Category: প্রবন্ধ/Article

  • সৃষ্টিতে স্রষ্টার নিদর্শন (২): উট যেভাবে পানি জমিয়ে রাখে

    কখনও কি চিন্তা করেছেন আপনাকে যদি মরুভূমিতে খাবার এবং পানি ছাড়া ছেড়ে দেয়া হয় আপনার কি অবস্থা হবে? পানি ও খাবার ছাড়া আপনি ৩৬ ঘন্টার মুখে মৃত্যুমুখে পতিত হবেন। অথচ একটি উট একই পরিস্থিতিতে বাঁচতে পারে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত। আবার ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বাঁচতে পারে ৮ দিন।  কিন্তু কিভাবে?

    হ্যা, এই উটেই আছে আমাদের জন্য চিন্তার খোরাক। উটের পিছনে যে কুজটি দেখতে পাচ্ছেন করুণাময় আল্লাহ সেটিকে দিয়েছেন উটের প্রয়োজন বিবেচনায় রেখেই। কুজের মধ্যে সঞ্চিত থাকে চর্বি। যা উটের খাদ্যের ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে। কিন্তু প্রশ্ন হল এই চর্বি যদি সাড়া শরীরে ছড়িয়ে থাকত তাহলে অসুবিধে কি ছিল? উত্তর, চর্বির তাপপ্রতিরোধক বৈশিষ্ট্যের কারণে, চর্বি যদি উটের পুরো শরীর জুড়ে থাকত, মরুভূমির প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় উটের অভ্যন্তরে উৎপন্ন তাপ উটের ভিতরে আটকা পড়ত এবং উটটি মারা পড়ত। অন্যদিকে এই কারণেই কিন্তু তিমির শরীর আবার চর্বি দিয়েই ঘেরা। যাতে সমুদ্রের শীতল তাপ তিমির ভিতরের মেটাবলিক প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিতে না পারে।

    আপনি কি জানেন একজন মানুষ ঘন্টায় সর্বচ্চো কত লিটার পানি পান করতে পারে? খুব বেশী ঘাম হলেও ঘন্টায় এক থেকে দেড় লিটারের বেশী পানি খাওয়ার সুযোগ নেই। কারণ হঠাৎ বেশী পানি খেলে রক্তে লবনের ঘনত্ব কমে যায়। ফলে রক্ত থেকে বিভিন্ন কোষে পানি ঢুকে কোষ গুলো ফুলে যেতে থাকে। এভাবে হঠাৎ পানি খেলে লোহিত রক্ত কণিকায় পানি ঢুকে রক্তকণিকাগুলো ভেঙ্গে যাবে আবার মস্তিষ্কে অতিরিক্ত পানি (cerebral oedema) জমলে একজন মানুষ মারাও যেতে পারে।

    শুনলে অবাক হবেন, একটি ৬০০ কেজি উট মাত্র ৩ মিনিটে ২০০ লিটার পানি গিলে ফেলতে পারে। এ্যাঁ, তাহলেতো উটটির রক্তে অতিরিক্ত পানি ঢুকে লোহিত রক্ত কণিকাগুলো ভাঙ্গন সৃষ্টি করার কথা? না তা কিন্তু হয় না। কারণ মহান আল্লাহ উটকে দিয়েছেন পানিশূণ্যতা সহ্য করার প্রচণ্ড ক্ষমতা। মানুষ যেখানে পানি কমে মাত্র ১০ শতাংশ ওজন হ্রাস সহ্য করতে পারে, সেখানে উট পারে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে এত দ্রুত পানি খেলেও পর্যাপ্ত রিহাইড্রেশন হয়ে যায়। তদুপরি  উটের লোহিত কণাগুলো আমাদের শরীরের ন্যায় গোলাকার নয়, ডিম্বাকৃতির (Oval); ফলে হঠাৎ পানি বেড়ে গেলেও লোহিত কোষগুলোর সেল মেমব্রেন ভেঙ্গে যায় না। আবার এই ওভ্যাল আকৃতির কারনে পানিশূণ্য অবস্থায় কোষগুলো অপেক্ষাকৃত চিকন জালিকা দিয়ে সহজে চলাচল করে অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রাখতে পারে।

    মরুভূমির খরতাপে পানি পাওয়া বড়ই দুস্কর। তাই উটকে দেয়া হয়েছে পানি ধরে রাখার অপূর্ব ক্ষমতা। উটের শ্বাসনালি দিয়ে যে পানি জলীয় বাস্প হয়ে বের হয়ে যায়, এর নাসারন্ধ্রের অপেক্ষাকৃতি পুরু মিউকাস মেমব্রেন তার প্রায় ৬৬ শতাংশ ধরে রাখতে পারে। এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও পানিশূন্য অবস্থায় উট প্রায় ৭৬ শতাংশ প্রস্রাব কমিয়ে দিতে পারে। এমনকি পায়খানার সাথে নি:সৃত পানি কমিয়ে দিতে পারে প্রায় ৫০ শতাংশ।

    উটের মধ্যে যদি এই বৈশিষ্ট্যগুলো একসাথে না থাকত তাহলে কি উটের পক্ষে এই প্রখর রোদে বেঁচে থাকা সম্ভব হত? কখনই না। তাহলে এই উট কি একা একা ধাপে ধাপে তৈরী হয়েছে? উট কি মরুভূমির তাপমাত্রা, অধিক তাপমাত্রায় পানির প্রয়োজনীয়তা, পানির ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিবর্তনের ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও মলিক্যুলার বায়োলজি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল?   

    কতই না নিঁখুত করুনাময় স্রষ্টার সৃষ্টি পরিকল্পনা। নিশ্চয়ই, সকল প্রশংসা তাঁর। 

    এজন্যই কি আল্লাহ আমাদের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন-

    “তাহলে কি এরা উটগুলো দেখছে না, কিভাবে তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে ?”
    (সূরা গাশিয়া, সুরা:৮৮; আয়াত:১৭)

    সহায়ক পাঠ:

    ১) Harun Yahya, For man of understanding, page: 41-45

    ২) http://en.wikipedia.org/wiki/Camel#Evolution

    ৩) http://discovermagazine.com/2009/jan/05-20-things-you-didnt-know-about-fat#.UWRJBZNTAXs

    ৪) http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/12053855

    ৫) http://books.google.com/books?id=g3CbqZtaF4oC&lpg=PP1&pg=PA96#v=onepage&q&f=false

  • সৃষ্টিতে স্রষ্টার নিদর্শন (১): পাখি যেভাবে শ্বাস নেয়

    ব্যস্ত নগরে আমরা যে পাখিটির সাথে সবচেয়ে পরিচিত তা হল কাক। সকাল থেকে দুপুর অবদি কাকের কর্কষ কা কা যেন আমাদের যান্ত্রিক মননেরই পরিচয় তুলে ধরে। যাই হোক, কোকিল, চড়ুই, বউ কথা কও, চিল, কাঠঠোকরা ইত্যাদি প্রজাতির পাখিদের কলকাকলী কবিদের জন্য যেমন কবিতার উপকরণ তেমনি ফটোগ্রাফারদের ফটোগ্রাফীর বস্তু।

    কিন্তু পাখির গঠনে যে আমাদের চিন্তার খোরাকও আছে। কখনও কি ভেবে দেখেছি পাখিরা কিভাবে শ্বাস নেয়। পাখি যখন উড়তে থাকে তখন প্রচণ্ড বেগে তার মুখের দিকে বাতাস ধেয়ে আসতে থাকে। এমতাবস্থায় পাখির ফুসফুসের গঠন যদি মানুষের মত হত তাহলে কি পাখি শ্বাস নিতে পারতো?

    আমরা (মানুষরা) প্রতি মিনিটে ১৪ থেকে ১৮ টি শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ে থাকি। শ্বাস নেয়ার সময় আমাদের নাক দিয়ে বাতাস প্রবেশ করে ট্রাকিয়া, ব্রঙ্কাস, ব্রঙ্কিওল (তথা শ্বাসনালী) পার হয়ে ফুসফুসের গ্যাস বিনিময়ের স্থান এলভিওলিতে পৌছে। শ্বাস ছাড়ার সময় আবার ঠিক উল্টো দিকে এলভিওলি হয়ে একই পথ ব্রঙ্কিওল, ব্রঙ্কাস ও ট্রাকিয়া হয় নাক দিয়ে বাতাস বের হয়ে যায়।

    কিন্তু পাখিদের ক্ষেত্রে যদি শ্বাসনালীর গঠন এরকম হয় তাহলে পাখির পক্ষে ওড়া সম্ভব হবে? উত্তর না। কেননা উড্ডয়মান অবস্থায় শ্বাস টানার পর শ্বাস ছাড়ার সময় ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকার কারণে ওড়ার সময় পাখির ডানার অনবরত পরিশ্রমের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে পাখি উড়তে ব্যর্থ হবে।

    করুণাময় আল্লাহ, তাই পাখিকে দিয়েছেন এক সুপরিকল্পিত শ্বাসযন্ত্র। হ্যাঁ, পাখির শ্বাস নালীতে গলার ঠিক নিচে থাকে ‘এয়ার স্যাক’ এবং ফুসফুসের ঠিক পেছনে থাকে আরেকটি ‘এয়ার স্যাক’। পাখি শ্বাস নেয়ার সময় এর বাতাসের একটি অংশ ফুসফুসে প্রবেশ করে অক্সিজেন দিতে এবং একটি অংশ প্রবেশ করে পেছনের ‘স্যাক বা থলেতে’, তবে সামনের থলেতে এই সময় বাতাস প্রবেশ করে না। কারণ সামনের থলেতে থাকে ফুসফুস থেকে অপসারিত কার্বন ডাই অক্সাইড যুক্ত বাতাস। এবার পাখি যখন শ্বাস ত্যাগ করে তখন পেছনের থলে থেকে অক্সিজেন যুক্ত সতেজ বাতাস প্রবেশ করে ফুসফুসে, ফলে শ্বাস ছাড়ার সময়ও ফুসফুসে অক্সিজেন প্রবাহ অব্যাহত থাকে যেন পাখির উড়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি পেয়ে যায়। একই সাথে সামনের থলে থেকে দূষিত বাতাস শ্বাসনালী দিয়ে বেড়িয়ে যায়। সুবহানআল্লাহ, কি চমৎকার প্রকৌশল।

    অন্যদিকে এই অতিরিক্ত এয়ার স্যাকগুলো, পাখিকে ‘হাল্কা’ করে উড়ার উপযোগী করার কাজটিও করে যাচ্ছে সুচাড়ুরূপে।

    নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর।

  • বিবর্তনের বড় প্রমাণ ‘জিরাফের লম্বা গলা’

    লামার্কের যুক্তি হল, জিরাফের গলা লম্বা হয়েছে উঁচু গাছের পাতা খুঁজতে গিয়ে। ডারউইনবাদের যুক্তি হল, জেনেটিক মিউটেশনের ফলে যে জিরাফগুলোর গলা লম্বা হয়ে ছিল সেগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে যায়, কারণ উঁচু গাছগুলোর পাতা খেতে লম্বা গলা বিশিষ্ট জিরাফগুলোর সুবিধা হচ্ছিল। এভাবে ক্রমান্বয়ে ‘ডারউইনিয়ান সিলেকশন প্রেসার’ এর মধ্য দিয়ে জিরাফের গলা লম্বা হয়।

    In the early 19th century, Jean-Baptiste Lamarck believed that the giraffe’s long neck was an “acquired characteristic”, developed as generations of ancestral giraffes strived to reach the leaves of tall trees. This theory was eventually rejected, and scientists now believe that the giraffe’s neck arose through Darwinian natural selection—that ancestral giraffes with long necks thereby had a competitive advantage that better enabled them to reproduce and pass on their genes. (১)

    Male Giraffe

    অর্থাৎ মিউটেশন যদিও একটি রেনডম প্রক্রিয়া তথাপি ‘ডিএনএ’ একটি বুদ্ধিমান সত্ত্বার মত বুঝতে সক্ষম হয়েছিল যে পর্যায়ক্রমে শুধু উঁচু গলা বিশিষ্ট জিরাফের দিকে মিউটেশন ঘটাতে হবে। কেননা তা না হয়ে এলোপাতাড়িভাবে প্রতিবার শুধু নিচু গলা বিশিষ্ট জিরাফের জন্ম হলে বা একবার উঁচু গলা এবং একবার নিচু গলা বিশিষ্ট জিরাফের জন্ম হলে, জিরাফ বাঁচবে না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে, ফিমেল জিরাফের ডিম্বানু এবং মেল জিরাফের শুক্রানুতে অবস্থিত ডিএনএ। কেননা তারা তাদের ডিম্বাশয় ও শুক্রাশয়ে থাকা অবস্থায় পর্যবেক্ষণ করল যে তাদের ধারক মেল জিরাফটি প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এ কারণে তারা পরবর্তী বংশধরের গলা যেন লম্বা হয় এমন ভাবে মিউটেশন ঘটালো। wp-monalisa icon

    Okapi

    Kudu

    Impala

    Steenbok

    এ কারণে জিরাফ এর গলা কেন লম্বা হল তার বিবর্তনীয় সমাধান এখনো হাইপোথিসিস পর্যায়ে রয়েছে, যেমন হাইপোথিসিস পর্যায়ে আছে Palaeomerycidae থেকে বিবর্তিত হয়ে Giraffoidea এবং Antilocapridae হওয়ার হাইপোথিসিস। তবে, বিবর্তনবাদীদের কাছে এই হাইপোথিসিসগুলোই বড় প্রমাণ। যেটার উদাহরণ তাদের সাথে কথা বলতে গিয়ে বুঝা যায়-

    There are two main hypotheses regarding the evolutionary origin and maintenance of elongation in giraffe necks. The “competing browsers hypothesis” was originally suggested by Charles Darwin and only challenged recently.

    The other main theory, the sexual selection hypothesis, proposes that the long necks evolved as a secondary sexual characteristic, giving males an advantage in “necking” contests  to establish dominance and obtain access to sexually receptive females……However, one objection is that it fails to explain why female giraffes also have long necks. (১)

    তদুপরি, এই হাইপোথিসিসগুলো সম্ভবত নিচের প্রশ্নগুলোরও ব্যাখ্যা প্রদান করছে-

    ১. জিরাফের গলা লম্বা হওয়ার সাথে সাথে কিভাবে তার মাথায় রক্ত পৌছানোর জন্য ক্যারোটিড আর্টারিও লম্বা হল।

    ২. জিরাফের গলা লম্বা হওয়াকালীন কিভাবে হার্টও এত উঁচুতে রক্ত সঞ্চালনের জন্য বিবর্তিত হয়ে ম্যাসিভ (11 kg, 2 feet long) হয়ে গেল।

    ৩. জিরাফের গলা যখন লম্বা হল তখন এর মাথা থেকে রক্ত হার্টে নিয়ে আসার রক্তনালী ‘জুগুলার ভেইন’ এর ভিতর ভাল্ভ তৈরী হল, যেন পানি পান করতে মাথা নিচু করার সময় Huge Volume এর রক্তের প্রেসার মাথায় রক্তক্ষরণ না করতে পারে। 

    ৪. কিভাবে জিরাফের বিশাল দেহে উৎপন্ন অতিরিক্ত তাপ অপসারিত হওয়ার জন্য ঠিক স্কিনের কালো স্পটগুলোর নিচে ‘Complex Blood Vessel এবং Large Sweet Glands’ তৈরী হল।

    ৫. কিভাবে উঁচুতে পৌছে যাওয়া জিরাফের ব্রেইনের সাথে দেহের অন্যান্য অঙ্গের সংযোগ রক্ষার জন্য এর নার্ভ ফাইবারগুলোও বিবর্তিত হয়ে লম্বা হয়ে গেল।

    ৬. বিশালাকৃতির জিরাফের ওজন ধারণের জন্য কিভাবে তার পায়ের হুফ বিবর্তিত হল।

    ৭. এবং এতগুলো পরিবর্তন আনার জন্য জিরাফের শুক্রানু ও ডিম্বানুর ‘ডিএনএ’-তে যে বিশাল পরিমাণ কোডিং এর পরিবর্তন হওয়ার দরকার কিভাবে সেটা ‘Random Mutation’ এর মধ্য দিয়ে পর্যায়ক্রমে সংঘটিত হল ইত্যাদি।

    রেফারেন্স:

    ১) http://en.wikipedia.org/wiki/Giraffe

    ২) http://en.wikipedia.org/wiki/Palaeomerycidae

    ৩) http://en.wikipedia.org/wiki/Okapi

    ৪) http://en.wikipedia.org/wiki/Kudu

    ৫) http://en.wikipedia.org/wiki/Impala

    ৬) http://en.wikipedia.org/wiki/Steenbok

    ৭) http://en.wikipedia.org/wiki/Antilocapridae

  • ‘Junk DNA’ -এর পতন

    বিবর্তনবাদ তত্ত্বের যতটুকু পাশ্চাত্যে এখনও টিকে আছে, তা আছে গায়ের জোড়ে ও অপপ্রচারের মাধ্যমে। তবে যতই দিন যাচ্ছে নতুন নতুন গবেষণা  সৃষ্টিতত্ত্বের পক্ষে এত বেশী প্রমাণ উপস্থাপন করছে যে শক্তির অপব্যাবহার করেও সেটাকে দমিয়ে রাখা কঠিন। 

    যেমন, রিচার্ড ডকিন্স এবং কেনেথ মিলাররা এত দিন যে ‘Junk DNA’ নিয়ে মাতামাতি করছিলেন, সেটি একটি ‘Myth‘ প্রমাণিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এটা রিচার্ড ডাওকিন্স বা কেনেথ মিলারদের গালে চপেটাঘাত ছাড়া কিছু নয়। 

    বিবর্তনবাদীদের নিকট ‘homology’ খুব প্রিয় জিনিস। এজন্যই দেখা যায় ডারউইনিজমের প্রমাণ দেখাতে গিয়ে ডারউইনিস্টরা দেখতে সদৃশ কয়েকটি কঙ্কাল কল্পিত ক্রমানুসারে উপস্থাপন করে। এরা হল ধীরে ধীরে বিবর্তনে বিশ্বাসী। আবার যারা মনে করে যে ধীরে ধীরে বিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু বিবর্তন দিয়েই প্রজাতির উদ্ভবের ব্যাখ্যা করতে হবে তারা হল নিওডারউইনিস্ট। এরা মনে করে পাঙ্কচুয়েটেড ইকুইলিব্রিয়ামের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন সময় একটি প্রজাতি থেকে এক লাফে বিশাল জেনেটিক শিফ্ট এর মাধ্যমে আরেকটি প্রজাতির আবির্ভাব হয়েছে। বিশেষ করে যখন দেখা গেল কোষের ভেতরকার গঠন যে রকম সহজ ভাবা হয়েছিল সে রকম নয় । তখন সৃষ্টি করা হয় নিওডারউইনিজম তত্ত্বের। 

    এরপর যখন ডিএনএ আবিস্কার হল এবং বিজ্ঞানীরা দেখলেন যে মানুষের ডিএনএ র প্রায় ৯৮% নন-কোডিং। অর্থাৎ এরা প্রোটিনের তথ্য ধারণ করে না। ব্যস বিবর্তনবাদীরাতো মহাখুশি। ইভোলিউশনিস্টরা বলে বসলেন এগুলো হল Junk DNA. বিবর্তনের বিভিন্ন সময়ে মিউটেশনের ফলে এগুলো নাকি রয়ে গেছে। এর উপর ভিত্তি করে দাড় করানো হল Phylogenetics এর তত্ত্ব সৃষ্টি হল মলিকিউলার ইভোলিউশন শাখা। এদের কাজ হল বিভিন্ন প্রজাতির ডিএনএ তে moleculer homology খুজে বের করা এবং এর উপর ভিত্তি করে একটি বিবর্তনের ক্রমবিন্যাস তৈরী করা। বর্তমানে,  মলিকিউলার ইভোলিউনিস্টরা বিবর্তনের phylogenetic tree তৈরী করছেন এবং দেখা যাচ্ছে যে paleontology তথা কঙ্কালের সাদৃশ্যের ভিত্তিতে তৈরী evolutionary tree এর মধ্যে বিশাল তফাৎ। ব্যস চলছে, কোন ‘tree’ টি গ্রহন করা হবে সেটা নিয়ে যুদ্ধ। এছাড়া step by step ইভোলিউশ এর সাথে punctuated equilibrium এর যুদ্ধতো লেগেই আছে। 

    In the mean time, যতই দিন যাচ্ছে গবেষণায় বের হয়ে আসছে যে ডিএনএর কোন অংশই ‘Junk’ নয়। বিশেষ করে এপিজেনেটিক্স এর গবেষণা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সম্প্রতি ENCODE প্রজেক্টের গবেষনায় বের হয়ে এসেছে যে ৮০% জিনের বায়োকেমিকাল ফাংশন আছে।   অধিকন্তু ENCODE প্রজেক্ট পরীক্ষা করেছে মানুষের শরীরে ‘১৪৭’ প্রকারের কোষ নিয়ে যেখানে মানুষের শরীরে কোষ আছে কয়েক হাজার প্রকারের! অর্থাৎ শীঘ্রই এই হিসেবটা ১০০% এ উন্নীত হবে সন্দেহ নেই। তবে যথারীতি বিবর্তনবাদীরা এখন নতুন কোন তত্ত্ব দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন। এমনকি এর মধ্যে ‘ফাংশন’ শব্দটির সংজ্ঞা নিয়ে শুরু হয়েছে বাকবিতন্ডা।  মূল তত্ত্বে হেরে গেলেও এট লিস্ট ‘শব্দ’ টির অর্থ পাল্টে দিয়ে যদি টিকে থাকা যায়, you know! 

    যেখানে ডিএনএর কোন অংশই অহেতুক নয়, সেখানে ‘Phylogenetic’ এর গবেষণা যে, দুটো ‘Software’ এর মধ্যে কত শতাংশ কোডের মিল রয়েছে তার চেয়ে বেশী কিছু বলতে পারে না সেটা বলাই বাহুল্য।  

    রিচার্ড ডাকিন্স ‘Junk DNA’ এর গুরুত্ব নিয়ে ‘The Selfish Gene’ নামক বই লিখেছেন। বইও বাজারে আছে, আছে ডকিন্স এবং আছে নতুন গবেষণায় প্রাপ্ত ‘Junk DNA’ এর ‘Reality’।  এ অবস্থায় নিশ্চয়ই মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন! কি বলেন?? সময়ের প্রবাহে ধীরে ধীরে ‘Junk DNA’ এর কনসেপ্ট ‘মিথ’ এর কাতারে সামিল হবে এবং  হবে এর প্রবক্তারা।  

    এভাবেই বিজ্ঞান ধীরে ধীরে মানুষকে সত্যের আরও নিকটে নিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে, ইনশাআল্লাহ।

  • মানুষের বিবর্তনের চিত্র ও একটি প্রশ্ন

    ডারউইনিয়ান বিবর্তন অনুসারে, একটি প্রজাতির মধ্যে যে প্রাণীটি প্রকৃতির সাথে এডাপ্টেড তথা একটি Given পরিবেশে যে প্রাণীটি সবচাইতে ফিট সেটি টিকে যাবে। বাকি গুলো বিলুপ্ত হবে। সুতরাং যদি ধরি Ape(বা এপ জাতীয় প্রাণী) থেকে এক পর্যায়ে মানুষ এসেছে। তাহলে বুঝতে হবে যে, এপ দের  জীবনে কোন একটি প্রাকৃতিক পরিবেশ এমন এসেছিল যেটা তাদের জন্য প্রতিকূল ছিল যে পরিবেশে বাই চান্স তাদের মধ্যে এমন কিছু পরিবর্তন হল যে, সৃষ্ট পরবর্তী প্রজাতিটি এই নতুন পরিবেশে এডাপ্টেড হয়ে টিকে গেল। এভাবে ক্রমান্বয়ে মানব প্রজাতি এসেছে।

    একটু গভীর ভাবে লক্ষ্য করুন, এখানে কিছু সমস্যা আছে। যদি বিষয়টা এরকম হয়ে থাকে তাহলে প্রশ্ন জাগে যে উক্ত পরিবর্তিত পরিবেশে যদিও পরিবর্তিত প্রজাতিটি (যদিও মলিকিওলার বায়োলোজি অনুযায়ী এটা অসম্ভব) বেঁচে যাবে কিন্তু পূর্ববর্তী প্রজাতিটিতো বিলুপ্ত হওয়ার কথা। কেননা উক্ত পরিবর্তিত পরিবেশে পূর্ববর্তী প্রজাতিটির জন্য Suitable না। কিন্তু আমরা তা দেখছি না।

    দ্বিতীয়ত, যদি এ ধরণের পরিবর্তনের সুযোগ থেকে থাকে তা Experiment করা সম্ভব। কেননা, এখন যদি এপদেরকে উক্ত ভিন্ন ধরনের পরিবেশের সম্মুখীন করা হয় তাহলে আমরা তাদের মধ্যে কিছু এডাপটেশনাল পরিবর্তন দেখতে পাব। কিন্তু বাস্তবে কি তা সম্ভব? সম্ভব নয়, কারণ কোন এপকে যদি তার খাদ্য থেকে বঞ্চিত কোন পরিবেশে রাখা হয় তাহলে সে কি তার খাদ্যাভাস পরিবর্তন করে ফেলবে? যদি তা না করতে পারে তবে তো সে মারা পড়বে। যদি বলা হয় এটা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। প্রশ্ন হল একটি কোন এডাপটেশন পরবর্তী প্রজন্মে প্রবাহিত হওয়ার জন্য তো আগে মা, বাবাকে বেচে থাকতে হবে। তবেই না পরবর্তী অফস্প্রিং আমরা আশা করতে পারি।  

    তৃতীয়ত, কেউ বলতে পারেন যে এপদের একটা অংশের মধ্যে এই বিবর্তন হয়েছে । কেননা উক্ত অংশটিই পরিবর্তিত পরিবেশে পড়ে গিয়েছিল। বিষয়টা কি সম্ভব? যেমন এপরা কিভাবে চার পা থেকে দুপেয়ে প্রাণীর দিকে এগুলো এ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলা হয় ৭ মিলিয়ন বছর আগে আইস এজের সময় যখন রেইন ফরেস্ট গুলো ধ্বংস হয়ে পড়ে তখন নাকি Ape দের একটা অংশ তাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তন করে, Savanna (অধিক ঘাস ও খুবই কম সংখ্যক ছোট গাছ যুক্ত জায়গা), মৃত পশুর চামড়া, মাংস খেতে শুরু করে আর দু পায়ে হাটার জন্য এডাপ্টেড হতে শুরু করে!

      “It was initially thought that an Ice Age, around seven million years ago, caused forests to shrink thus prompting some members of the species to venture into the savannah, becoming the ancestors of humanity.”

    (http://en.wikipedia.org/wiki/Chimpanzee-human_last_common_ancestor)

    কিন্তু এই সিনারিওতে প্রবলেম টা হল, আইস এজকি শুধু নির্দিষ্ট ফোকাল কোন এরিয়াতে হয়েছিল? যেহেতু এপদের থেকে মানুষ প্রথম আফ্রিকাতেই এসেছিল বলা হয়, তাহলে ধরে নেই যে উপরোক্ত ঘটনাটি আফ্রিকাতে ঘটেছিল সেই হিসেবে তো আফ্রিকাতে কোন এপ থাকার কথা নয়। কেননা উক্ত পরিবর্তিত পরিবেশে এপরা টিকে থাকতে পারবে না বরং টিকে থাকতে পারবে শুধু তারাই যারা পরিবর্তিত পরিবেশে এডাপ্টেড হয়েছিল।

    ডারউইনবাদীরা ডারউইনবাদকে লামার্কিয়ান মতবাদ থেকে পৃথক করতে বলেন। অর্থাৎ উচু গাছের পাতা খেতে গিয়ে জিরাফ লম্বা হয় নি। বরং জিরাফের মধ্যে যেই ভ্যারাইটিটির উচু গলা ছিল তারাই অধিক পাতা খেতে পেরে টিকে যায়। কিন্তু উপরের এপের থেকে দ্বিপদী মানুষ আসার যে কথাটি বলা হল, এর মধ্যে কাজ করছে লামার্কিয়ান লজিক। অর্থাৎ গাছে বসবাসরত চতুর্পদী শিম্পাঞ্জি মাটিতে পড়ে গিয়ে দ্বিপদী হতে শুরু করে। (লক্ষণীয় এক্ষেত্রে এপটির নেকড়ে বা বাঘে পরিণত হলে আরও সুবিধে, কেননা এতে তাদের স্পিড আরও বেড়ে যাবে, অথবা সাভানার এবানডেন্ট ঘাস খেতে খেতে গরুতে পরিণত হওয়ার কথা এবং সারভাইভাল অব ফিটেস্ট ল অনুসারে এদের উপরই বিবর্তনীয় সিলেকশন প্রেসার বাড়বে) 

    কিন্তু যদি ডারউইনিয়ান লজিক আনা হয় তাহলে বলতে হয় যে কিছু Random Mutation এর মাধ্যমে দু পায়ে চলতে পারা এপ তৈরী হয়েছে যেটা সাভানাতে টিকে গেছে! ভ্যারাইটি ( যদিও আমরা এখনও কিছু এপ ভ্যারাইটি দেখি যারা কিছু সময়ের জন্য হলেও দু পায়ে দাড়াতে পারে যেমন বোনোবো, Pan Paniscus)  এক্ষেত্রে প্রবলেম হল মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন কোন জেনেটিক তথ্য যোগ হয় না, বরং এক্সিসটিং জেনেটিক তথ্যের মধ্যে ক্ষতি সাধন হয় যার সবই ডিভাসটেটিং। তাহলে কিভাবে ঐ নতুন পরিবর্তিত প্রজাতিটির উদ্ভব হল তার প্রশ্ন থেকে যায়। অর্থাৎ Survival of Fittest  হওয়া আগে ব্যাখ্যা করা দরকার Arrival of the fittest। তথাপি যে পরিবেশে এপ টিকে থাকতে পারবে না সে পরিবেশ অতিবাহিত হওয়ার পরও আমরা এপকে টিকে থাকতে দেখছি । এটা কিভাবে সম্ভব?  কেননা শিম্পাঞ্জি, Pan troglodyte কে আমরা এখনও পাচ্ছি। অর্থাৎ ডারউইনিয়ান লজিক এনেও সমস্যা থেকে যাচ্ছে।

    আরেকটা বিষয় লক্ষণীয়, বলা হচ্ছে এপ ও মানুষ একটি কমন Ancestor থেকে এসেছে অথচ মানুষের বিবর্তনীয় চিত্র দেখানোর সময় এপ থেকে মানুষ কিভাবে হল সেটা দেখানো হচ্ছে বলা হচ্ছে এপ মানুষের Closest Relative । তাহলে কোনটা জানব, কিভাবে এপ থেকে মানুষ এল নাকি কিভাবে Chimpanzee Human Last Common Ancestor নামক মিসিং লিংক(!) থেকে মানুষ এল? আর এপদের এবং মানুষদের মধ্যে এখন কোন Random Genetic ভ্যারাইটি (যা নতুন কোন প্রজাতি সৃষ্টি করে) আমরা কেন হতে দেখছিনা সে প্রশ্নটাতো থেকেই যায়।

    এপ থেকে মানুষের মধ্যে যে ট্রানজিশনাল ফসিলের কথা বলা হয়, তার মাঝে Ardipithecus ramidus, Australopithecus,  Homo habilis-কে এপদের ভ্যারাইটি এবং Homo erectus, Neanderthals, Java Man, Piking man-কে বিলুপ্ত মানুষের বিভিন্ন রেস হিসেবে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। মানুষের Skull cap ও ওরাং ওটাং-এর Jaw bone ব্যাবহার করে Piltdown Man এবং একটি পিগের দাতের উপর ভিত্তি করে Nebraska Man নামক মধ্যবর্তী প্রজাতি দেখানোর প্রতারণা Paleontology-কে প্রশ্নবিদ্ধ করে।  

    এ সব কিছু মিলে মানুষের বিবর্তনের চিত্রটা ভ্রান্ত বলেই মনে হয়। বিবর্তনবাদীরা একটু সমাধান করে দিবেন কি?

  • ক্রেইগ ভেন্টার কোন কৃত্রিম প্রাণ তৈরী করেননি

    এটা বেশ পুরোনো খবর। ক্রেইগ ভেন্টার নতুন কোন জীবিত কোষ তৈরী করেননি। তথাপি নাস্তিক ও বিবর্তনবাদীরা এখনও এই খবরকে তাদের ব্যাকিং দেয়ার জন্য ব্যাবহার করে যাচ্ছে। এর কারণ দুটো হতে পারে, এক তারা নিজেরাই যানে না যে প্রসেসটাতে কী করা হয়েছে অথবা তারা সাধারণ পাঠকদের এ বিষয়ে অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের ‘জ্ঞানের(?) অহংকার’ প্রদর্শন করে বেড়াচ্ছে।

    আসুন আমরা দেখি ক্রেইগ ভেন্টার ও তার দল কী করলেন?

    তারা একটি অলরেডি ‘লিভিং’ ব্যাকিটেরিয়া মাইকোপ্লাজমা মাইকয়েড এর কোষের নিউক্লিয়ার ম্যাটেরিয়াল এর ডাটা কালেক্ট করলেন। এবং সে অনুসারে (স্পেসিফিক পদ্ধতিতে) নিউক্লিউটাইড ক্যাসেট তৈরী করলেন। ইস্টের মাধ্যমে, ইস্টের অলরেডি বিল্ট ইন এসেমব্লি সিস্টেম, ব্যাবহার করে তাদেরকে এসেম্বল করলেন। এরপর সেই জিনোমটিকে ‘অলরেডি লিভিং’ ব্যাকটেরিয়া মাইকোপ্লাজমা ক্যাপ্রিকোলাম এর মধ্যে ট্রান্সপ্ল্যান্ট করলেন। তবে তার আগে তারা একটি বুদ্ধি খাটালেন। তারা ক্যাপ্রিকোলাম এর নিজস্ব ‘রেস্ট্রিকশন এনজাইম’ এর জিনটাকে নক আউট করলেন। কেননা তারা জানতেন যে ব্যাকটেরিয়ার একটি বুদ্ধি আছে। তারা অন্য জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল ঢোকালে সেটাকে তাদের রেস্ট্রিকশন এন্ডোনিউক্লিয়েজ এনজাইম দিয়ে কেটে হজম করে ফেলে।

    এরপর যখন ঐ তথাকথিত ‘সিনথেটিক ডিএনএ’কে প্রবেশ করালেন, তখন
    উক্ত ব্যাকটেরিয়া কোন প্রকার কথা না বলার সুযোগ পেয়ে সেটাকে নিজের করে নিল। (কেননা কথা বলার ব্যবস্থাতো আগেই বুদ্ধি করে দূর করে দেয়া হয়েছে।) প্রশ্ন হল তারা ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে নিউক্লিউটাইড-টাকে ঢোকালেন কিভাবে? আমার জানা মতে নিউক্লিয়িক এসিড দুভাবে ঢুকতে পারে। এক, যদি কোন ‘ফায’ ভাইরাস ব্যাকেটেরিয়াকে আক্রমণ করে নিজের জেনেটিক মেটেরিয়ালকে ব্যাকটেরিয়ার মেটেরিয়ালের সাথে যুক্ত করে লাইসোজেনিক phase এ চলে যায়। দুই, যদি ব্যাকটেরিয়ার বিল্ট ইন ‘ট্রান্সফরমেশন’ প্রসেস দ্বারা ‘নির্দিষ্ট কতগুলো শর্ত মেইনটেইন করা পরিবেশে’ দ্রবনের নিউক্লিয়িক এসিডকে আপন করে নেয়।

    (সিনথেটিক কোষ সংশ্লেষ)

    গুগলে একটু সার্চ দিয়ে কী পেলাম জানেন? নিচের Abstract-টি পড়ুন:

    “As a step toward propagation of synthetic genomes, we completely replaced the genome of a bacterial cell with one from another species by transplanting a whole genome as naked DNA. Intact genomic DNA from Mycoplasma mycoides large colony (LC), virtually free of protein, was transplanted into Mycoplasma capricolum cells by ‘polyethylene glycol’–mediated ‘transformation’. Cells selected for tetracycline resistance, carried by the M. mycoides LC chromosome, contain the complete donor genome and are free of detectable recipient genomic sequences. These cells that result from genome transplantation are phenotypically identical to the M. mycoides LC donor strain as judged by several criteria.”

    চলুন আমরা দেখি এরপর কী হল। ব্যাকটেরিয়া তার ‘নিজস্ব’ পূর্ব থেকেই বিদ্যমান আরএনএ পলিমারেজ ব্যবহার করে মেসেঞ্জার আরএনএ তৈরী করল। এরপর সেই মেসেঞ্জার আরএনএ উক্ত ব্যাকটেরিয়ার ‘নিজস্ব’রাইবোজম এর সাহায্যে প্রোটিন সংশ্লেষ করল। এখন উক্ত সংশ্লেষিত প্রোটিন কিন্তু মাইকোপ্লাজমা ক্যাপ্রিকুলাম এর নয় বরং মাইকোপ্লাজমা মাইকয়েড এর প্রোটিন। (কারণ জিনগুলোত মাইকয়েডেরই) সুতরাং এর যে রেস্ট্রিকশন এন্ডোনিউক্লিয়েজ তা ‘রিসেপটর ব্যাকটেরিয়া’ মাইকোপ্লাজমা ক্যাপ্রিকোলাম এর ডিএনএ কে ফরেইন মনে করে কেটে ফেলল। এবং তৈরী হল তথাকথিক ‘কৃত্রিম কোষ’।

    পুরো প্রসেসটা করল একদল ‘ইন্টেলিজেন্ট সায়েন্টিস্ট’। পুরো প্রসেসটাকেই জ্ঞানের আলোকে অলরেডি ‘জীবিত’ ইস্ট ও ব্যাকেটেরিয়ার মধ্যে করা হল, তাদেরই বিল্ট ইন সিস্টেম ব্যাবহার করে। একটি Successful transplantation এর মাধ্যমে আমরা একটি Successful Genetic Engineering দেখতে পেলাম। এ ব্যাপারে নিচের মন্তব্যটি প্রণিধানযোগ্য।

    Dr Peter Dearden, Director of Genetics Otago comments:

    “This paper represents a very significant step forward in engineering life. Venter’s group have been able to put a fully synthetic genome into a bacterial cell and get it to act as that cell’s genome. The technical skill required to get this to work is immense, and is the culmination of a long series of experiments that pioneered the technology to do this, as well as developing ways to prove that it had been done.”

    “The experiment raises an interesting question, has Venter and his team created life? The answer is NO. Venter’s team is relying on the information in a natural genome. While the DNA strand that makes up the genome is synthetic and made in the lab, the information it contains comes from a species of bacterium; and it is the information that is important in a genome. Also Venter’s team needs a bacterial cell, one without a genome, to put their synthetic genome into. This cell, currently, can only be made by a living organism.”

    “However, while Venter and his team haven’t created life, they have carried out a remarkable feat, and put us one further step on the road to completely re-engineering organisms for biotechnological purposes.”

    এবং আমরা আবারও এই সুনিয়ন্ত্রিত ইন্টেলিজেন্স এর ব্যাবহার দেখে মূল ইন্টেলিজেন্ট স্বত্ত্বা ‘আল্লাহ’ যিনি জীবিত ব্যাকটেরিয়ার প্রাণ দান করেছেন তার পরিচয় পেলাম। এবং জানতে পারলাম কিভাবে তিনি আমাদেরকে সকল সৃষ্টির সেরা বানিয়েছেন।

    এছাড়াও এখানে আমরা দেখতে পেলাম যে উক্ত বিজ্ঞানীরা ‘মৃত ব্যাকটেরিয়া’ ব্যাবহার করলেন না। আর পৃথক ভাবে Cell memberane, microtubules, DNA, RNA, Ribosome, DNA polymerase, RNA polymerase, Golgi appearatus, Endolplasmic reticulum তৈরী করে তাদেরকে একত্রিত করে ‘জীবিত’ করা হলে যাকে আমরা ‘কৃত্রিম প্রাণ’ বলতে পারতাম তার ধরা-ছোয়ার কাছেও তো এই প্রাণ কে যেতে দেখলাম না!!!

    রেফারেন্স:

    ১.http://www.jcvi.org/cms/press/press-releases/full-text/article/first-self-replicating-synthetic-bacterial-cell-constructed-by-j-craig-venter-institute-researcher/ 
    ২. http://www.sciencemediacentre.co.nz/2010/05/21/experts-on-craig-venters-synthetic-biology-breakthrough/ 
    ৩. Genome Transplantation in Bacteria: Changing One Species to Another.http://www.sciencemag.org/content/317/5838/632.abstract
    ৪. USMLE step 1 immunology and microbiology (Kaplan Series)
    ৫. Lippincot’s illustrated Reviews of Biochemistry

  • আর্কিব্যাকটেরিয়া থেকে আর্কিয়া – বিবর্তনবাদীদের অস্বস্থি

    আর্কিয়া হল এক কোষী আনুবীক্ষুণীক জীবের একটি গ্রুপ (ডোমেইন)। এই ডোমেইনের সদস্য হল ব্যাকটেরিয়ার মত এক কোষী অনুজীব যাদের কোন নিউক্লিয়াস ও মেমব্রেন বাউন্ড অর্গ্যানিলিস নেই। প্রথমে উত্ত্বপ্ত ঝর্ণা, লবনাক্ত লেক এর মত কঠিন প্রাকৃতিক পরিবেশে পাওয়া যায় বলে এদেরকে ‘এক্সটারমোফাইল’ বলা হত। পরবর্তীতে এদেরকে মাটি, সমুদ্র, জলাভূমি, এমনকি মানুষের কোলনেও পাওয়া গেছে।

    যতদিন পর্যন্ত আর্কিয়নের আণবিক গঠন জানা যায় নি ততদিন এদেরকে বলা হত আর্কিব্যাকটেরিয়া। এদেরকে প্রক্যারিওটের মধ্যে রাখা হয়েছিল। পরে যখন গবেষণার মধ্য দিয়ে দেখা গেল এরা ভিন্ন ধরণের স্ট্রাকচারাল মলিকিউল দিয়ে গঠিত তখন বিজ্ঞানিরা পরলেন বিপাকে। কেননা একদিকে এদের আনুবিক্ষনিক গঠন ব্যাকটেরিয়ার মত আবার অন্য দিকে এদের বেশ কিছু ‘জিন’ ও মেটাবলিক পাথওয়ে ইউক্যারিওটের মত। আবার,  এদেরকে বিশাল সংখ্যায় প্রকৃতিতে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বিজ্ঞানিদের আর্কিয়া নামক একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ডোমেইন-ই তৈরী করতে হল। উইকিপিডিয়াতে কথাগুলো এভাবে আছে:

    ‘In fact, the Archaea have an independent evolutionary history and show many differences in their biochemistry from other forms of life, and so they are now classified as a separate domain in the three-domain system.’

    আসুন দেখি আর্কিয়ার সেল মেমব্রেনে কী পাওয়া গেল:

    Membrane structures.

    Top, an archaeal phospholipid: 1, isoprene chains; 2, ether linkages; 3, L-glycerolmoiety; 4, phosphate group.

    Middle, a bacterial or eukaryotic phospholipid: 5, fatty acid chains; 6, ester linkages; 7,. D-glycerol moiety; 8, phosphate group.

    Bottom9, lipid bilayer of bacteria and eukaryotes; 10, lipid monolayer of some archaea.

    প্রতিটি কোষের সেল মেমব্রেন গঠিত হয় ফসফোলিপিড বাইলেয়ার দিয়ে। এই ফসফোলিপিড অনু গুলো তৈরী হয় স্যাচুরেটেড ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের লম্বা চেইনের সাথে ফসফাটিডিক এসিড এর এস্টার বন্ধন(-COO-) দিয়ে।

    কিন্তু, আর্কিয়নের আনবিক গঠন পরীক্ষা করে দেখা গেল যে, এক্ষেত্রে ফসফোলিপিডের লিপিড অংশটুকু আইসোপ্রিনাইল এলিফেটিক জৈব অনু দিয়ে গঠিত। অর্থাৎ এর লিপিড অংশটুকু তে এমন কিছু জৈব অনু আছে যেগুলোর আবার সাইডব্রানচিং আছে। অন্যদিকে এই অনুগুলো ব্যাকটেরিয়ার মত ফসফাটিডিক এসিডের সাথে এস্টার বন্ধনে যুক্ত না হয়ে ইথার(-CO-) বন্ধন দিয়ে যুক্ত। (ইথার বন্ধন এস্টার বন্ধনের চেয়ে বেশী রেসিলিয়েন্ট)

    ফসফাটিডিক এসিডের গঠনে একটি গ্লিসারিন অনুর তিনটি হাইড্রোক্সাইড অনুর মধ্যে একটি হাইড্রোক্সাইড ফসফেট এর সাথে সমযোজী বন্ধনে যুক্ত থাকে। প্রকৃতিতে গ্লিসারিনের দুটি ময়েটি পাওয়া যায়। একটি ডান-হাতী, আরেকটি বা-হাতী। আর্কিয়নের স্টেরিওকেমিস্ট্রি তে দেখা গেছে যে এদের গ্লিসারিন অনুটি প্রোক্যারিয়ট বা ইউক্যারিয়টের ঠিক উল্টো। (মিরর ইমেজ)

    এ বিষয়গুলো দেখে বোঝা যায় যে আর্কিয়ন তার সেল মেমব্রেন তৈরীর জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন সেট অব এনজাইম্স ব্যাবহার করে। ভিন্ন এনজাইম অর্থ হল ভিন্ন জেনেটিক কোড।

    ফলে বিজ্ঞানীরা, আর্কিয়নকে ব্যাকটেরিয়া বা প্রোটজোয়ার মাঝে না রেখে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ডোমেইনে রাখতে বাধ্য হলেন। এবং যথারীতি বিবর্তনবাদীরা ‘ব্যাকটেরিয়া থেকে আর্কিব্যাকটেরিয়া ও তার থেকে প্রোটোজোয়া’ না বলে তিনটি ডোমেইনের একটি ‘কমন এনসেস্টর’ খুজতে লেগে গেলেন।smiley

    আর্কিয়নের খাবারের বৈচিত্রও অন্যরকম। যারা ফটোট্রফ তারা নিজেদের খাদ্য নিজেরাই তৈরী করে সূর্যের আলোর সাহায্যে। যারা লিথোট্রফ তারা খায় অজৈব অনু। আর যারা অর্গেনোট্রফ তার খায় জৈব অনু।

    গ্র্যান্ড প্রিজমেটিক স্প্রিং: এখানে থার্মোস্ট্যাবল আর্কিয়া পাওয়া যায়

    কিছু আর্কিয়নের প্রজাতি বেঁচে থাকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার উপরে, তার প্রোটিনের কোন প্রকার ডিজেনারেশন ছাড়াই। আবার কিছু পাওয়া গেছে পোলার রিজিয়নে অত্যন্ত ঠান্ডার মধ্যে ফ্রিজিং হওয়া ছাড়াই।  কিছু বাঁচে এক্সট্রিম এসিডিক বা এলক্যালাইন পরিবেশে। কিছু আবার একেবারে কম লবণযুক্ত পানিতে অসমোসিসের শক এবজর্ব করার মত থিক সেল মেমব্রেন নিয়ে বাঁচে।

    চিন্তা করুণ এদের প্রজাতির কত ভ্যারাইটি (সুবহানআল্লাহ)। এটা দেখে বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানীরা এখন আর্কিয়নের ডিফারেন্ট ও ইনডিপেন্ডেন্ট ইভোলিউশনারী হিস্ট্রি রচনা করছেন। এজন্য ওনাদের ট্রিতে এখন তিনটি কান্ড।

    (চিন্তা করে দেখুন এককোষী অনুজীবের জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ইতিহাস  )

    ইভোলিউশনের ‘বিস্ময়’ মানুষ, যারা কিনা মাত্র ১.৫% শতাংশ জেনেটিক মেক আপে এপদের থেকে পৃথক(!), তারা আবার এই আর্কিয়নদের নিজেদের সুবিধাজনক স্থানে ব্যবহার শুরু করে দিয়েছেন(!)

    যেমন,  মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া কে ব্যবহার করা হচ্ছে সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এ। আবারPyrococcus furiosus এর মত এক্সটারমোফাইলকে ব্যবহার করা হচ্ছে PCR reaction-এ। কারণ এরা যে ডিএনএ পলিমারেজ তৈরী করে তা থার্মস্ট্যাবল। PCR এ মানুষের ডিএনএ এর ডাবল হেলিক্স এর প্রতিটি হেলিক্স কে পৃথক করার জন্য দ্রবণের তাপমাত্রা ৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠানো হয়। এ তাপমাত্রায় প্রোক্যারিয়ট বা ইউক্যারিয়টের উক্ত এনজাইমটির টারশিয়ারি স্ট্রাকচার হারিয়ে ডি ন্যাচার হয়ে যাবে। অথচ Pyrococcus furiosus এর ডিএনএ পলিমারেজ এনজাইম এ তাপমাত্রায় ডিন্যাচার হয় না। (সুবহানআল্লাহ)

    আসলে বিবর্তববাদীদের লক্ষ্য হল তাদের মত করে পৃথিবীর ইতিহাসকে সাজানো। (শুধুমাত্র উইকিপিডিয়া পড়লেও এ বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়) যদিও পৃথিবীর ইতিহাস ও জীব সমূহের গঠন বৈচিত্র এর উল্টোটাই সাক্ষ্য দিয়ে চলেছে।   

    “(হে নবী; এ লোকদের জিজ্ঞেস কর) কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া এরা কি নিজেরাই সৃষ্টি হয়েছে? না কি এরা নিজেরাই নিজেদের সৃষ্টিকর্তা? না কি পৃথিবী ও আসমানকে এরাই সৃষ্টি করেছে ? প্রকৃত ব্যাপার হলো, তারা বিশ্বাস করে না।” (সূরা তূর, আয়াত ৩৫,৩৬)

    (অর্থাৎ এই লোকেরা আসল ও শ্বাশত কথার প্রতি প্রত্যয় স্থাপন করতেই প্রস্তুত নয়।)

    রেফারেন্স:

    ১) http://en.wikipedia.org/wiki/Archaea

    ২) http://en.wikipedia.org/wiki/Cell_membrane

    ৩) Lippincot’s Illustrated Reviews of Biochemistry, Chapter: Protein structure and function

    ৪) Davidson’s Principles and Practice of Medicine, Chapter: Molecular and genetic factors in disease

    ৫) Tafhim Ebook

    ছবির উৎস: গুগল ও উইকিপিডিয়া