Category: যৌন বিকৃতি

  • ট্রা/নস/সেক/সুয়েলিজম কি একটি জেনেটিক রোগ?

    এই প্রশ্নটির উত্তর নিয়ে আলোচনার আগে আসুন জানি ‘রোগ’ কি?

    এমন একটি সময় আমরা পার করছি যখন আমাদের প্রতিটি কমন সেন্স শব্দ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয়ে পড়ছে।

    যেমন, ‘রোগ’ কি? আমরা সবাই বুঝি যে রোগ হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যা আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায় বা সহজতা থেকে দূরে সরায়। অর্থাৎ, রোগ হচ্ছে অ-সুস্থতা। এ অসুস্থতা অনেক ধরণের হতে পারে। তন্মধ্যে শারীরিক, মানসিক, ও সামাজিক অসুস্থতার প্রভাব সাধারণত আমরা ব্যক্তিগত পর্যায়ে সহজে বা দ্রুত উপলব্ধি করি।

    প্রশ্ন হল, এখানে ‘স্বাভাবিক’ বলতে কি বুঝায়?

    জটিলতা চলে আসে এখানেই। কারণ, স্বাভাবিক-এর সংজ্ঞায়ন জটিল।

    পরিসংখ্যান অনুযায়ী normally distributed কোন ভ্যালুর গড় থেকে দুই স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন পর্যন্ত হয়ত স্বাভাবিক।

    জৈবিকভাবে শারীরিক অঙ্গের স্বাভাবিক কাজের ব্যঘাত বা ব্যতিক্রম হচ্ছে অস্বাভাবিক।

    মানসিকভাবে অধিকাংশ মানুষের মাঝে আমরা যে আচরণ দেখতে পাই বা যে আচরণ সামাজিক ‘নর্ম’ এর সাথে সাজুয্যপূর্ণ তাই স্বাভাবিক।

    আর, সামাজিকভাবে যা সমাজের সাংস্কৃতিক বা সামাজিক ‘নর্ম’ এর মধ্যে তাই স্বাভাবিক।

    তাহলে ‘নর্ম’ কি?

    নর্মস হল সমাজের অধিকাংশ মানুষের কাছে যেই আচরণটি গ্রহনযোগ্য। একটি সমাজের নর্মস নির্ধারিত হয় সেই সমাজের পূববর্তী সময় থেকে প্রচলিত গ্রহণযোগ্য আচরণ (সংস্কৃতি ও ট্রাডিশন),, বর্তমান মানুষদের বিশ্বাস এবং মোরাল ভ্যালুস এর দ্বারা। আবার, মানুষের বিশ্বাস ও মোরাল ভ্যালুস নির্ধারিত হয় তার ধর্ম, পড়াশোনা এবং ট্রাডিশনের মাধ্যমে।

    এবার আবার একটু ‘রোগ’-এ ফিরে আসি।

    যখন কোন রোগ হয়, চিকিৎসকরা রোগটির কারণ নির্ধারণ করে চিকিৎসা করার চেষ্টা করেন। কিছু রোগ আছে যেগুলো মানুষের জেনেটিক্স দিয়ে নির্ধারিত এবং এখনও যেগুলোর চিকিৎসা আবিস্কার হয়নি।

    যেমন, হানটিংটিন ডিজিজ। এটি একটি নিউরোলজিকাল রোগ যাতে আক্রান্ত রোগী অস্বাভাবিকভাবে হাত পা ছোড়াছুড়ি করতে থাকে যার ওপর তার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।

    এই রোগটি হয় হানটিংটিন (HTT) জিনে একটি কোডন CAG এর বারংবার পুনরাবৃত্তির কারণে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মানুষভেদে এই রিপিটেশনের পরিমাণ ১০ থেকে ৩৫ হতে পারে। রিপিটের পরিমান যত বেশী তত বয়সের দিকে দিয়ে তত আগে রোগের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায়।

    লক্ষ্যনীয়, CAG রিপিটের ভ্যারিয়েশনের কারণে HTT জিনের বিভিন্ন ধরণ হয় তাকে আমরা ‘রিপিট লেঙদ পলিমরফিজম’ বলতে পারি।

    লক্ষ্যনীয়, রিপিট লেংদ পলিমরফিজমের কারণে যে এবনারমাল বিহেভিয়ার তৈরী হচ্ছে, তাকে কিন্তু আমরা রোগ বলছি, স্বাভাবিক বলছি না।

    এবার আসুন আরেকটি রোগের উদাহরণ দেই। এই রোগটির সাথে এন্ড্রোজেন রিসেপটর (AR) জিনে রিপিট লেংদ পলিমরফিজম-এর সম্পর্ক আছে বলে একদল বিজ্ঞানী উপাত্ত পেয়েছেন (১)। AR জিনে রিপিট লেংদ পলিমরফিজমের জন্য যে সমস্যাটি হয় তার নাম হচ্ছে মেল টু ফিমেল ট্রা/নস/সেক/সুয়েলিজম। অর্থাৎ, যখন কোন পুরুষ অন্যদের পুরুষদের প্রতি আকর্ষণ অনুভব (ইয়াক!) করে তার পিছনের সম্ভাব্য কারণ হতে পারে এই রোগ।

    এখন, রোগী হিসেবে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সহানুভূতি পেতে পারে, কিন্তু হানটিংটিনকে যেমন আমরা ‘স্বাভাবিকতার’ সংজ্ঞা পাল্টে ‘ব্যতিক্রম’ বলছি না, ঠিক একইভাবে ‘ট্রা/নস/সেক/সুয়েলিজম’ কে ‘লগদভক’-এর মধ্যে ফেলে ‘অসুস্থতার’ পরিবর্তে ‘সুস্থতা’ বলার কোন কারণ নেই।

    হ্যা, যারা বলতে চায়, তারা কিন্তু আরও ‘কোর’-এর পরিবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা চাচ্ছে সোসাইটাল নর্ম-এর মধ্যে পরিবর্তন আনতে।

    আমরা আগে দেখেছি, একটি সমাজের নর্মস নির্ধারিত হয় সেই সমাজের পূববর্তী সময় থেকে প্রচলিত গ্রহণযোগ্য আচরণ (সংস্কৃতি ও ট্রাডিশন), বর্তমান মানুষদের বিশ্বাস এবং মোরাল ভ্যালুস-এর দ্বারা। আবার, মানুষের বিশ্বাস ও মোরাল ভ্যালুস নির্ধারিত হয় তার ধর্ম, পড়াশোনা এবং ট্রাডিশনের মাধ্যমে।

    আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে কিভাবে তারা নর্মকে পরিবর্তন করতে চাচ্ছে?

  • সমকামিতা ও টুইন স্টাডি

    রিপন ও দীপন দুই ভাই। দু’জনই ঢাকা মেডিকেলে পড়ালেখা করেছে।  দু’জনের চেহারা প্রায় একই রকম এবং তারা একই ধরনের পোশাক পড়ে। ফলে কেউ যদি ওদের কাউকে আলাদা ভাবে দেখে প্রথম দেখায় সে কি রিপন না দীপন পার্থক্য করা মুশকিল হয়ে যাবে।  এ অবস্থায় ওদের চেনার একটি সহজ উপায় আছে, তা হল ওদের সাথে কথা বলা। হ্যাঁ, রিপন একটু দ্রুত কথা বলে এবং চঞ্চল। অন্যদিকে, দীপন ধীরে কথা বলে এবং শান্ত প্রকৃতির।

    সমাজের প্রচলিত ধারণা হল- সদৃশ যমজ (Identical Twin) সন্তানেরা যেহেতু দেখতে একই রকম এবং তাদের জেনেটিক গঠনও প্রায় একই, সুতরাং তাদের আচার-আচরণও একই রকম হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। এর কারণ পরিবেশগত প্রভাবকগুলো আমাদের আচার আচরণের ধরণ নিয়ন্ত্রণ করে। অবিকল যমজ বাচ্চাদের অভিভাবকরা তাদেরকে ছোট বেলা থেকে একই ধাঁচে গড়ে তুললেও তারা যখন নিজেরা নিজেদের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিতে শুরু করে তখন থেকে তাদের জীবনধারণের প্রকৃতিতে পরিবর্তন চলে আসে। [১]

    তদুপরি, সব যমজ সন্তানেরা সদৃশ হয় না।  বিজ্ঞানীরা যমজ হওয়ার প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে যমজ  সন্তানদের শ্রেণীবদ্ধ করেন। দুটো সন্তান কি একটি জাইগোট থেকে হল নাকি দুটো জাইগোট থেকে হল তার উপর ভিত্তি করে যমজ সন্তানদেরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়:

    ১. মনোজাইগোটিক টুইন

    ২. ডাইজাইগোটিক টুইন

    নারী-পুরুষ মিলনের মধ্য দিয়ে নারীর জরায়ুতে যে শুক্রাণু স্খলিত হয় তার মধ্যে থেকে একটি শুক্রাণু একটি ডিম্বাণুর মিলনের ফলে তৈরি হয় জাইগোট। উক্ত জাইগোট প্রথম কয়েক দফা বিভাজিত হওয়ার পর যদি আলাদা হয়ে যায় এবং আলাদা ভাবে বাড়তে থাকে, তখন যে যমজ সন্তান হয় তারা হল মনোজাইগোটিক। মনোজাইগোটিক যমজরা যেহেতু একই জাইগোট থেকে হচ্ছে তাদের লিঙ্গ একই হয়, মুখাবয়ব প্রায় একই রকম হয়। তাদের ডিএনএ-তে প্রায় ৯৯ শতাংশ মিল থাকে, তবে হুবহু মিল থাকে না। [২] অন্যদিকে ডাইজাইগোটিক টুইন হয় যখন একটি শুক্রাণুর পরিবর্তে দুটো শুক্রাণু দুটো ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে। এক্ষেত্রে দুটো জাইগোট তৈরি হয় এবং দুটো জাইগোট মায়ের গর্ভে পৃথকভাবে বড় হতে থাকে। ডাইজাইগোটিক যমজদের লিঙ্গ ভিন্ন হতে পারে, চেহারায় মিল না থাকার সম্ভাবনা বেশী। বছরে যতগুলো যমজ বাচ্চা জন্ম নেয় তার এক-তৃতীয়াংশ হয় মনোজাইগোটিক টু্‌ইন এবং বাকী দুই-তৃতীয়াংশ হয় ডাইজাইগোটিক টুইন।       

    মনোজাইগোটিক যমজ সন্তানদের জন্মগত ভাবে মিল থাকলেও যতই দিন যেতে থাকে তাদের আচার আচরণ, শখ-আহ্লাদ, পোশাকের ধরণ, জীবনের লক্ষ্য ইত্যাদির পার্থক্য স্পষ্ট হতে থাকে। এর প্রধান কারণ হল পরিবেশগত প্রভাবগুলোর প্রতি যমজ সন্তানদের পৃথক প্রতিক্রিয়া এবং এর অন্যতম প্রক্রিয়া হল এপিজেনেটিক প্রক্রিয়া। এপিজেনেটিক প্রক্রিয়ায় ডিএনএ এসিটাইলেশন ও হিস্টোন মিথাইলেশন নামক ঘটনার মধ্যে দিয়ে জিন সাইলেন্সিং হয়। ফলে যমজ সন্তান দ্বয়ে জিনের এক্সপ্রেশন বিভিন্ন হয়। ধূমপান, শারীরিক পরিশ্রম, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি প্রভাবকগুলো এপিজেনেটিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। [৩] অর্থাৎ ডিনএনতে যতই মিল থাকুক না কেন পরিবেশ আচরণের প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে।

    বিহেভিওরাল জেনেটিক্সের রিসার্চে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম হল অবিকল যমজ ব্যক্তিরা। এই বিভাগের বিজ্ঞানীদের ধারণা হল যেহেতু অবিকল যমজদের (আইডেনটিক্যাল বা মনোজাইগোটিক টুইন) ডিএনএ প্রায় একই রকম এবং যেহেতু অবিকল যমজ ও বিসদৃশ যমজ (নন-আইডেনটিক্যাল বা ডাইজাইগোটিক টুইন) উভয় দলই একই পারিবারিক পরিবেশে বড় হয়,  সেহেতু এদের মধ্যে স্টাডি করলে মানুষের আচরণগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে জিনের ভূমিকা যাচাই করা সহজ হবে। যেমন: অবিকল যমজদের মধ্যে যদি এমন একটি আচরণ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়, যেটা জিনের দ্বারা নির্ধারিত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে অবিকল যমজদের মধ্যে উক্ত আচরণের মাত্রা যদি যারা বিসদৃশ তাদের চেয়ে বেশী হয় তাহলে উক্ত জিনটি উক্ত আচরণে প্রভাব রাখছে বলে সিদ্ধান্ত আনা যাবে বা ধারণাকে দৃঢ় করা যাবে। কিন্তু টুইন স্টাডিগুলোতে মানুষের অধিকাংশ আচরণ নিয়ন্ত্রণে পরিবার ও পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিশ্চিত হওয়া গেছে, কারণ মনোজাইগোটিক যমজদের ক্ষেত্রে আচরণ ১০০ শতাংশ মিলে যায় না। [৪] লক্ষণীয়, যদি জিন আচরণকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতো তাহলে অবিকল যমজদের আচরণে ১০০ শতাংশ মিল পাওয়া যেতো।      

    সমকামিতার জিনগত উৎস নিয়ে যে পরীক্ষাগুলো হয়েছে তার মধ্যে সর্বপ্রথম পরীক্ষাটি করেছিলেন কালম্যান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে করা এই স্টাডিতে সাবজেক্ট হিসেবে যাদের নেয়া হয়েছিলো তারা সমকামী হওয়ার পাশাপাশি মানসিক রোগাক্রান্ত ছিল। কালম্যান  তার স্টাডিতে দেখিয়েছিলেন যে ৩৭ জোড়া অবিকল যমজদের ৯৭ শতাংশ সমকামী অন্যদিকে ২৬ জোড়া বিসদৃশ যমজদের ১৫ শতাংশ সমকামী। [৫] তার স্টাডি যদি সঠিক হতো তাহলে বোঝা যেতো সমকামিতার পিছনে জিনের শক্ত ভূমিকা আছে। কিন্তু কালম্যানের স্টাডিতে অনেকগুলো পদ্ধতিগত সমস্যা ছিল (যেমন: মানসিক রোগীদের থেকে অংশগ্রহণকারী নেয়া যা সাধারণ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।) এবং পরবর্তী কোন স্টাডিতে তার ফলাফলের পুনরাবৃত্তি হয়নি। [৬]   

    প্রসঙ্গত, যারা জেনেটিক্যালী সদৃশ তাদের মধ্যে যদি পরীক্ষিত বৈশিষ্ট্যটি বেশী পাওয়া যাওয়া যায় বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় তাদেরকে বলা হয় জেনেটিক্যালী কনকর্ডেন্ট। ১৯৯১ সালে ও পরে বেইলী এট. এল.  সমকামিতার উপর বংশগতিয় প্রভাব সম্পর্কিত কয়েকটি স্টাডি করেন। এ স্টাডিগুলোতে সদৃশ যমজদের মধ্যে সমকামিতার কনকর্ডেন্স বেশী পাওয়া গিয়েছিলো। যেমন: ১৯৯১ সালের ছেলে সমকামীদের নিয়ে কৃত স্টাডিতে সদৃশ যমজদের মধ্যে ৫২%, বিসদৃশ যমজদের মধ্যে ২২% এবং দত্তক রূপে গৃহীতদের (যমজ নয়) মধ্যে ১১% জেনেটিক কনকর্ডেন্স পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ১৯৯৩ সালে মেয়ে সমকামীদের নিয়ে করা স্টাডিতে সদৃশ যমজদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ, বিসদৃশ যমজদের মধ্যে ১৬ শতাংশ এবং দত্তক রূপে গৃহীতদের মধ্যে ৬ শতাংশে সমকামিতা পাওয়া গেছে। [৫]

    এই স্টাডিগুলো থেকে সমকামিতার সাথে জেনেটিক্সের সম্পর্কের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কিছু মৌলিক সমস্যা আছে। প্রথমত, এই সমকামিতা যদি পুরোপুরি জিন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হত আমরা ১০০ শতাংশ জেনেটিক কনকর্ডেন্স পেতাম। সুতরাং এই স্টাডিগুলো থেকে প্রথমেই স্পষ্ট হয়ে যায় সমকামিতা পুরোপুরি জেনেটিক বলার সুযোগ নেই, হয়ত বলা যেতে পারে জেনেটিক প্রভাব আছে। [৭]  দ্বিতীয়ত, এই স্টাডিগুলোতে যেই পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারীদের সংগ্রহ করা হয়েছিলো সেই পদ্ধতিতেই সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। অংশগ্রহণকারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে গে বা লেসবিয়ানদের ম্যাগাজিনগুলোতে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিলো যে যাদের যমজ ভাই বা বোন আছে তারা যেন স্টাডির জন্য আসে। এ ধরনের অধিক বিজ্ঞাপিত স্টাডির ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যারা সদৃশ যমজ তারা বিসদৃশ যমজদের চেয়ে বেশী অংশগ্রহণ করে। ফলে প্রথমেই একটি ‘ভলান্টিয়ার ইরর’-এর কারণে ‘সিলেকশন বায়াস’ তৈরি হয়। [৬] ২০০০ সালের দিকে বেইলী এট.এল.  পদ্ধতিগত ত্রুটি ঠিক করে অস্ট্রেলিয়ার টুইন রেজিস্ট্রি থেকে অংশগ্রহণকারী নিয়ে যখন একই পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি করেন তখন তাদের ফলাফল যথেষ্ট কমে আসে। সদৃশ যমজদের ক্ষেত্রে ২৪ শতাংশ ও বিসদৃশ যমজদের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কনকর্ডেন্স পাওয়া যায়।[৫]

    বেইলী এট. এল. ছাড়াও আরও অনেকে এ সংক্রান্ত টুইন স্টাডি করেছেন। ড. নেইল হোয়াইটহেড বিশেষত ২০০০ সাল পরবর্তী স্টাডিগুলো নিয়ে একটি বিস্তারিত রিভিউ চালিয়েছেন।[৬]  সেখানে ছেলে সমকামীদের ক্ষেত্রে গড় কনকর্ডেন্স পাওয়া গেছে ২২ শতাংশ এবং মেয়ে সমকামীদের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ (স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন অনেক বেশী যথাক্রমে ১৬ ও ২০ শতাংশ)। অর্থাৎ সমকামিতার ক্ষেত্রে দুর্বল জেনেটিক প্রভাব পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, টুইন রিসার্চে ২৫, ৫০ ও ৭৫ শতাংশ প্রভাবকে যথাক্রমে দুর্বল, মধ্যম ও শক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সে হিসেবে সমকামিতার উপর পরিবেশের প্রভাব অনেক শক্ত। কারণ, সমকামিতার উপর পরিবেশের প্রভাব নিয়ে করা যতগুলো স্টাডি আছে ড. হোয়াইটহেড উক্ত পেপারে সেগুলোকে রিভিউ করে দেখান যে, সমকামিতার উপর ‘নন-শেয়ার্ড’[৮] পরিবেশের প্রভাব ছেলে ও মেয়েদের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৬৪ ও ৬৩ শতাংশ (স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশনও কম যথাক্রমে ১৪ ও ১২ শতাংশ)।  যদিও ড. হোয়াইটহেডের রিভিউতে সদৃশ যমজে সমকামিতার হার দুর্বল (২২ ও ৩৩ শতাংশ) হলেও আছে মনে হচ্ছে, তথাপি তিনি দেখিয়েছেন যে টুইন সংক্রান্ত স্টাডিগুলোতে যে নিয়মগুলো অনুসরণ করার কথা সেগুলো বিবেচনা করলে প্রত্যেকটি টুইন স্টাডিতে কোন না কোন দুর্বলতা (তথা নিয়মের লঙ্ঘন) পাওয়া যায় এবং তার ফলে স্টাডিগুলোর হিসেব শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। ড. হোয়াইটহেড পরবর্তী স্টাডিগুলোতে নন-শেয়ার্ড পরিবেশের প্রভাব আরও বেশী পাওয়া যাবে বলেও উল্লেখ করেন।[৬]

    মজার বিষয় হল অস্ট্রেলিয়ার একটি রিসার্চ গ্রুপ যারা সমকামীদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে (তথা ‘হোমোফোব’) তাদের উপর পরিবেশ ও জেনেটিক্সের প্রভাব নিয়ে স্টাডি করে দেখেছেন, হোমোফোবিয়ার পিছনে জেনেটিক্সেরও ভূমিকা আছে। আরও বিস্ময়কর হল আমেরিকান এটি গ্রুপ উক্ত স্টাডির পুনরাবৃত্তি করে অনুরূপ ফলাফল পেয়েছেন।[৯] অর্থাৎ সমকামিতা বা সমকামিতার বিরোধিতা যেটা নিয়েই আপনি সদৃশ যমজদের উপর পরীক্ষা চালান না কেন জেনেটিক্সের অল্পবিস্তর প্রভাব পাওয়া যাবেই, যা এই অল্পবিস্তর প্রভাবের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন করাকে সমর্থন করে।

    আমরা প্রবন্ধটি থেকে দেখলাম সমকামিতার উপর জেনেটিক্সের প্রভাবের পক্ষে টুইন স্টাডিগুলোর কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেই। বরং অনেক সমকামী ব্যক্তি, যারা পরবর্তীতে তাদের সম-লিঙ্গ-ঝোঁককে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে এটা পরিষ্কার যে চেষ্টা করলে সেক্সুয়্যাল অরিয়েন্টেশন পরিবর্তন করা যায়।[১০] সুতরাং সমকামিতাকে জন্মগত বৈশিষ্ট্য বলে প্রচার করে মানুষদের সমকামিতার মত অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়ার পক্ষে যে প্রতারণাপূর্ণ প্রচারণা রংধনু গংরা চালিয়ে যাচ্ছে, তা তাদের যুব সমাজকে নৈতিকভাবে ধ্বংস করার অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত মিশনের একটি অংশ মাত্র।     

    তথ্যসূত্র:

    ১. Robin Mckie. Why do identical twins end up having such different lives?. The Observer. [Internet] 2013 June 2 [Cited 2014 April 13]; Available at: http://www.theguardian.com/science/2013/jun/02/twins-identical-genes-different-health-study   

    ২. Anahad O’Connor. The Claim: Identical Twins Have Identical DNA. New York Times. [Internet] 2008 March 11 [Cited 2014 April 14]; Available at: http://www.nytimes.com/2008/03/11/health/11real.html?_r=0

    ৩. Sarah Graham. Identical Twins Exhibit Differences in Gene Expression. Scientific American. [Internet] 2005 July 5 [Cited 2014 April 14]; Available at: http://www.scientificamercian.com/articles/identicial-twins-exhibit-d/

    ৪. Khytam Dawood, J. Michael Bailey, and Nicholas G. Martin. Genetic and environmental influences in sexual orientation. Handbook of Behavior Genetics. Page 270. Available at: genepi.qimr.edu.au/contents/p/staff/NGMHandbookBehGen_Chapter19.pdf 

    ৫. Ibid. Page 271

    ৬. Neil E. Whithead. Neither Genes nor Choice: Same-Sex Attraction Is Mostly a Unique Reaction to Environmental Factors. Journal of Human Sexuality 2011[Cited 2014 April 14]; 3:81-114. Available at: http://www.mygenes.co.nz/whitehead_twinjhs.pdf

    ৭. What does science say about homosexuality.[Internet] 2006 April 4 [Cited 2014 April 14]; Available at: http://www.inqueery.com/html/science_and_homosexuality.html

    ৮. ‘নন-শেয়ার্ড’ পরিবেশ বলতে বুঝানো হচ্ছে মনোজাইগোটিক টুইনরা যখন একই পরিবেশে বড় না হয়ে ভিন্ন পরিবেশে বড় হয়।

    ৯. Rich Deem. Genetics and Homosexuality: Are People Born Gay? The Biological Basis for Sexual Orientation. Evidence For God. [Internet] Last Updated 2013 November 25 [Cited 2014 April 14]; Available at: http://www.godandscience.org/evolution/genetics_of_homosexuality.html#n22

    ১০. Neil E. Whitehead. Chapter Twelve: Can sexual orientation change?. My Genes Made Me do It. [Internet] Available at: http://www.mygenes.co.nz/PDFs/Ch12.pdf 

  • সমকামিতা ও মানুষের মস্তিষ্ক

    নিউরোপ্লাস্টিসিটি সম্পর্কে আমরা কমবেশী জানি। সহজ কথায় মানুষের ব্রেইনের কানেকশনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা যায় চর্চার মধ্য দিয়ে। লণ্ডনের বাস ও ট্যাক্সি ড্রাইভার দিয়ে নিয়ে একটি নিউরোইমেজিং স্টাডি আছে, সেখানে দেখা গেছে যারা অনেকদিন ধরে শহরের আঁকাবাঁকা পথে অলিতে-গলিতে গাড়ি চালিয়ে অভ্যস্ত তাদের হিপ্পোক্যাম্পাসের পিছনের দিকের অংশ বেশ বড় হয়ে গেছে।[১] কারণ, স্থানসংক্রান্ত স্মৃতি ধারণে এই অংশটার ভূমিকা আছে।

    ঠিক তেমনি মস্তিষ্কের যেই অংশটা মানুষের যৌনতা সংক্রান্ত বিষয়ে ভূমিকা রাখে সেই অংশটা বেশী ব্যবহার করলে বা সেই অংশ স্বাভাবিক উপায়ে ব্যবহৃত না হয়ে অন্য উপায়ে ব্যবহৃত হলে সেই অংশে পরিবর্তন আশা করাটাই স্বাভাবিক।

    এখন ধরুন, আপনি কিছু সেক্স ওয়ার্কারদের নিয়ে ইমেজিং স্টাডি করলেন। আপনি এদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশটা অন্যদের চেয়ে বড় পেতে পারেন। বাংলাদেশে যারা Male who sex with Male (MSM) বা সহজ ভাষায় হোমোসেক্সুয়েল (গে বা সমকামী)-দের নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছেন তারা জানেন, এরা অধিকাংশই হয় সেক্স-ওয়ার্কার। সুতরাং, এদের স্টাডিতে ব্রেইনের নির্দিষ্ট অংশ বড় পাওয়াটা অস্বাভাবিক না। এ অবস্থায় আপনার অনুসিদ্ধান্ত নিচের কোনটি হওয়া স্বাভাবিক:

    ১. হোমোসেক্সুয়্যালিটির কারণে উক্ত অংশ বড় পাওয়া গিয়েছে

    ২. উক্ত অংশ বড় হওয়ার কারণে তারা হোমোসেক্সুয়েল

    যারা দ্বিতীয়টির ব্যাপারে মত দিবে, তাদের দুটো অবস্থা হতে পারে:

    ১. তারা বিজ্ঞানের ইনফারেন্স কিভাবে টানতে হয় জানেনা

    ২. তারা হোমোসেক্সুয়েলীটিকে জন্মগত বোঝাতে চাচ্ছে

    প্রসঙ্গত ইঁদুরের ব্রেইনে এই অংশটি তথা নিউক্লিয়াস গ্রুপের নাম Sexually Dimorphic Neucleas (SDN), যা হাইপোথ্যালামাসের অংশ।

    ১৯৯১ সালে সাইমন লিভে নারী ও পুরুষের মরদেহের মগজ নিয়ে একটি স্টাডি করেন। পুরুষদের মধ্যে ১৯ জনকে হোমোসেক্সুয়েল ও ১৬ জন হেটারোসেক্সুয়েল বলে তিনি ধরে নেন( Presumed !)। [২],[৩] তার স্টাডি অনুযায়ী হাইপোথ্যালামাসের সামনের দিকের অংশে ‘ইন্টারস্টিসিয়াল নিউক্লিয়াস অব হাইপোথ্যালামাস’-এর নিউক্লিয়াসের চারটি গ্রুপের মধ্যে ৩নং গ্রুপটি মেয়ে হেটারোসেক্সুয়েলদের চেয়ে ছেলে হেটারোসেক্সুয়েলদের এবং ছেলে হেটারোসেক্সুয়েলদের চেয়ে ছেলে হোমোসেক্সুয়েলদের প্রায় দ্বিগুণ বড় থাকে। [৩] তিনি এর থেকে সিদ্ধান্ত দেন যে সেক্সুয়েল অরিয়েন্টেশনের পার্থক্য হওয়ার একটি বায়োলজিক্যাল কারণ আছে: সহজ কথায় গ্রুপ ৩ বড় বলেই ‘হোমো’রা হোমো।

    পাঠক এবার চিন্তা করে দেখুন, আপনার কাছে নিউরোপ্লাস্টিসিটি ও হোমোসেক্সুয়েলদের সেক্সুয়েল প্র্যাকটিস সম্পর্কে যে জ্ঞান আছে তাতে কি আপনি এরকম সিদ্ধান্তে হঠাৎ চলে যাবেন?

    মজার বিষয় হল, ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডাম-এর নিউরো-বায়োলজির প্রফেসর সোয়াব, ট্রান্সসেক্সুয়েলিটির প্রফেসর গোরেন এবং  হফম্যান  ১৯৯৫ সালে দেখান যে, জন্মের সময় SDN-এর নিউক্লিয়াস সংখ্যা, ২ থেকে ৪ বছর বয়সে SDN-এর নিউক্লিয়াস সংখ্যার ২০ শতাংশ থাকে। অত:পর ২ থেকে ৪ বছর বয়স পর্যন্ত একই হারে এই সংখ্যা বাড়তে থাকে। ৪ বছরের পরে গিয়ে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই অংশটি ছোট হয়ে যেতে থাকে। তারা আরও বলেন: “No difference in SDN cell number was observed between homosexual and heterosexual men.” অর্থাৎ হোমো এবং হেটারোদের কোষ সংখ্যায় কোন পার্থক্য পাওয়া যায়নি। তাদের মতে সেক্সুয়েল অরিয়েন্টেশন নিয়ন্ত্রণে জেনেটিক্সের সাথে পারিপার্শ্বিক এবং মন-সামাজিক প্রভাবকগুলোও ভূমিকা রাখে। [৪]

    সুতরাং নিউরোপ্লাস্টিসিটি বিষয়টি যে এখানে ভূমিকা রাখছে সেই দিকেইতো সিদ্ধান্ত যাওয়ার কথা।  ড. কেনেথ ক্লিভিনটনও একই কথা বলছেন:

    “There is a body of evidence that shows the brain’s neural networks reconfigure themselves in response to certain experiences. Therefore, the difference in homosexual brain structure may be a result of behavior and environmental conditions.” [৫]

    অন্যদিকে সাইমন লিভে তার রিসার্চ প্রকাশ করার সাথে সাথে নিউজ মিডিয়া (নিউইয়র্ক টাইমস) তার স্টাডি নিয়ে যেভাবে রিপোর্ট করেছে [৬] তিনি যখন পরিষ্কার করেছেন যে তার রিসার্চ হোমোসেক্সুয়েলিটিকে জেনেটিক প্রমাণ করেনি তখন কিন্তু মিডিয়ায় সেভাবে কভারেজ পায়নি। তিনি বলেন:

     “It’s important to stress what I didn’t find. I did not prove that homosexuality is genetic, or find a genetic cause for being gay. I didn’t show that gay men are born that way, the most common mistake people make in interpreting my work.” [৭]

    সাইমন লিভের আর্টিকেলটির আরও কিছু দুর্বলতা নিয়ে রবার্ট নাইট আলোচনা করেছেন।[৮] তিনি দেখান যে লিভের স্টাডিতে ৬ জন সমকামী এইডস-এর মারা যায়। অন্যদিকে ড. বাইন দেখিয়েছেন যে এইডস আক্রান্ত রোগীর সাইড ইফেক্ট হিসেবে উক্ত গ্রুপ থ্রি নিউক্লিয়াস বড় হতে পারে। এছাড়াও, সাইমন লিভের এ বিষয়ে কোন ফলোআপ স্টাডি নেই। [৯]

    তদুপরি, সাইমন লিভে নিজে ছিলেন প্রকাশ্য হোমোসেক্সুয়েল এবং তার এই রিসার্চের পিছনে স্পষ্ট এজেণ্ডা ছিল হোমোসেক্সুয়েলিটিকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা। তিনি বলেন:

     “It’s important to educate society, I think this issue does affect religious and legal attitudes.” [৫]

    সুতরাং পুরো বিশ্বে অস্বাভাবিক যৌনাচারকে স্বাভাবিক করার যে প্রচেষ্টা চলছে, অপেক্ষাকৃত রেজিস্টান্ট মুসলিম দেশগুলোতেও ঠিক একই এজেণ্ডা নিয়ে নেমেছে অভিজিৎ গং। বিভ্রান্তিকর, দুর্বল রিসার্চ ও মিথ্যাচারের উপর ভিত্তি করে তারা হোমোসেক্সুয়েলীটির মত মানসিক রোগের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে অনেক মানুষকে, তাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে এইডস এর মত ভয়াবহ রোগের দিকে। [১০]

    [হোমোসেক্সুয়েলিটির আরও দুটো তথাকথিত এভিডেন্স ‘টুইন স্টাডি’ এবং ‘হোমোসেক্সুয়াল জিন’ নিয়ে পরবর্তীতে লিখা থাকবে]

    তথ্যসূত্র:

    ১. Maguire EA1, Woollett K, Spiers HJ. London taxi drivers and bus drivers: a structural MRI and neuropsychological analysis. Hippocampus 2006[cited 2014 March 24];16(12):1091-101. Available at: PubMed

    ২. What does science say about homosexuality.[Internet] 2006 April 4 [Cited 2014 March 24]; Available at: http://www.inqueery.com/html/science_and_homosexuality.html

    ৩. Simon L. A Difference in hypothalamic structure between heterosexual and homosexual men. Science. 1991 Aug 30 [cited 2014 March 24];253(5023):1034-7. Available at: Pubmed

    ৪. Swaab DF1, Gooren LJ, Hofman MA. Brain research, gender and sexual orientation. J Homosex. 1995[cited 2014 march 24];28(3-4):283-301. Available at: Pubmed

    ৫. D. Gelman, D. Foote, T. Barrett, M. Talbot, “Born or Bred,” Newsweek, 24 February 1992, 46-53.

    ৬. Natalie Angier. Zone of brain linked to men’s sexual orientation. New York Times;. [Internet]. 1991 Aug 30 [cited 2014 March 24 ]; Available at: http://www.nytimes.com/1991/08/30/us/zone-of-brain-linked-to-men-s-sexual-orientation.html

    ৭. Sex and the Brain. Discover, March 1994, Vol. 15, No. 3, p. 64.

    ৮. Robert Knight. BORN OR BRED? Science Does Not Support the Claim That Homosexuality Is Genetic. [Internet] [Cited 2014 March 24]; Available at: http://www.cwfa.org/images/content/bornorbred.pdf

    ৯. Jonathan Marks. What it means to be 98% Chimpanzee. London: University of California Press; 2002; p 114.

    ১০. “Gay, bisexual, and other men who have sex with men (MSMa), particularly young black/African American MSM, are most seriously affected by HIV.” Fast Facts;[Cited 2014 March 24] Available at: http://www.cdc.gov/hiv/statistics/basics/ataglance.html