ক্রেইগ ভেন্টার কোন কৃত্রিম প্রাণ তৈরী করেননি

এটা বেশ পুরোনো খবর। ক্রেইগ ভেন্টার নতুন কোন জীবিত কোষ তৈরী করেননি। তথাপি নাস্তিক ও বিবর্তনবাদীরা এখনও এই খবরকে তাদের ব্যাকিং দেয়ার জন্য ব্যাবহার করে যাচ্ছে। এর কারণ দুটো হতে পারে, এক তারা নিজেরাই যানে না যে প্রসেসটাতে কী করা হয়েছে অথবা তারা সাধারণ পাঠকদের এ বিষয়ে অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের ‘জ্ঞানের(?) অহংকার’ প্রদর্শন করে বেড়াচ্ছে।

আসুন আমরা দেখি ক্রেইগ ভেন্টার ও তার দল কী করলেন?

তারা একটি অলরেডি ‘লিভিং’ ব্যাকিটেরিয়া মাইকোপ্লাজমা মাইকয়েড এর কোষের নিউক্লিয়ার ম্যাটেরিয়াল এর ডাটা কালেক্ট করলেন। এবং সে অনুসারে (স্পেসিফিক পদ্ধতিতে) নিউক্লিউটাইড ক্যাসেট তৈরী করলেন। ইস্টের মাধ্যমে, ইস্টের অলরেডি বিল্ট ইন এসেমব্লি সিস্টেম, ব্যাবহার করে তাদেরকে এসেম্বল করলেন। এরপর সেই জিনোমটিকে ‘অলরেডি লিভিং’ ব্যাকটেরিয়া মাইকোপ্লাজমা ক্যাপ্রিকোলাম এর মধ্যে ট্রান্সপ্ল্যান্ট করলেন। তবে তার আগে তারা একটি বুদ্ধি খাটালেন। তারা ক্যাপ্রিকোলাম এর নিজস্ব ‘রেস্ট্রিকশন এনজাইম’ এর জিনটাকে নক আউট করলেন। কেননা তারা জানতেন যে ব্যাকটেরিয়ার একটি বুদ্ধি আছে। তারা অন্য জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল ঢোকালে সেটাকে তাদের রেস্ট্রিকশন এন্ডোনিউক্লিয়েজ এনজাইম দিয়ে কেটে হজম করে ফেলে।

এরপর যখন ঐ তথাকথিত ‘সিনথেটিক ডিএনএ’কে প্রবেশ করালেন, তখন
উক্ত ব্যাকটেরিয়া কোন প্রকার কথা না বলার সুযোগ পেয়ে সেটাকে নিজের করে নিল। (কেননা কথা বলার ব্যবস্থাতো আগেই বুদ্ধি করে দূর করে দেয়া হয়েছে।) প্রশ্ন হল তারা ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে নিউক্লিউটাইড-টাকে ঢোকালেন কিভাবে? আমার জানা মতে নিউক্লিয়িক এসিড দুভাবে ঢুকতে পারে। এক, যদি কোন ‘ফায’ ভাইরাস ব্যাকেটেরিয়াকে আক্রমণ করে নিজের জেনেটিক মেটেরিয়ালকে ব্যাকটেরিয়ার মেটেরিয়ালের সাথে যুক্ত করে লাইসোজেনিক phase এ চলে যায়। দুই, যদি ব্যাকটেরিয়ার বিল্ট ইন ‘ট্রান্সফরমেশন’ প্রসেস দ্বারা ‘নির্দিষ্ট কতগুলো শর্ত মেইনটেইন করা পরিবেশে’ দ্রবনের নিউক্লিয়িক এসিডকে আপন করে নেয়।

(সিনথেটিক কোষ সংশ্লেষ)

গুগলে একটু সার্চ দিয়ে কী পেলাম জানেন? নিচের Abstract-টি পড়ুন:

“As a step toward propagation of synthetic genomes, we completely replaced the genome of a bacterial cell with one from another species by transplanting a whole genome as naked DNA. Intact genomic DNA from Mycoplasma mycoides large colony (LC), virtually free of protein, was transplanted into Mycoplasma capricolum cells by ‘polyethylene glycol’–mediated ‘transformation’. Cells selected for tetracycline resistance, carried by the M. mycoides LC chromosome, contain the complete donor genome and are free of detectable recipient genomic sequences. These cells that result from genome transplantation are phenotypically identical to the M. mycoides LC donor strain as judged by several criteria.”

চলুন আমরা দেখি এরপর কী হল। ব্যাকটেরিয়া তার ‘নিজস্ব’ পূর্ব থেকেই বিদ্যমান আরএনএ পলিমারেজ ব্যবহার করে মেসেঞ্জার আরএনএ তৈরী করল। এরপর সেই মেসেঞ্জার আরএনএ উক্ত ব্যাকটেরিয়ার ‘নিজস্ব’রাইবোজম এর সাহায্যে প্রোটিন সংশ্লেষ করল। এখন উক্ত সংশ্লেষিত প্রোটিন কিন্তু মাইকোপ্লাজমা ক্যাপ্রিকুলাম এর নয় বরং মাইকোপ্লাজমা মাইকয়েড এর প্রোটিন। (কারণ জিনগুলোত মাইকয়েডেরই) সুতরাং এর যে রেস্ট্রিকশন এন্ডোনিউক্লিয়েজ তা ‘রিসেপটর ব্যাকটেরিয়া’ মাইকোপ্লাজমা ক্যাপ্রিকোলাম এর ডিএনএ কে ফরেইন মনে করে কেটে ফেলল। এবং তৈরী হল তথাকথিক ‘কৃত্রিম কোষ’।

পুরো প্রসেসটা করল একদল ‘ইন্টেলিজেন্ট সায়েন্টিস্ট’। পুরো প্রসেসটাকেই জ্ঞানের আলোকে অলরেডি ‘জীবিত’ ইস্ট ও ব্যাকেটেরিয়ার মধ্যে করা হল, তাদেরই বিল্ট ইন সিস্টেম ব্যাবহার করে। একটি Successful transplantation এর মাধ্যমে আমরা একটি Successful Genetic Engineering দেখতে পেলাম। এ ব্যাপারে নিচের মন্তব্যটি প্রণিধানযোগ্য।

Dr Peter Dearden, Director of Genetics Otago comments:

“This paper represents a very significant step forward in engineering life. Venter’s group have been able to put a fully synthetic genome into a bacterial cell and get it to act as that cell’s genome. The technical skill required to get this to work is immense, and is the culmination of a long series of experiments that pioneered the technology to do this, as well as developing ways to prove that it had been done.”

“The experiment raises an interesting question, has Venter and his team created life? The answer is NO. Venter’s team is relying on the information in a natural genome. While the DNA strand that makes up the genome is synthetic and made in the lab, the information it contains comes from a species of bacterium; and it is the information that is important in a genome. Also Venter’s team needs a bacterial cell, one without a genome, to put their synthetic genome into. This cell, currently, can only be made by a living organism.”

“However, while Venter and his team haven’t created life, they have carried out a remarkable feat, and put us one further step on the road to completely re-engineering organisms for biotechnological purposes.”

এবং আমরা আবারও এই সুনিয়ন্ত্রিত ইন্টেলিজেন্স এর ব্যাবহার দেখে মূল ইন্টেলিজেন্ট স্বত্ত্বা ‘আল্লাহ’ যিনি জীবিত ব্যাকটেরিয়ার প্রাণ দান করেছেন তার পরিচয় পেলাম। এবং জানতে পারলাম কিভাবে তিনি আমাদেরকে সকল সৃষ্টির সেরা বানিয়েছেন।

এছাড়াও এখানে আমরা দেখতে পেলাম যে উক্ত বিজ্ঞানীরা ‘মৃত ব্যাকটেরিয়া’ ব্যাবহার করলেন না। আর পৃথক ভাবে Cell memberane, microtubules, DNA, RNA, Ribosome, DNA polymerase, RNA polymerase, Golgi appearatus, Endolplasmic reticulum তৈরী করে তাদেরকে একত্রিত করে ‘জীবিত’ করা হলে যাকে আমরা ‘কৃত্রিম প্রাণ’ বলতে পারতাম তার ধরা-ছোয়ার কাছেও তো এই প্রাণ কে যেতে দেখলাম না!!!

রেফারেন্স:

১.http://www.jcvi.org/cms/press/press-releases/full-text/article/first-self-replicating-synthetic-bacterial-cell-constructed-by-j-craig-venter-institute-researcher/ 
২. http://www.sciencemediacentre.co.nz/2010/05/21/experts-on-craig-venters-synthetic-biology-breakthrough/ 
৩. Genome Transplantation in Bacteria: Changing One Species to Another.http://www.sciencemag.org/content/317/5838/632.abstract
৪. USMLE step 1 immunology and microbiology (Kaplan Series)
৫. Lippincot’s illustrated Reviews of Biochemistry

আর্কিব্যাকটেরিয়া থেকে আর্কিয়া – বিবর্তনবাদীদের অস্বস্থি

আর্কিয়া হল এক কোষী আনুবীক্ষুণীক জীবের একটি গ্রুপ (ডোমেইন)। এই ডোমেইনের সদস্য হল ব্যাকটেরিয়ার মত এক কোষী অনুজীব যাদের কোন নিউক্লিয়াস ও মেমব্রেন বাউন্ড অর্গ্যানিলিস নেই। প্রথমে উত্ত্বপ্ত ঝর্ণা, লবনাক্ত লেক এর মত কঠিন প্রাকৃতিক পরিবেশে পাওয়া যায় বলে এদেরকে ‘এক্সটারমোফাইল’ বলা হত। পরবর্তীতে এদেরকে মাটি, সমুদ্র, জলাভূমি, এমনকি মানুষের কোলনেও পাওয়া গেছে।

যতদিন পর্যন্ত আর্কিয়নের আণবিক গঠন জানা যায় নি ততদিন এদেরকে বলা হত আর্কিব্যাকটেরিয়া। এদেরকে প্রক্যারিওটের মধ্যে রাখা হয়েছিল। পরে যখন গবেষণার মধ্য দিয়ে দেখা গেল এরা ভিন্ন ধরণের স্ট্রাকচারাল মলিকিউল দিয়ে গঠিত তখন বিজ্ঞানিরা পরলেন বিপাকে। কেননা একদিকে এদের আনুবিক্ষনিক গঠন ব্যাকটেরিয়ার মত আবার অন্য দিকে এদের বেশ কিছু ‘জিন’ ও মেটাবলিক পাথওয়ে ইউক্যারিওটের মত। আবার,  এদেরকে বিশাল সংখ্যায় প্রকৃতিতে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বিজ্ঞানিদের আর্কিয়া নামক একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ডোমেইন-ই তৈরী করতে হল। উইকিপিডিয়াতে কথাগুলো এভাবে আছে:

‘In fact, the Archaea have an independent evolutionary history and show many differences in their biochemistry from other forms of life, and so they are now classified as a separate domain in the three-domain system.’

আসুন দেখি আর্কিয়ার সেল মেমব্রেনে কী পাওয়া গেল:

Membrane structures.

Top, an archaeal phospholipid: 1, isoprene chains; 2, ether linkages; 3, L-glycerolmoiety; 4, phosphate group.

Middle, a bacterial or eukaryotic phospholipid: 5, fatty acid chains; 6, ester linkages; 7,. D-glycerol moiety; 8, phosphate group.

Bottom9, lipid bilayer of bacteria and eukaryotes; 10, lipid monolayer of some archaea.

প্রতিটি কোষের সেল মেমব্রেন গঠিত হয় ফসফোলিপিড বাইলেয়ার দিয়ে। এই ফসফোলিপিড অনু গুলো তৈরী হয় স্যাচুরেটেড ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের লম্বা চেইনের সাথে ফসফাটিডিক এসিড এর এস্টার বন্ধন(-COO-) দিয়ে।

কিন্তু, আর্কিয়নের আনবিক গঠন পরীক্ষা করে দেখা গেল যে, এক্ষেত্রে ফসফোলিপিডের লিপিড অংশটুকু আইসোপ্রিনাইল এলিফেটিক জৈব অনু দিয়ে গঠিত। অর্থাৎ এর লিপিড অংশটুকু তে এমন কিছু জৈব অনু আছে যেগুলোর আবার সাইডব্রানচিং আছে। অন্যদিকে এই অনুগুলো ব্যাকটেরিয়ার মত ফসফাটিডিক এসিডের সাথে এস্টার বন্ধনে যুক্ত না হয়ে ইথার(-CO-) বন্ধন দিয়ে যুক্ত। (ইথার বন্ধন এস্টার বন্ধনের চেয়ে বেশী রেসিলিয়েন্ট)

ফসফাটিডিক এসিডের গঠনে একটি গ্লিসারিন অনুর তিনটি হাইড্রোক্সাইড অনুর মধ্যে একটি হাইড্রোক্সাইড ফসফেট এর সাথে সমযোজী বন্ধনে যুক্ত থাকে। প্রকৃতিতে গ্লিসারিনের দুটি ময়েটি পাওয়া যায়। একটি ডান-হাতী, আরেকটি বা-হাতী। আর্কিয়নের স্টেরিওকেমিস্ট্রি তে দেখা গেছে যে এদের গ্লিসারিন অনুটি প্রোক্যারিয়ট বা ইউক্যারিয়টের ঠিক উল্টো। (মিরর ইমেজ)

এ বিষয়গুলো দেখে বোঝা যায় যে আর্কিয়ন তার সেল মেমব্রেন তৈরীর জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন সেট অব এনজাইম্স ব্যাবহার করে। ভিন্ন এনজাইম অর্থ হল ভিন্ন জেনেটিক কোড।

ফলে বিজ্ঞানীরা, আর্কিয়নকে ব্যাকটেরিয়া বা প্রোটজোয়ার মাঝে না রেখে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ডোমেইনে রাখতে বাধ্য হলেন। এবং যথারীতি বিবর্তনবাদীরা ‘ব্যাকটেরিয়া থেকে আর্কিব্যাকটেরিয়া ও তার থেকে প্রোটোজোয়া’ না বলে তিনটি ডোমেইনের একটি ‘কমন এনসেস্টর’ খুজতে লেগে গেলেন।smiley

আর্কিয়নের খাবারের বৈচিত্রও অন্যরকম। যারা ফটোট্রফ তারা নিজেদের খাদ্য নিজেরাই তৈরী করে সূর্যের আলোর সাহায্যে। যারা লিথোট্রফ তারা খায় অজৈব অনু। আর যারা অর্গেনোট্রফ তার খায় জৈব অনু।

গ্র্যান্ড প্রিজমেটিক স্প্রিং: এখানে থার্মোস্ট্যাবল আর্কিয়া পাওয়া যায়

কিছু আর্কিয়নের প্রজাতি বেঁচে থাকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার উপরে, তার প্রোটিনের কোন প্রকার ডিজেনারেশন ছাড়াই। আবার কিছু পাওয়া গেছে পোলার রিজিয়নে অত্যন্ত ঠান্ডার মধ্যে ফ্রিজিং হওয়া ছাড়াই।  কিছু বাঁচে এক্সট্রিম এসিডিক বা এলক্যালাইন পরিবেশে। কিছু আবার একেবারে কম লবণযুক্ত পানিতে অসমোসিসের শক এবজর্ব করার মত থিক সেল মেমব্রেন নিয়ে বাঁচে।

চিন্তা করুণ এদের প্রজাতির কত ভ্যারাইটি (সুবহানআল্লাহ)। এটা দেখে বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানীরা এখন আর্কিয়নের ডিফারেন্ট ও ইনডিপেন্ডেন্ট ইভোলিউশনারী হিস্ট্রি রচনা করছেন। এজন্য ওনাদের ট্রিতে এখন তিনটি কান্ড।

(চিন্তা করে দেখুন এককোষী অনুজীবের জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ইতিহাস  )

ইভোলিউশনের ‘বিস্ময়’ মানুষ, যারা কিনা মাত্র ১.৫% শতাংশ জেনেটিক মেক আপে এপদের থেকে পৃথক(!), তারা আবার এই আর্কিয়নদের নিজেদের সুবিধাজনক স্থানে ব্যবহার শুরু করে দিয়েছেন(!)

যেমন,  মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া কে ব্যবহার করা হচ্ছে সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এ। আবারPyrococcus furiosus এর মত এক্সটারমোফাইলকে ব্যবহার করা হচ্ছে PCR reaction-এ। কারণ এরা যে ডিএনএ পলিমারেজ তৈরী করে তা থার্মস্ট্যাবল। PCR এ মানুষের ডিএনএ এর ডাবল হেলিক্স এর প্রতিটি হেলিক্স কে পৃথক করার জন্য দ্রবণের তাপমাত্রা ৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠানো হয়। এ তাপমাত্রায় প্রোক্যারিয়ট বা ইউক্যারিয়টের উক্ত এনজাইমটির টারশিয়ারি স্ট্রাকচার হারিয়ে ডি ন্যাচার হয়ে যাবে। অথচ Pyrococcus furiosus এর ডিএনএ পলিমারেজ এনজাইম এ তাপমাত্রায় ডিন্যাচার হয় না। (সুবহানআল্লাহ)

আসলে বিবর্তববাদীদের লক্ষ্য হল তাদের মত করে পৃথিবীর ইতিহাসকে সাজানো। (শুধুমাত্র উইকিপিডিয়া পড়লেও এ বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়) যদিও পৃথিবীর ইতিহাস ও জীব সমূহের গঠন বৈচিত্র এর উল্টোটাই সাক্ষ্য দিয়ে চলেছে।   

“(হে নবী; এ লোকদের জিজ্ঞেস কর) কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া এরা কি নিজেরাই সৃষ্টি হয়েছে? না কি এরা নিজেরাই নিজেদের সৃষ্টিকর্তা? না কি পৃথিবী ও আসমানকে এরাই সৃষ্টি করেছে ? প্রকৃত ব্যাপার হলো, তারা বিশ্বাস করে না।” (সূরা তূর, আয়াত ৩৫,৩৬)

(অর্থাৎ এই লোকেরা আসল ও শ্বাশত কথার প্রতি প্রত্যয় স্থাপন করতেই প্রস্তুত নয়।)

রেফারেন্স:

১) http://en.wikipedia.org/wiki/Archaea

২) http://en.wikipedia.org/wiki/Cell_membrane

৩) Lippincot’s Illustrated Reviews of Biochemistry, Chapter: Protein structure and function

৪) Davidson’s Principles and Practice of Medicine, Chapter: Molecular and genetic factors in disease

৫) Tafhim Ebook

ছবির উৎস: গুগল ও উইকিপিডিয়া

আগের মত নইত এখন

আগের মত নইত এখন

Change হয়েছি বেশ

ভুলগুলো সব শুধরে নিয়ে

Mind হয়েছে Fresh.

এখনতো আর আগের মত

নইকো আমি খোকা,

মন ভোলানো বাত্‌ শুনে হা:

হইনা এখন বোকা।

ঘরের ভিতর ঘাপটি মেরে

এখন কি আর থাকি?

মনের ভিতর আধার আলো

রঙের মাখামাখি।

মাছটি ভাজা উল্টে খেতে

এখনতো বেশ জানি,

সবখানেতে ধোকাবাজি

এ কথাটাও মানি।

মিথ্যা বলার আজব রীতি

এখনতো বেশ চলে,

জনে জনে মিথ্যা কথা

তাইতো সবাই বলে।

চাপাবাজি, ধাপ্পাবাজি

দাবার চালাচালি,

বাইরে দিয়ে সবাই বড়

ভিতরটা তাই খালি।

এসব দেখে এখন আমি

শিখছি অনেক কিছু,

বুঝছি কেন সব জনে হায়

নিচ্ছে টাকার পিছু।

এখন বুঝি কম বিদ্যা

পড়ছে কেন ভারী,

তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে কেন

হচ্ছে মারামারি।

সসতা হাসি আনন্দ কেন্‌

এ যুগে বেশ চলে,

ভালোবাসা নিয়ে কেনো

তরুণরা সব খেলে।

চিন্তা ছেড়ে এখন সবাই

ভোগ বিলাসে বাধা,

গাড়ি বাড়ি টাকা কড়ি

এ কি গোলক ধাধা?

সকল কিছু বুঝে শুনে

ঠিক করেছি তাই,

ভুবনটাকে নতুন করে

গড়তে হবে ভাই।

কে আছো ভাই আমার সাথে,

কে হলে একমত?

দাও বাড়িয়ে হাতগুলো সব,

আজকে নি শপথ।

উচ্ছ্বাস

কালের পরিশ্রান্ত পরিক্রমায়

পরাজিত সংকীর্ণ চিন্তাধারার

চিত্তাকর্ষক চরিত্রগুলোর বিলুপ্তি হোক।

আর, নবজাগরনের নবদ্যুতি প্রদিপ্ত করুক

প্রতিটি মন; মোহিত মনুষ্যে বহিয়া যাক

তারুণ্যের প্রাণসিক্ত দীপ্র উচ্ছ্বাস।

শানিত হোক- মেধার অতলান্ত পরিসর,

বিশ্ব চরাচর, অজস্র কল্যাণের স্রোতধারা-

বহাইয়া দিক,

ধ্বনিত হোক গগন বিদারী মুক্তির সম্ভাস।

সৃষ্টি, স্রষ্টার শ্বাশত নিদর্শন-

আর সত্য সহকারে, করুক আত্মপ্রকাশ;

বিজ্ঞান, বিস্ময়কর শৃংখলার অভিজ্ঞানে,

হোক বিপ্লব; জন্ম নিক আজন্ম বিশ্বাস!

দূর্ণীতিতে প্রথম হওয়াই হোক আমাদের Goal

ওহে, জোড়ছে বাজা ঢোল,

দেখ্‌ দূর্ণীতিবাজ, ঘুষখোরেদের মুখছে পড়ে লোল।

চক্ষু খুলি যখন তখন পাত্তি ওরা দেখে,

আর Party ভোজে দৌড়ে বেড়ায় খানদানী রঙ মেখে।

পকেট মারা বিলাস ওদের ভন্ডামী ধর্ম্ম,

দেখ্‌ মিথ্যাবাদীর সাধু সাজার চলছে কেমন show

বনের রাজার টাকার বালিশ বনে তাহার বাস,

তার- টাকার গাছে হাত দিলে তোর হইবে সর্বনাশ।

কেউ বাগানবাড়ী বানায় বড় হরিণ পুশা সখ,

আর পাথর পেটে বাধল যারা কে দেবে তার হক?

কেউ সুইস ব্যাংকে ভান্ডা’ খুলে Fund-Uv করে বড়,

আর বস্ত্রাভাবে শীতের টোকাই হচ্ছে জড়সর।

দেশের কোথাও মঙ্গা চলে কোথাও বা সন্ত্রাস,

ওদের পেটে কোর্মা পোলাউ, গরীব দুখীর গ্রাস;

শোন এরাই দেশের নেত্রী নেতা এরাই বিজ্ঞজন

আর পাতালতলের মাফিয়াদের এরাই হল ডন।

এদের হাতেই চলছে এদেশ, মুখোশ পড়া সব,

বিশ্বব্যাপী এমন মানুষ, পাওয়া যে দূর্লভ।

তাই জোড়ছে বাজা ঢোল

দূর্ণীতিতে প্রথম হওয়াই হোক আমাদের Goal

শান্তি সুখের গপ্প করা এবার তোরা ভোল।

ওহে! জোড়ছে বাজা ঢোল।

চিন্তা

বাড়ীর পাশের সড়ক ধরে চলছি সেদিন রাতে,

হঠাৎ দেখি পূর্ণিমা চাঁদ চলছে আমার সাথে।

পথের ওপর প্রতিচ্ছায়া করছিল সব খেলা,

বাঁশের ঝাড়ের ধূসর পাতা ধূসর সুখের মেলা।

খেক শিয়াল এক্‌ জানান দিল রাত্রি গভীর বড়,

নিরব সবাই চতুর্দিকে নিদ্রা গভীরতর।

ঝিঁঝির ডাকে নিরবতার রূপের পেলাম দেখা,

আধার রাতের নিরব পথিক চলছি আমি একা।

চলছি যখন ভাবছি তখন ভাবছি অনেক কিছু,

নানান রকম চিন্তাগুলো নিচ্ছিল সব পিছু।

জমাট বাধা চিন্তাগুলো কষ্ট হয়ে এসে,

নয়নকোণে বিন্দু সেজে রিক্ত হয়ে শেষে,

প্রশ্নবানের অগ্নিদাহ নির্বাপিত করে,

মুক্ত হয়ে- তপ্ত হৃদয় সিক্ত হয়ে ঝরে।

বন্দী আমি নিজের ভিতর, কষ্ট মাখা ক্লান্তি,

কোন সে পথে মুক্ত হব দূর করে সব ভ্রান্তি?

হাসছে হাসি, অবিশ্বাসী, সর্বনাশী চিন্তা,

যুক্তি নানা দিচ্ছে হানা, যৌক্তিকতা-হীন তা।

তাইতো এখন মুক্ত করে তীক্ষ্ণ করে দৃষ্টি,

খুঁজছি ফিরে যুক্তি ভীরে স্রষ্টা ও তার সৃষ্টি।

চাঁদটা কেন অমন মধুর মিষ্টি আলো দিচ্ছে?

রাতটা কেন নিরব হয়ে ক্লান্তি মুছে নিচ্ছে?

তারাগুলো এমন কেন মিটিমিটি জ্বলছে?

কক্ষপথে থাকছে কেন নিয়ম মেনে চলছে?

গাছগুলো কেন স্বার্থবিহীন? সুবা’স কেন দেয় সে?

ফুলে ফলে সবুজ পাতায় রঙিন কেন হয় সে?

জমিন কেন উর্বরা হয়? কেন সে দেয় শস্য?

কোন্ সে ঋনে বাঁধা সে যে? কোন্ খানে রহস্য?

মানুষ কেন ক্ষুদার্থ হয় তৃষ্ণা কেন পায় তার?

কে সে দিল এমন বিধান ভাবছি ফিরে বার বার।

এই তো তাকে পাচ্ছি খুজে সকল কিছুর স্রষ্টা,

সৃষ্টিতে তার জ্ঞানের প্রকাশ তিনিই সর্বদ্রষ্টা।

কে কাপুরুষ? সত্যকে যে বুঝতে পেরে নির্ভীক?

মুক্তধারার সীমাবদ্ধ চিন্তাশীলে ধিক্‌ ধিক্‌ ।

তোমরা সবে হা হুতাশ কর চিন্তাশীলের দল ঐ,

মহাবিশ্বের বিধানদাতার বিধান থাকবে নিশ্চয়ই।

তাঁর নিকটেই অবনত হই দেখেছি যে তাঁর সৃষ্টি,

তাঁর মহিমায় বিস্মিত আমি প্রশান্ত মন-দৃষ্টি।

ভাল আছি

ভালো আছি,

যখন রাস্তায় জুতো পড়ে বেরোলে দেখি একজন আমারই মত মানুষ

খালি পায়ে হাটছে…

তখন বুঝতে পারি…

ভালো আছি।

ভালো আছি,

যখন ধানমন্ডি এক নাম্বার রোডে দেখি আমারই মত একজন মানুষ

শুধুই অস্থি:সার মজ্জ্বা…

তখন বুঝতে পারি…

ভালো আছি।

ভালো আছি

যখন ফার্মগেট ফ্লাইওভারে উঠতে গিয়ে দেখি আমারই মত মানুষ

গোদরোগ; হাত পেতে আছে…

তখন বুঝতে পারি…

ভালো আছি।

ভালো আছি

যখন  দাড়িপাকা একজন আমারই মত মানুষকে দেখি

রিকশা চালাচ্ছে….

তখন বুঝতে পারি…

ভালো আছি।

ভালো আছি,

যখন দেখি মা তার শিশুটিকে কাছে রেখে শুয়ে আছে

ফুটপাথে….

তখন বুঝতে পারি…

ভালো আছি।

ভালো আছি,

যখন দেখি ক্ষুধার্ত একটি শিশু…

আমাদের মতই রক্তমাংসের মানুষ..

ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে উচ্ছিষ্ট খাচ্ছে…

তখন….

……..

……..

চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না…

নিজের অস্তিত্বের উপর রাগ হয়

কাউকে হাসতে দেখলে গা জ্বালা করে

রাস্তার গাড়ি গুলো দেখলে রক্ত হয়ে গরম হয়ে উঠে

ক্ষমতাসীন লোভী অমানুষগুলোকে ধিক্কার জানাই

পৃথিবীকে নতুন করে গড়ার স্বপ্ন দেখি

দারিদ্রতামুক্ত আদর্শ সমাজ গড়ার শপথ নেই

আর বুঝতে পারি..

আমার ভালো থাকার একটা উদ্দেশ্য আছে।

লক্ষ্যহীন বর্তমান

পথে ঘাটে মাঠে বাজারে ও হাটে,

দেখেছি অনেক কিছু,

দূর্বল যারা মার খায় তারা

আজও পরে থাকে পিছু;

ধন আছে যার আরও ধন চায়,

যদি বা মঙ্গা চলে,

বুবুক্ষ প্রাণ কঙ্কাল দেহ-

চলে যায়- পদে দলে।

নি:স্প্রাণ দেহ নিশ্চুপ থেকে

সয়ে যায় সব ব্যাথা,

বুদ্ধি বেচা ও’ বুদ্ধি ওয়ালারা

বলে না তাদের কথা।

সব মুখে আজ তালা লেগে আছে

সব হাতে বাধা রশি

সব চোখ বাধা লোভের নেশাতে

চায় সবে বেশি বেশি।

আজ পাই নাকো কবি নজরুল

‘বিদ্রোহী’ ‘রণভেরী’

কাফন পড়ে যে শুয়ে গেছে দেখ,

ফররূখ ‘পাঞ্জেরী’।

রক্ত হয়না তপ্ত আজকে,

অন্যায় পাপ দেখে,

তারূণ্য প্রাণ ঝিম ধরে আছে

নারী-প্রেম-রূপ চেখে।

বিশৃংখলা হতাশার মাঝে

সমাজ রয়েছে ডুবে,

এরই মাঝে বেঁচে মরছে মানুষ

লক্ষ্যহীন যে সবে।

লক্ষ্যহীন এ ভবে।

চির সবুজ স্বাধীনতা

(তার কচি পাপড়ি গুলো আজ আরও লাল,

গাঢ় লাল হয়ে ঝুলে থাকে বেড়িতে…)

কলিটি তখনও ফুল হয়ে ওঠেনি,

বললে, যতন করে রেখে দেবে।
আমিও বন্ধু ভেবে তোমায়,
সরল বিশ্বাসে, রাখতে দিলাম কলিটি
ক’টি মাস!
তখনিই প্রথম করলে গ্রাস-
গাছটিই কেড়ে নিলে,
সেই থেকে শুরু।
তোমার রক্তচোষা রুপ,
আমার শিরাগুলো চুষে খায়, আজও,
চারপাশে মোর হিংস্র বেড়ি পড়িয়ে
আমার ফুল কেড়ে
আমার ফল খেয়ে
তুমি উল্লাস কর?
যে কলিটি তখনও ফুল হয়ে ওঠেনি,
যে গোলাপটি তখনও লাল হয়ে ফুটেনি,
তার কচি পাপড়ি গুলো আজ আরও লাল,
গাঢ় লাল হয়ে ঝুলে থাকে বেড়িতে…
ভেবেছ? তুমি শীত হবে?
সাত কোটি পাতা কেড়ে নেবে?
কিন্তু বন্ধু, যেওনা ভুলে
শীত শেষ, বসন্ত এল বলে
নিয়ে নতুন প্রাণের বারতা ।
আমার শিকড়, তোমার শিকল গলে বেরিয়ে
আমার কচি পাতা, প্রশ্বাসে টেনে নিয়ে তোমার প্রাণ
নি:শ্বাসে দেবে-
স্থির, প্রশান্ত, চির সবুজ স্বাধীনতা।

আমার দুখিনী মা

সেদিন বিকেলে দেখেছিনু নীলে

পাখিদের ঘরে ফেরা

তুমি পাশে ছিলে দুজনায় মিলে

পেয়েছি স্বপ্নে ঘেরা

অনুভুতি এক রাশ,

তুমি নেই পাশে শূন্যতা এসে

আজ সবই ইতিহাস।

ভেবেছ রতন করেছ যতন

দিবা নিশি সারাবেলা,

করেছ স্মরণ মম আমরণ

যায় কি স্মৃতি সে ভোলা?

অন্তরে করে বাস

কেন চলে গেলে মোরে একা ফেলে

সব সুখ করে গ্রাস?

দু:খ পাওনি- যদি বা খাওনি

এক দিন এক রাত,

বুঝতে দাওনি সজল চাওনি

একলা সয়ে আঘাত

নিরবে ফেলেছ শ্বাস,

সেই কথা স্মরে কাঁদি প্রাণ ভরে

কেটে যায় বার মাস।

যদি দেখি ফিরে, অগাধ তিমিরে

নিয়ে সব দিয়ে লাথি

কত ব্যাথা দিনু কত কি চাহিনু

তবু মম করে সাথী

আপন করেছ বুকে।

সব্ ব্যথা ভুলে, নিলে কোলে তুলে

জানি না কোন সে সুখে?

আজ তব পাশে তোমার সকাশে

বসে রইলাম আমি,

আজ তব গোরে কাঁদবো অঝোরে

“হেরী অন্তর্যামী!

ক্ষমা করো মম মা’কে।

তব কৃপা দিয়ে জান্নাতে নিয়ে

চির সুখ দাও তাকে।”

“আজি যদি না-ই সংবাদ পাই

ফেরদৌস পেল মা,

গোরে পড়ে রব, কোথা নাহি যাব

আর কিছু চাই না!

সে যে আমার দুখিনী মা”!!