বিবর্তনবাদ তত্ত্বের যতটুকু পাশ্চাত্যে এখনও টিকে আছে, তা আছে গায়ের জোড়ে ও অপপ্রচারের মাধ্যমে। তবে যতই দিন যাচ্ছে নতুন নতুন গবেষণা সৃষ্টিতত্ত্বের পক্ষে এত বেশী প্রমাণ উপস্থাপন করছে যে শক্তির অপব্যাবহার করেও সেটাকে দমিয়ে রাখা কঠিন।
যেমন, রিচার্ড ডকিন্স এবং কেনেথ মিলাররা এত দিন যে ‘Junk DNA’ নিয়ে মাতামাতি করছিলেন, সেটি একটি ‘Myth‘ প্রমাণিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এটা রিচার্ড ডাওকিন্স বা কেনেথ মিলারদের গালে চপেটাঘাত ছাড়া কিছু নয়।
বিবর্তনবাদীদের নিকট ‘homology’ খুব প্রিয় জিনিস। এজন্যই দেখা যায় ডারউইনিজমের প্রমাণ দেখাতে গিয়ে ডারউইনিস্টরা দেখতে সদৃশ কয়েকটি কঙ্কাল কল্পিত ক্রমানুসারে উপস্থাপন করে। এরা হল ধীরে ধীরে বিবর্তনে বিশ্বাসী। আবার যারা মনে করে যে ধীরে ধীরে বিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু বিবর্তন দিয়েই প্রজাতির উদ্ভবের ব্যাখ্যা করতে হবে তারা হল নিওডারউইনিস্ট। এরা মনে করে পাঙ্কচুয়েটেড ইকুইলিব্রিয়ামের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন সময় একটি প্রজাতি থেকে এক লাফে বিশাল জেনেটিক শিফ্ট এর মাধ্যমে আরেকটি প্রজাতির আবির্ভাব হয়েছে। বিশেষ করে যখন দেখা গেল কোষের ভেতরকার গঠন যে রকম সহজ ভাবা হয়েছিল সে রকম নয় । তখন সৃষ্টি করা হয় নিওডারউইনিজম তত্ত্বের।
এরপর যখন ডিএনএ আবিস্কার হল এবং বিজ্ঞানীরা দেখলেন যে মানুষের ডিএনএ র প্রায় ৯৮% নন-কোডিং। অর্থাৎ এরা প্রোটিনের তথ্য ধারণ করে না। ব্যস বিবর্তনবাদীরাতো মহাখুশি। ইভোলিউশনিস্টরা বলে বসলেন এগুলো হল Junk DNA. বিবর্তনের বিভিন্ন সময়ে মিউটেশনের ফলে এগুলো নাকি রয়ে গেছে। এর উপর ভিত্তি করে দাড় করানো হল Phylogenetics এর তত্ত্ব সৃষ্টি হল মলিকিউলার ইভোলিউশন শাখা। এদের কাজ হল বিভিন্ন প্রজাতির ডিএনএ তে moleculer homology খুজে বের করা এবং এর উপর ভিত্তি করে একটি বিবর্তনের ক্রমবিন্যাস তৈরী করা। বর্তমানে, মলিকিউলার ইভোলিউনিস্টরা বিবর্তনের phylogenetic tree তৈরী করছেন এবং দেখা যাচ্ছে যে paleontology তথা কঙ্কালের সাদৃশ্যের ভিত্তিতে তৈরী evolutionary tree এর মধ্যে বিশাল তফাৎ। ব্যস চলছে, কোন ‘tree’ টি গ্রহন করা হবে সেটা নিয়ে যুদ্ধ। এছাড়া step by step ইভোলিউশ এর সাথে punctuated equilibrium এর যুদ্ধতো লেগেই আছে।
In the mean time, যতই দিন যাচ্ছে গবেষণায় বের হয়ে আসছে যে ডিএনএর কোন অংশই ‘Junk’ নয়। বিশেষ করে এপিজেনেটিক্স এর গবেষণা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সম্প্রতি ENCODE প্রজেক্টের গবেষনায় বের হয়ে এসেছে যে ৮০% জিনের বায়োকেমিকাল ফাংশন আছে। অধিকন্তু ENCODE প্রজেক্ট পরীক্ষা করেছে মানুষের শরীরে ‘১৪৭’ প্রকারের কোষ নিয়ে যেখানে মানুষের শরীরে কোষ আছে কয়েক হাজার প্রকারের! অর্থাৎ শীঘ্রই এই হিসেবটা ১০০% এ উন্নীত হবে সন্দেহ নেই। তবে যথারীতি বিবর্তনবাদীরা এখন নতুন কোন তত্ত্ব দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন। এমনকি এর মধ্যে ‘ফাংশন’ শব্দটির সংজ্ঞা নিয়ে শুরু হয়েছে বাকবিতন্ডা। মূল তত্ত্বে হেরে গেলেও এট লিস্ট ‘শব্দ’ টির অর্থ পাল্টে দিয়ে যদি টিকে থাকা যায়, you know!
যেখানে ডিএনএর কোন অংশই অহেতুক নয়, সেখানে ‘Phylogenetic’ এর গবেষণা যে, দুটো ‘Software’ এর মধ্যে কত শতাংশ কোডের মিল রয়েছে তার চেয়ে বেশী কিছু বলতে পারে না সেটা বলাই বাহুল্য।
রিচার্ড ডাকিন্স ‘Junk DNA’ এর গুরুত্ব নিয়ে ‘The Selfish Gene’ নামক বই লিখেছেন। বইও বাজারে আছে, আছে ডকিন্স এবং আছে নতুন গবেষণায় প্রাপ্ত ‘Junk DNA’ এর ‘Reality’। এ অবস্থায় নিশ্চয়ই মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন! কি বলেন?? সময়ের প্রবাহে ধীরে ধীরে ‘Junk DNA’ এর কনসেপ্ট ‘মিথ’ এর কাতারে সামিল হবে এবং হবে এর প্রবক্তারা।
এভাবেই বিজ্ঞান ধীরে ধীরে মানুষকে সত্যের আরও নিকটে নিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে, ইনশাআল্লাহ।