাগনাস কার্লসেন। মাত্র বাইশ বছর বয়সে গত জানয়ারী মাসে সে চেজ লিজেন্ড গ্যারী ক্যাসপারভের FIDE Rating 2851 কে অতিক্রম করে এবং এখন পর্যন্ত তার সর্বোচ্চ রেটিং 2872। তেরো বছর বয়সে এই ‘মোজার্ট অব চেজ’ একটি খেলায় ক্যাসপারভকে হারাতেও বসেছিল।

    শ্রিনিভাস রামানুজনের বয়স যখন তেরো তিনি নাম্বার থিওরী এবং বার্ণোলী নাম্বার এ নিজস্ব থিওরী দাড়া করান। ক্লডে শ্যানন যখন দেখান যে বুলিয়ান লজিক যে কোন লজিকাল, নিউমেরিকাল রিলেশনশিপ-এ ব্যবহার করা যায় তখন তার বয়স ছিল একুশ। জেমস ওয়াটসন ডিএনএ’র গঠন আবিস্কার করছিলেন তেইশ বছর বয়সে। এনরিকো ফার্মি একটি ভাইব্রেটিং রডের পার্সিয়াল ডিফারেনশিয়াল ইকুয়েশন সমাধান করতে ফরিয়ার এনালাইসিস ব্যবহার করেন সতের বছর বয়সে। মার্ক জুকারবার্গ স্কুল লাইফে গেমস প্রোগ্রাম করে দিতেন আর তার বন্ধুরা সেই গেমস খেলত। 

    কম বয়সে স্কিল্ড এডাল্টদের মত দক্ষতা প্রদর্শন করলে তাদের প্রোডিজি বলা হয়। উপরে যাদের উদাহরণ দেয়া হল তাদের কেউ চাইল্ড প্রোডিজি, কেউ এডাল্ট। তবে সবার ক্ষেত্রে একটা সাধারণ ব্যাপার হল আগ্রহ, প্রচেষ্টা এবং সবার উপরে অবশ্যই আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা।

    আগ্রহ ও প্রচেষ্টার বাইরেও আল্লাহর রহমত থাকা জরুরী। আর এ কারনেই একটি বিস্ময়কর উদাহরণ হল মুসলিম বিশ্বের হাজার হাজার হাফেজী মাদ্রাসার হাজার হাজার বালক বালিকা। ৪ থেকে ১২ বছর বয়সী কোরআনের অসংখ্য হাফেজ আছে সাড়া পৃথিবীতে। কোন প্রকার অর্থ না বুঝে পুরো কোরআন মুখস্ত করতে পারাটা আল্লাহর অশেষ রহমতের একটি উদাহরণ মাত্র। কোরআনের বিস্ময়কর ভাষাশৈলী, ছন্দবদ্ধতা ও সাহিত্যপ্রকরণ হল একে মনে প্রোথিত করতে পারার মূল কারণ।  

    অন্যদিকে, বেনজামিন লিবেট তার কনসাসনেস সম্পর্কিত এক্সপেরিমেন্টে দেখিয়েছেন যে মানুষ যখন কোন কিছু অনুভব করে সেটা কনসাসলি অনুভব করার ০.৫ সেকেন্ড আগেই তার অনুভব সম্পর্কিত নির্দিষ্ট ব্রেইন এরিয়াতে ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেশন পৌছে যায়। আবার যখন সে কোন কিছু করতে ইচ্ছে করে যেমন: হাত আগানো, তখন তার ব্রেইনের ‘মোটর’ এরিয়াতে হাত আগানোর কনসাস ফিলিং (অনুভব) হওয়ার ০.৫ সেকেণ্ড আগেই ইলেকট্রিক্যাল এক্টিভিটি শুরু হয়ে যায়। তবে মানুষ সর্বচ্চো সেই এক্টিভিটিকে একটি ভেটো দিয়ে থামিয়ে দিতে পারে। এটাকি তাহলে এক্সপ্লেইন করে, মানুষের প্রচেষ্টায় আল্লাহর সাহায্য কিভাবে আসে এবং কেন মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা শক্তি নির্দিষ্ট মাত্রায় আবদ্ধ?  

    Bibliography:

    1. Neuroscience; D. Purves et el.

    2. Mind Time: Temporal factors in consciousness; Benjamin Libet     

    3. The 100: A Ranking Of The Most Influential Persons In History; Michael H. Hart

    4. en.wikipedia.org/wiki/List_of_child_prodigies

    5. cracked.com/article_16266_8-child-prodigies-so-amazing-theyll-ruin-your-day_p2.html

    6. pi-world-ranking-list.com/lists/details/luchao.html

    7. en.wikipedia.org/wiki/Ludwig_van_Beethoven

    8. en.wikipedia.org/wiki/Mark_Zuckerberg

    9. en.wikipedia.org/wiki/Wolfgang_Amadeus_Mozart

    10. en.wikipedia.org/wiki/Da_vinci

    11. en.wikipedia.org/wiki/Magnus_Carlsen

    12. en.wikipedia.org/wiki/James_Watson

    13. en.wikipedia.org/wiki/Claude_Shannon

  • মস্তিষ্কের আকার ও বিবর্তন

    মানবজাতির ইতিহাসে মিথ্যাচার, প্রতারণা ও তথ্যগোপনের অসংখ্য উদাহরণ পাওয়া যায়। তবে বর্তমান সময়ের চেয়ে বেশী সমগ্র ইতিহাসকে একত্রিত করলেও পাওয়া যাবে না। শুধুমাত্র বিজ্ঞানেই বিবর্তনবাদের ভূত যে পরিমাণ মিথ্যাচার, প্রতারণা ও তথ্যগোপন করেছে এবং করে চলেছে তা-ই বর্ণনাতীত।

    বিবর্তনবাদীরা এপ থেকে মানুষ আসার দাবী করতে গিয়ে তাদের ব্রেইনের আকারের পার্থক্যকে হাইলাইট করে। বিষয়টি যেহেতু সাধারণ মানুষের জন্য সহজবোধ্য নয় সেহেতু ব্রেইনের আকারের পার্থক্য দিয়ে ধোঁকা দেয়াটা সহজ। কিন্তু যখন থেকে মানুষের নিউরোএনাটমি বুঝতে শুরু করেছি, তখন থেকেই বিষয়টিতে আমার খটকা লেগেছে।

    কারণ, ব্রেইনের পার্থক্যটা হয় মূলত অর্গ্যানাইজেশনে, আকারে নয়। [১] হ্যাঁ, আকার বড় হয় ততটুকু, যতটুকু অর্গ্যানাইজেশন পরিবর্তন করতে গিয়ে। কিন্ত আকার ছোট রেখেও অর্গ্যানাইজেশন এক রাখলে বিচারবুদ্ধিও একই থাকে। মানুষের ব্রেইনের আকার সর্বনিম্ন ৮০০ সিসি থেকে ২২০০ সিসি পর্যন্ত হতে পারে। [২] তার মানে এই না যে ৮০০ সিসি আকারের মাথার বুদ্ধি কম।

    মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জির ব্রেইনের মূল পার্থক্য ফ্রন্টালকর্টেক্স নামক ব্রেইনের অগ্রভাগের অংশে স্পষ্ট। কিন্তু শুধু ফ্রন্টালকর্টেক্সের আকার যদি বাড়িয়ে দেয়া হয় তাহলেই কি এপ জাতীয় প্রাণী মানুষে পরিণত হবে? না। যারা এই ধরণের দাবী করেন তারা ‘তথ্যগোপন’ করেন বা এড়িয়ে যান।

    ফ্রন্টাল কর্টেক্স বাড়িয়ে দেয়ার কথা বলে তারা ফ্রন্টাল কর্টেক্সের সাথে ব্রেইনের অন্যান্য অংশের সুসংগঠিত যোগাযোগগুলোর কথা বলেন না। ফ্রন্টাল কর্টেক্স মানুষের ব্রেইনের কমপ্লেক্স ফাংশন করতে গিয়ে, প্রাইমারী ও সাপ্লিমেন্টারী মোটর এরিয়া ও সেনসরি এরিয়া, ভিজুয়েল কর্টেক্স, অডিটরি কর্টেক্স, ভারনিক্স এরিয়া, লিম্বিক সিস্টেম, কর্পাস স্ট্রায়েটাম,ডায়েনসেফালন এবং পেছনের ব্রেইনের সাথে নিবিড় ভাবে সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং ব্রেইনের এই জটিল গঠন তৈরী করতে যে জটিল রিঅর্গ্যানাইজেশন প্রয়োজন, অনিয়ন্ত্রিত (unguided) বিবর্তন ব্যাখ্যা করতে গেলে এগুলোর ব্যাখ্যা করতে হবে।

    আর বিবর্তনবাদীদের দাবী অনুসারে আনগাইডেড বিবর্তন হয় ‘র‍্যাণ্ডম মিউটেশন’ এর ফলে যদি কোন ‘নতুন ফাংশনাল ভ্যারিয়েশন’ তৈরী হয় তার ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’ এর মধ্য দিয়ে। সমস্যা হলো, প্রাণীদেহের অধিকাংশ ফাংশনই ‘জিন’-এর সাথে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ সম্পর্কযুক্ত না। অর্থাৎ একটি জিন একটি ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করছে (মনোজেনিক) এ রকম নয়। বরং অনেকগুলো জিন একত্রে একটি বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় (পলিজেনিক); সুতরাং উপরোক্ত দাবী ব্যাখ্যা করতে গেলে অসংখ্য Simultaneous এবং Exact মিউটেশন একসঙ্গে হতে হবে। তদুপরি এমব্রায়ো থেকে ডেভেলপমেন্টের সময় জেনেটিক সুইচ (ডিএনএ মিথাইলেশন প্যাটার্ন)-ও বিভিন্ন হওয়ায় ব্যাখ্যা করতে হবে এপিজেনেটিক রিঅর্গ্যানাইজেশন। [৩]

    অথচ এরিক ডেভিডসনের ডেভেলপমেন্টাল জিন রেগুলেটরী নেটওয়ার্কে (dGRN) মিউটেশন নিয়ে পরীক্ষা থেকে আমরা জানি এগুলো হাইলি কনজার্ভড, অর্থাৎ সামান্য মিউটেশন মারাত্মক জেনেটিক ডিফেক্ট তৈরী করে। [৪] অন্যদিকে মাইকেল বিহের স্টাডি থেকে আমরা জানি, একই সাথে চারটির বেশী মিউটেশন প্রয়োজন হলে এবং তা র‍্যাণ্ডমলি হতে হলে পৃথিবীর বয়স সীমা পার হয়ে যায়। [৫] আবার ডগলাস এক্স ও এন গজার দেখিয়েছেন একটি ফাংশনাল এনজাইমকে আরেকটি ফাংশনাল এনজাইমে পরিণত করতে ৫টি বা তার অধিক সাইমালটেনিয়াস ও স্পেসিফিক মিউটেশন লাগবে। [৬] কিন্তু কোষের নতুন কোন কাজ একটি এনজাইমের উপরতো নির্ভর করে না। অনেকগুলো এনজাইমের সামগ্রিক সহযোগিতায় একটি নতুন ফাংশন তৈরী হয়। এরূপ অনেকগুলো নতুন ফাংশনযুক্ত কোষের সমন্বয়ে তৈরী হয় নতুন ফাংশন বা বৈশিষ্ট্য-যুক্ত টিস্যু। আর এ ধরণের টিস্যুগুলোর পারস্পরিক সুনির্দিষ্ট ও পরিকল্পিত যোগাযোগের মাধ্যমেই শুধু হবে রিঅর্গ্যানাইজেনশ।

    সুতরাং, পাঠক বুঝে নিন, বিবর্তনবাদীদের দাবী কোন্‌ পর্যায়ের ‘বিজ্ঞান(!)’।

    রেফারেন্স:

    [১] Primate Brain Organization, Not Size, Key To Human Intelligence, Study Says.  http://www.huffingtonpost.com/2013/03/29/primate-brain-organization-human_n_2971873.html

    [২] Casey Luskin, Human origins and the Fossil Record, Science and Human Origin,Discovery Institute Press, Seattle, WA, p-71.

    [৩] Brian Thomas, Stark Differences Between Human and Chimp Brains.http://www.icr.org/article/7067/372/

    [৪] Stephen C. Meyer, Darwin’s Doubt, HarperCollins publishers, Seattle, WA, 2013, p-265.

    [৫] Michael Behe, Edge of Evolution, FreePress, NY, 2008, p-142.

    [৬] Gauger, A., Axe, D.. The Evolutionary Accessibility of New Enzymes Functions: A Case Study from the Biotin Pathway. BIO-Complexity, North America, 2011, apr. 2011. Available at: http://bio-complexity.org/ojs/index.php/main/article/view/BIO-C.2011.1.