ফল

বর্তমানে ফলের দোকানগুলোতে সারা বছর জুড়েই প্রায় সব ফল পাওয়া যায়। অথচ, ১৫-২০ বছর আগেও বিষয়টি এরকম ছিলো না। আমাদের ছোটবেলায়, যখন রেফ্রিজারেটর এত সহজলোভ্য ছিল না, মৌসুমের ফল মৌসুমেই খেতে হত। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন অনেক ফলই সংরক্ষণ করা যায়। আবার, বিজ্ঞানীগণ সংকরায়ণ ও জেনেটিক টেকনোলজি ব্যবহার করে বিভিন্ন রকম ফলের জাত তৈরী করছেন যা আকারে ও স্বাদের ভিন্ন। কি চমৎকার তাই না?

প্রতিটি ফলের মূলত দুটি অংশ থাকে। বীজ ও ফলত্বক। ফলের খোসা হল বহিঃত্বক। যে অংশটি আমরা খাই সে হল মধ্যত্বক। বীজের সাথে লেপ্টে থাকে অন্তঃত্বক।  প্রজাতি ভেদে ফলের বিভিন্ন অংশে থাকে বিভিন্ন আকর্ষণীয় রঙ। ফলের বীজ অন্যান্য অংশ থেকে কোন শক্তি গ্রহন করে না। তাহলে, ফলের মধ্যত্বকে নানা ধরনের সুমিষ্ট খাদ্যদ্রব্য থাকার রহস্য কি?



এর উত্তর আমরা সবাই হয়ত জানি। অন্যান্য প্রাণী যখন উদ্ভিদের এই ফলগুলো খেয়ে শক্তি ও ভিটামিন আহরণ করে, তখন সে জেনে না-জেনে বীজ ছড়িয়ে দেয়। সেখান থেকে হয় নতুন গাছ। এভাবে উদ্ভিদ তার জেনেটিক ক্রমধারা বিশ্ব চরাচরে বজায় রাখে। কিন্তু, দাড়ান! উদ্ভিদ কিভাবে জানল বীজের চারপাশের সুমিষ্ট মধ্যত্বক তৈরী করে প্রাণীজগতের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দিতে হবে? কিভাবে সে বুঝল যে চলাফেরা করতে পারে এমন জীব তার বীজকে জমিনে ছড়িয়ে দিতে পারবে?

ফলের মধ্যে বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলের যে সন্নিবেশ থাকে তা অতুলনীয়। এটি একদিকে শক্তি সরবরাহ করে, অন্যদিকে পুষ্টির যোগান দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলের মধ্যে থাকে নানার রকম এন্টাই অক্সিডেন্ট, ফাইটোইস্ট্রোজেন এবং এন্টাই ইনফ্লামেটরী অণু। তাই ডায়েটারী গাইডলাইনগুলো সম্ভব হলে প্লেটের অর্ধেক ফল বা সবজি দিয়ে ভরতে বলেন (1)। গাছগুলো কিভাবে এই কম্পোজিশন ঠিক করল? খুবই অসামান্য এই প্রশ্নটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনাচরণের ব্যস্ততায় হারিয়ে যায়।

ফলের রঙ নিয়েই একবার ভেবে দেখুন না। আমরা জানি, আলো কোন তলে পড়লে উক্ত তলে শোষিত হবার পর যে অংশ প্রতিফলিত হয় তা তলের রঙ হিসেবে দেখা দেয়। সুতরাং, ফলের ত্বকে বিন্যস্ত অনুগুলোকেও এমন হতে হবে যেন তা নিদির্ষ্ট মাত্রার আলোকে প্রতিফলিত করে উপযুক্ত হিউ, টেক্সচার, এবং শার্পনেস তৈরী করতে পারে। একবার কি চিন্তা করেছেন কিভাবে ফুল ও ফলের রঙ এত নিখুঁত মিশ্রন তৈরী করে?

অন্যদিকে ফলের বীজটি হয় এমন যে খোলসে আবৃত অবস্থায় অধিকাংশ প্রানীর খাদ্যনালী তা হজম করতে পারে না। গাছগুলো কি বীজ তৈরীর আগে প্রাণীদেহের ফিজিওলজি নিয়ে রিসার্চ করে নিয়েছে?

ফলবান উদ্ভিদ কি নিজে তার জেনেটিক প্রোগ্রামে উক্ত পরিকল্পনা তৈরী করেছে? কার পরিকল্পনায় ফলের মাধ্যমে এই পারস্পরিক উপকারের আয়োজন? কার ইচ্ছেয় উদ্ভিদ ও প্রানীর এই চমৎকার বাস্তুতন্ত্র (ইকোসিস্টেম)?

“অতএব মানুষ একবার লক্ষ্য করুক তার খাদ্যের দিকে। আমরা (কিভাবে তাদের জন্য) বৃষ্টি বর্ষণ করে থাকি। অতঃপর ভূমিকে ভালভাবে বিদীর্ণ করি। অতঃপর তাতে উৎপন্ন করি খাদ্য-শস্য। আঙ্গুর ও শাক-সবজি, যায়তূন ও খর্জুর, ঘন পল্লবিত উদ্যানরাজি এবং ফল-মূল ও ঘাস-পাতা”। (সুরা আবাসা, আয়াত ২৪ – ৩১)

পাখি

আমি হব সকাল বেলার পাখি

সবার আগে কুসম বাগে

উঠব আমি ডাকি।

(কাজী নজরুল ইসলাম)

ভোরের আকাশে আলোর আভা দেখা দেয়ার পূর্বমূহুর্তে শুরু হয়ে যায় পাখিদের কলকাকলী। কি সুমধুর সেই কণ্ঠ! যুগে যুগে পাখির ডাক মোহিত করেছে কত না কবিদের। জন্ম দিয়েছে কত শত কবিতার! পাখির অপরুপ গঠন এবং শরীরে রঙের মোহনীয় বিন্যাস অনেক শিল্পীর চিত্রকল্পে ঠাই করে নিয়েছে। আবার, পাখি সংক্রান্ত বিজ্ঞান জন্ম দিয়ে একটি স্বতন্ত্র শাখার।

আমরা অধিকাংশ মানুষ হয় পাখিদের বৈজ্ঞানিক গঠন নিয়ে আগ্রহী নই। ওটা বিজ্ঞানীদের কাজ। কিন্তু, জানালের পাশে বসে অপূর্ব সুরে ডাকতে থাকা পাখি নিয়ে কখনও ভাবনার গভীরে হারিয়ে যাই নি এমন মানুষ হয়তো নেই। হয়ত পড়ন্ত বিকেলে কমলাভ-লাল আকাশে নীড়ে ফিরতে থাকা পাখিদের দেখে শিহরিত হয়েছি। ডানা মেলে নির্দ্বিধায় ভেসে বেড়ানো পাখিগুলোকে দেখে হয়েছি ইর্ষান্বিত।

কিন্তু, কখনও কি ভেবে দেখেছি কিভাবে পাখিগুলো বাতাসে ভেসে বেড়ায়? কেন তারা তাদের শরীরের ভারে পড়ে যায় না? কেন এক লাফে ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে উড়ে যেতে পারে অনিমেষে?

বিজ্ঞানীরা আমাদের জন্য কিছু উত্তর বের করে এনছেন। তারা দেখেছেন যে সকল পাখি উড়তে পারে তাদের হাড়গুলো অন্য প্রাণীদের তুলনায় ফাঁপা। ফলে পাখির শরীর হালকা হয়।

অন্যদিকে পাখির ডানার গঠণও উড্ডয়নের জন্য যথাযথ। আপনি কখনও কবুতর বা ময়ুরের পালকের দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকালে দেখবেন প্রতিটি পালকে একটি লম্বা কাঠির মত অংশ (শ্যাফট) থেকে নারকেল গাছের পাতার মত ছোট ছোট লম্বা অনেকগুলো অংশ (বার্ব) বেড়িয়ে গেছে। বার্বগুলো পরস্পর সমান্তরালে থাকে। প্রতিটি বার্ব থেকে সমকোণে আরও ক্ষুদ্র কাঠির মত বার্বিউল বের হয়ে আসে যার মধ্যে আবার কাঁটার মত হুক থাকে। একেকটি বার্বকে বার্বিউল সহ দেখতে চিরুনীর মত লাগে। আপনি যদি দুটি চিরুনীর দাতগুলো একটিকে আরেকটির ভেতর প্রবেশ করান, কি হবে বলুন তো? এরা পরস্পর সংলগ্নভাবে আটকে যাবে। পাখির বার্বগুলোও এভাবে একটির সাথে আরেকটি আটকে থাকে। ফলে তাতে বাতাস প্রবেশ করতে পারে না। কি অসাধারণ তাই না?

পাখির মসৃণ গঠনও পাখির ওড়ার জন্য সাহায্য করে। এমনকি শক্ত জোয়ালের পরিবর্তে চঞ্চুর উপস্থিতি ওড়ার জন্য উপকারী। পাখির বুকের প্রশস্ত হাড় (স্টার্নাম) পাখার মাংসপেশী শক্তভাবে লেগে থাকার জন্য প্রয়োজনীয়।  

পাখি যখন উড্ডয়নের জন্য ডানা ঝাপটাতে থাকে তখন পাখাগুলো একবার নিচে এবং আরেকবার উপরে যায়। নিচে চাপ দেয়ার সময় পাখির প্রশস্ত পাখা উপরিতলের বাতাস নিচের তুলনায় দ্রুত প্রবাহিত হয় । ফলে, পাখার উপরস্থিত বাতাসের চাপ কমে যায় এবং নিচের বাতাসের চাপে পাখি উপরে উঠতে থাকে।

‘নাস্তিকতায় কি’ একটি অন্ধবিশ্বাসের স্থান নেই?

ফিলোসফার অব সায়েন্স কার্ল পপারের সুন্দর একটি কথা আছে-

If a proposal or hypothesis cannot be tested in a way that could potentially falsify the proposal, then the proposer can offer any view without the possibility of its being contradicted. In that case, a proposal can offer any view without being disproved. [1]

একটি প্রস্তাবনা বা প্রকল্পকে যদি কোনোভাবেই পরীক্ষা করে মিথ্যা প্রমাণ করার সুযোগ না থাকে, তাহলে যিনি প্রস্তাবনা করেছেন তিনি কোনো ধরনের বিরোধ ছাড়াই যেকোনো দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করতে পারেন। সেক্ষেত্রে, একটি প্রস্তাবনা কোনো ধরনের ভুল প্রমাণিনিত হওয়ার সম্ভাবনা ছাড়াই যেকোনদৃষ্টিভঙ্গিকে উপস্থাপন করতে পারে।[OM1] 

এই হিসেবে নাস্তিকদের ‘ডিডেটারমিনিস্ট ম্যাটেরিয়ালিস্ট[OM2] ’ মতবাদটি একটি ‘বিশ্বাস-ব্যবস্থা’ তথা এইটা একটা ‘ধর্ম’। নাস্তিকরা এই ডেটারমিনিস্ট ডিটারমিনিস্ট ম্যাটেরিয়ালিস্ট ব্যবস্থার ওপর ‘বিশ্বাস’ স্থাপন করে আল্লাহকে অস্বীকার করছে। লক্ষ করবেন, তাএদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে মাঝেমধ্যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে ওঠে। যেমন : তাএদেরকে ফান্ডামেন্টাল ফোর্সেস অব  ইউনিভার্সের[1] উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করলে বলবে, তা এমনি এমনেই উদ্ভব হয়েছে।  তাদের এই উত্তরটি যেমন তারা (বৈজ্ঞানিক) পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করতে পারবে না, তেমনি তাদের এই উত্তরটিকে ভুলও প্রমাণ করা যাবে না। কারণ, এইটা তো একটা ‘বিশ্বাস’।

প্রশ্ন হলো- ‘বিশ্বাস’ হলে অসুবিধেটা কী? অসুবিধে আছে। অপরদিকে মুসলিমরা বিশ্বাস করে, এই ফোর্সগুলো আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। এবং  মুসলিমরা কখনো দাবি করেনি যে, এটা পরীক্ষা করে প্রমাণ করা যাবে[2]; বরং মুসলিমরা বলছে, ‘এই ফোর্সগুলো আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন’-এই কথাটায় ‘বিশ্বাস’ করাটাই ইসলামের দাবি।

  1. প্রকৃতিতে চারটি মৌলিক শক্তি কার্যরত রয়েছে। যথা: শক্তিশালী পারমাণবিক শক্তি, তড়িৎ চৌম্বকীয় শক্তি, দুর্বল পারমাণবিক শক্তি, মহাকর্ষ বল। এগুলো সামান্যতম কম-বেশি হলেও এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হত না।তাই এগুলো কোথা এলো এবং কেন ঠিক এমন অনুপাতেই হলো যা দ্বারা মহাবিশ্ব রূপ পেল সেটা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আরো জানতে দেখুন ‘অ্যান আপিল টু কমনসেন্স’, জবাব-১, সমকালীন প্রকাশন।—সম্পাদক
  2. এখানে শুধু প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ব্যবহার করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বোঝানো হচ্ছে। কারণ আলোচ্য শক্তিগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে সৃষ্টি দেখাতে হলে আগে আল্লাহর অস্তিত্ব থাকা আবশ্যক। কিন্তু এটা যাচাই করার মাধ্যম বিজ্ঞান নয়। কারণ বিজ্ঞান পদ্ধতিগত প্রকৃতিবাদের দর্শনের উপর দাঁড়ানো। অর্থাৎ বস্তুজগতের ভিতরে তার ব্যাখ্যা সীমাবদ্ধ। এর বাইরের কোনোকিছু তার ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে না। বিজ্ঞান সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স থেকে জানা যায়, ‘বিজ্ঞান হলো প্রাকৃতিক জগৎ সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের একটি উপায়। প্রাকৃতিক জগৎ সম্পর্কে জাগতিক ব্যাখ্যা প্রদানেই এটি সীমাবদ্ধ। অতিপ্রাকৃত কিছু আছে কি না, সে বিষয়ে বিজ্ঞান কিছুই বলতে পারে না। স্রষ্টা আছে কি নেই, এ প্রশ্নের ব্যাপারে বিজ্ঞান নীরব।’ আল্লাহর অস্তিত্ব যেহেতু বস্তুগত জগতের বাইরের বিষয় তাই এ ব্যাপারে বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কোনো মাধ্যম

যেমন পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে :

ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ (2) الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ (3)

‘এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই৷ এটি হিদায়াত সেই মুত্তাকিদের জন্য, যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, সালাত কায়েম করে এবং আমার প্রদত্ত রিজিক হতে ব্যয় করে।’[[3]]

কিন্তু সমস্যা হলো, অধিকাংশতথাকথিত নাস্তিক্যবাদীকরা তাদের  ‘বিশ্বাস’-এরকে বেলায় বিজ্ঞানকে মুখোশ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে একটা সায়েন্টেফিক ডিসগাইজ দিতে চাচ্ছে। তারা নিজেদের ‘বিশ্বাসকে বৈধতা দিতে গিয়ে বিজ্ঞানেরনকে অপব্যবহার করছে। এমনভাবে তারা বিজ্ঞানের  কথা বলছে, যেন তাদের এই ‘বিশ্বাস’ প্রকৃতপক্ষে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নিরেট সত্য। অথচ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তাদের এই ‘বিশ্বাসগুলো প্রমাণ করা যায় না।

ঈশ্বরকে মেনে নেওয়ার দাবিটা সম্পূর্ণ বিশ্বাসের। সুতরাং, যাদের মেনে নেওয়া প্রমাণের ওপর নির্ভরশীল, যেমন সৈকত চৌধুরী নামক একজন নাস্তিক রাহাত খানকে প্রতিমন্তব্য করতে গিয়ে বলেছিলেন :

‘কিন্তু কেউ যদি ঈশ্বরকে এখানে নিয়ে আসেন, তবে তিনি তা প্রমাণ করুক…’

তাদেরই বরং ‘ঈশ্বর নেই’ এইটা প্রমাণ করা জরুরি। কেননা, বিজ্ঞানের দাবি তো তারাই তুলছে।

এই তথাকথিত শ্রেণির নাস্তিকরা যে চরম পর্যায়ের অন্ধবিশ্বাসী গোঁড়া তার প্রমাণ বিভিন্নভাবে পাবেন। যেমন : বিবর্তনের ব্যাপারে বলতে গিয়ে যদি বলেন, ‘অসংখ্য’ মধ্যবর্তী প্রজাতির ফসিল কোথায়? তারা বলবে, প্যালিওন্টোলজি তথা জীবাশ্মবিজ্ঞান এখনো শুরুর পর্যায়ে, ভবিষ্যতে একদিন না একদিন আবিষ্কার হবে। অথচ গত দেড়শ বছরে ১০০ মিলিয়নের ওপর ফসিল আবিষ্কৃত হয়েছে, যাতে একটিও মধ্যবর্তী প্রজাতি নেই। [2]

হিসেবে বিজ্ঞান নিজেই গণ্য করে না। তাই আস্তিক্যবাদ বা নাস্তিক্যবাদ কোনোটির পক্ষেই বিজ্ঞান রায় দেবে না। তাই কখনোই বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার দ্বারা আল্লাহর অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব প্রমাণ করা যাবে না। এরকম দাবিও অমূলক আলোচ্য ফোর্সগুলো মুসলিমদের জন্য যেহেতু আল্লাহর অস্তিত্বের উপর নির্ভরশীল, তাই তারা স্বাভাবিকভাবেই বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে মানদণ্ড মনে করেনি।  কিন্তু এর বিপরীতে নাস্তিক্যবাদীদের অধিকাংশই নিজেদের বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাকে মানদণ্ড জ্ঞান করে  যা একেবারেই অমূলক; বিস্তারিত জানতে দেখুন- ‘বিজ্ঞান ও বিশ্বাস-যা আমাদের অজানা’, জবাব-১ সম্পাদক [1] সুরা আল-বাকারা, আয়াত : ২-৩

সুপরিচিত ব্রিটিশ বিবর্তনবাদী ও জীবাশ্মশ্রমবিজ্ঞানী (প্যালেওন্টোলোজিস্ট) কলিন প্যাটারসন এই বিষয়ে সরল স্বীকারোক্তি দেন-

No one has ever produced a species by mechanisms of natural selection. No one has ever got near it and most of the current argument in neo-Darwinism is about this question.

Natural selection is not a mechanism that produces anything new and thus causes species to change, nor does it work miracles such as causing a reptile to gradually turn into a bird. In the words of the well-known biologist D’Arcy Wentworth Thompson, ‘… we are entitled… to see in natural selection an inexorable force, whose function is not to create but to destroy—to weed, to prune, to cut down and to cast into the fire.’  [3]

প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেউ এখনো পর্যন্ত কোনো প্রজাতি তৈরিরী করতে পারেনি। কেউ কখনো প্রজাতি তৈরিরীর কাছেও যায়নি এবং নব্য-ডারউইনবাদের অধিকাংশ যুক্তি এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই।

প্রাকৃতিক নির্বাচন এমন কোনো প্রক্রিয়া না, যা নতুন কিছু তৈরী তৈরি করে এবং এইভাবে প্রজাতির পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে, এই প্রক্রিয়া একটি সরিসৃপকে পাখিতে পরিণত করতে পারে না। ডি’আরসি ওয়েন্টওর্থ থমসনের ভাষায় ‘.. আমরা প্রাকৃতিক নির্বাচনকে দেখি একটি নির্দয় শক্তি হিসেবে, যার কাজ তৈরিরী করা না; বরং ধ্বংস করা – উপড়ে ফেলা, ছাটাই করা, কেটে ফেলা এবং আগুনে নিক্ষেপ করা।

কেন ফসিল রেকর্ডে বিবর্তনের কোনো প্রমাণ নেই, বিখ্যাত নব্যনিউ ডারউইনবাদী প্যালেওন্টোলজিস্ট স্টিভেন জে. গোল্ড সেইটা এভাবে ব্যাখ্যা করেন-

The history of most fossil species includes two features particularly inconsistent with gradualism: 1. Stasis. Most species exhibit no directional change during their tenure on earth.  They appear in the fossil record looking much the same as when they disappear; morphological change is usually limited and directionless. 2. Sudden appearance. In any local area, a species does not arise gradually by the steady transformation of its ancestors; it appears all at once and fully formed.  [4]

জীবাশ্মের ইতিহাস থেকে দেখা যায় দুটি জিনিস গ্রাজুয়েলিজমের (তথা ধীরগতির পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের)-এর সাথে অসংলগ্ন। ১. স্থিরতা (স্ট্যাসিস): অধিকাংশ প্রজাতি পৃথিবীতে উৎপত্তি থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কোনো দিকে পরিবর্তন দেখায় না। জীবাশ্ম রেকর্ডে প্রজাতির আগমন এবং বিদায় হওয়ায় কোনো প্রকার পরিবর্তন নাই। আকৃতিগত পরিবর্তন যা হয় তা সীমিত এবং দিকহীন। ২. হঠাৎ আগমন (সাডেন অ্যাপেয়ারেন্স): যে কোন একটি জায়গায় একটি প্রজাতি তাদের পূববর্তী প্রজাতির ধীর পরিবর্তনের মাধ্যমে আবির্ভূত হয় না। প্রজাতি হঠাৎ এবং সম্পূর্ণ শারীরিক গঠন নিয়ে আবির্ভূত হয়।

অন্যদিকে প্যালিওন্টোলজিস্ট নাইল্স এলড্রেজ জীবাশ্ম রেকর্ড দেখে বিবর্তনবাদীদের হতাশা ব্যক্ত করেন এভাবে :

No wonder paleontologists shied away from evolution for so long. It seems never to happen.  Assiduous collecting up cliff faces yields zigzags, minor oscillations, and the very occasional slight accumulation of change over millions of years, at a rate too slow to really account for all the prodigious change that has occurred in evolutionary history.  [5]

বিবর্তন থেকে দীর্ঘকাল ধরে জীবাশ্মবিদদের পশ্চাদপসরণ কোনো বিস্ময়কর ব্যাপার নয়। (অবস্থা এমন যে) এটি কখনো ঘটিতব্য বলে মনে হয় না। এটি কোনো বিস্ময়কর ব্যপার নয় যে, দীর্ঘদিন ধরে জীবাশ্মবিদগণ বিবর্তনবাদ থেকে লজ্জা পেয়ে বেরিয়ে গেছেন। কখনো তারা ফিরে আসবেন বলেও মনে হয় না। স্তরে স্তরে পাহাড় তৈরী হওয়ার ফলে সৃষ্ট জিগজ্যাগ, ছোটোখাটো উঁচুনিচু দোলন এবং লক্ষ লক্ষ বছর ধরে সামান্য পরিবর্তন জমতে জমতে যে রূপান্তর হয়, তা বিবর্তনীয় ইতিহাসে ঘটে যাওয়া বিস্ময়কর পরিবর্তনসমূহের জন্য কোনভাবেই যথেষ্ট নয়। [OM3] 

সুতরাং বলা যায়, তাদের দাবি স্রেফ ধারণা বা বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে আছে।টির ভিত্তিই হল ‘অন্ধবিশ্বাস’।

তারা বলবে, মিউটেশনের মধ্য দিয়ে বিবর্তন হচ্ছে। অথচ অসংখ্য পরীক্ষাগারে কোটি কোটি মিউটেশনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত একটা উদাহরণও নেই যে, মিউটেশনের মাধ্যমেই একটা ব্যাকটেরিয়া প্রজাতি আরেকটা ব্যাকটেরিয়া প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে। তুলনামূলক বড়ো প্রাণীদের ব্যাপারে তারা বলবে, যেহেতু বিবর্তন হতে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর পার হতে হয়, ফলে আমাদের পক্ষে এই বিবর্তন পুরোপুরি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়া। (যে কথাটা লুকিয়ে আছে : ‘বিবর্তন’ বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হলে কী হবে? আমরা তো ‘বিশ্বাস’ করে ধরেই নিয়েছি, বিবর্তন হয়েছেঅর্থাৎ এমন ধারণা যা এখনো প্রমাণিত নয়) কিন্তু ব্যাকটেরিয়ার ব্যাপারটাতে তাদের গল্পটা কী? ব্যাকটেরিয়ার ‘জেনারেশন টাইম’[4] তো খুব দ্রুত। (ব্যাকটেরিয়ার একটি নির্দিষ্ট কলোনি যে সময়ে সংখ্যায় ঠিক দ্বিগুণ হয়ে যায়, তাকে বলে জেনারেশন টাইম) পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানের জগতে খুব পরিচিত ব্যাকটেরিয়া E. coli এর জেনারেশন টাইম মাত্র বিশ মিনিট। অর্থাৎ, যদি E. coli এর একটি ১০০ ব্যাকটেরিয়ার কলোনি নেওয়া হয়, তবে বিশ মিনিটের মধ্যে সেটি ২০০ ব্যাকটেরিয়ার কলোনিতে পরিণত হবে। [6]

এখন পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া নিয়ে ডারউইনবাদী বিবর্তনের সবচেয়ে বড়ো পরীক্ষাটি করেছেন বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানী রিচার্ড লেনস্কি। সেই ১৯৮৮ সাল থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে, এখনো চলছে। ২০১২ সাল নাগাদ E. coli-এর ৫০০০০ জেনারেশন পার হয়েছে। এইগুলো নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে, প্রতি ৫০০ জেনারেশন পর E. coli-এর স্ট্রেইনগুলো নিয়ে সেগুলোর জেনেটিক স্টাডি করা হয়েছে; অবাক করা বিষয়- এখনো পর্যন্ত E. coli, E. coli-ই রয়ে গিয়েছে! [7]

তারপরও এই পরীক্ষা চালু রাখা হয়েছে, এই ‘বিশ্বাসে’ যে ডারউইনবাদ একদিন না একদিন প্রমাণিত হবেই হবে। অথচ মিউটেশনের মধ্য দিয়ে আদৌ  কি কোনো ডারউইনবাদী বিবর্তন সম্ভব? বিজ্ঞানিনীরা খুব ভালোমতোই জানেন, প্রাণীকোষে কোনো ‘জেনেটিক ইরর’ হয়ে গেলে সেইটাকে সংশোধনের জন্য প্রাণীকোষেই খুব পরিকল্পিত সিস্টেম তৈরি করা আছে। ফলে কোনো মিউটেশন হয়ে তা পরবর্তী জেনারেশনে সঞ্চালিত হওয়ার সম্ভাবনা একদমই নগণ্য আসল কথা হলো- অধিকাংশ জিনের মিউটেশনের হার প্রতি ১,০০,০০০-এ একটা এবং যে মিউটেশনগুলো হয়, তার অধিকাংশই ক্ষতিকারক। [8]

এরপরও যদি ধরে নেওয়া হয়, মিউটেশন উপকারী হতে পারে; তারপরও মিউটেশনের মাধ্যমে জিন পরিবর্তন হয়ে একটি নতুন বৈশিষ্ট্য অভিযোজন হতে যে পরিমাণ সময় দরকার, তা বিবর্তনবাদীদের কল্পনার জন্যও অনেক অনেক বেশি। অন্তত এম.আই.টির প্রফেসর মুরে এডেন ও বিবর্তনবাদী জর্জ গেইলর্ড সিম্পসনের হিসেব থেকে সেইটাই বোঝা যায় :

In a paper titled ‘The  Inadequacy of Neo-Darwinian Evolution As a Scientific Theory,’ Professor  Murray Eden from the MIT (Massachusetts Institute of Technology)  Faculty of Electrical Engineering showed that if it required a mere six  mutations to bring about an adaptive change, this would occur by chance  only once in a billion years – while, if two dozen genes were involved,  it would require 10,000,000,000 years, which is much longer than the age  of the Earth. [9]

The evolutionist George G. Simpson has performed a calculation regarding the mutation claim in question. He admitted that in a community of 100 million individuals, which could hypothetically produce a new generation every day, a positive outcome from mutations would only take place once every 274 billion years. That number is many times greater than the age of the Earth, estimated to be at 4.5 billion years old. These, of course, are all calculations assuming that mutations have a positive effect on the generations which gave rise to them, and on subsequent generations; but no such assumption applies in the real world. [10]

‘বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে নব্যডারউইনবাদের অসম্পূর্ণতা’The  Inadequacy of Neo-Darwinian Evolution As a Scientific Theory’ (বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে নব্যডারউইনবাদের অসম্পূর্ণতা) শিরোনামের একটি প্রবন্ধে এম.আই.টি.-এর ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির প্রসেফর মুরে এডেন দেখিয়েছেন, অভিযোজনের জন্য একটি পরিবর্তন সংঘটিত হতে ৬ টি মিউটেশন দরকার, যা প্রতি এক বিলিয়ন বছরে একবার হতে পারে। সুতরাং, দুই ডজন জিনে পরিবর্তনের জন্য লাগবে ১০,০০০,০০০,০০০ বছর, যা পৃথিবীর বয়সের তুলনায় অনেক বেশি।

বিবর্তনবাদী জর্জ জি সিম্পসন একটি হিসেব করে দেখিয়েছেন যে, আনুমানিক প্রতি দিনবছর একটি নতুন জেনারেশন তৈরিরী করতে পারে এমন ১০০ মিলিয়ন ব্যক্তির একটি কমিউনিটিতে, একটি ধনাত্মক ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য দরকার ২৭৪ বিলিয়ন বছর। এটা পৃথিবীর বয়সের (প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর) চেয়েও বহুগুণ বেশি। ৪.৫ বিলিয়ন বছর বয়সের তুলনায় অনেকগুণ বেশি। তাও এই হিসেব এটা ধরে নিয়ে যে, মিউটেশন সব জেনারেশনে ধনাত্মক ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে। কিন্তু বাস্তব জগতে এই ধারণা কার্যকর নয়।র কোন ভিত্তি নেই (অর্থাৎ মিউটেশন সব সময় ধনাত্মক ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে না)।   

তবুও নাস্তিকরা কেন মিউটেশনকে বিবর্তন ঘটার ‘প্রভু’ মনে করারে হয়? উত্তর সেই ‘অন্ধবিশ্বাস’; এ ছাড়া বিলিয়ন বছরের ব্যবধানে কোনো জীব মিউটেশনের মধ্য দিয়ে অন্য একটি জীবে পরিবর্তিত হয়নি- তার  প্রমাণ হলো ৩.৫ বিলিয়ন বছর পুরোনো আর্কিয়া (বা আর্কিব্যাকটেরিয়া); বিলিয়ন বছর আগেও যেমন তাদের উত্তপ্ত ঝরনায় পাওয়া যেতো, আজও তাদের গ্র্যান্ড প্রিজমেটিক লেকের মতো উত্তপ্ত জলাশয়ে পাওয়া যায়। [11]

বিবর্তনবাদীদের তথাকথিত প্রথম কোষটি কীভাবে উদ্ভব হলো- সেই বিষয়ে তো এখনও প্রশ্ন করাই হয়নি। ‘কোষ’ বললে বিষয়টি অনেক জটিল হয়ে যায়, ১৫০ অ্যামাইনো এসিডে ভরা একটা মাঝারি আকৃতির প্রোটিন কীভাবে যে দৈবাৎ দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে এলো, সেটাই না হয় ব্যাখ্যা করুক।

অথচ ডগলাস এক্স যে বিষয়গুলো এই সম্ভাব্যতা কমাতে পারে, সেগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে (অর্থাৎ, বাদ দিয়ে) ১৫০টি অ্যামাইনো এসিডের একটি প্রোটিন তৈরি দুর্ঘটনাক্রমে হওয়ার সম্ভাব্যতাকে হিসেব করেছেন- ১০ এর পরে ১৬৪টি শূন্য বসালে যে সংখ্যাটি হয় (তথা ১০১৬৪[OM4] ) এর মধ্যে ১ বার। বিল ডেম্বসকি হিসেব করে দেখিয়েছেন, আমরা যে মহাবিশ্ব দেখতে পাই, সেখানে ১০৮০টি এলিমেন্টারি পার্টিকল আছে; বিগব্যাং থেকে এখন পর্যন্ত ১০১৬ সেকেণ্ড পার হয়েছে [OM5] এবং দুটো বস্তুর মধ্যে যেকোনো বিক্রিয়া প্ল্যাঙ্কটাইম ১০-৪৩ সেকেন্ডের চেয়ে কম সময়ে হতে পারে না। এই সবগুলো সংখ্যাকে একত্রিত করলে দাঁড়ায় ১০১৩৯[OM6] ; অর্থাৎ, মহাবিশ্বের বয়স, মহাবিশ্বের গাঠনিক এলিমেন্টারি পার্টিকেলের সংখ্যা এবং পার্টিকেলের মধ্যে বিক্রিয়া হতে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সময়কে একত্রে বিবেচনার পরও উপর্যুক্ত প্রোটিনটি তৈরি হওয়ার সম্ভাব্যতা ট্রিলিয়ন ভাগ পিছিয়ে পড়ে। সহজ কথায় উক্ত প্রোটিনটি তৈরি হতে এখন বিলিয়ন ট্রিলিয়ন সেকেন্ড (১০২৫[OM7]  বা ১০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ বা দশ লক্ষ কোটি কোটি সেকেণ্ড বা একত্রিশ কোটি বিলিয়ন বছর) অতিবাহিত হতে হবে। [12] [13]

কিন্তু নাস্তিকরা দেখবেন বলে উঠবে, ‘সম্ভাব্যতার বিষয়টা আপনি বোঝেনই নাই’।; তাদের এমন উত্তরের কারণ হলো তাদের বিশ্বাস। কারণ, নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস অনুযায়ী যেকোনো অসম্ভব ঘটনা, যেটা ঘটানোর জন্য পুরো সুপরিকল্পিত কাঠামো, ডিজাইন ও জ্ঞান দরকার, তা কেবল  দুর্ঘটনাক্রমে (by chance) সম্ভব বলে তারা স্রেফ অন্ধভাবে বিশ্বাস করে নিয়েছে হয়। (!)

একজন নাস্তিকের সাথে ফেসবুকে আমার আলাপ হচ্ছিলো বিবর্তনবাদ নিয়ে, শেষ পর্যায়ে এসে তার মন্তব্যটি এরকম :

Abdullah Saeed Khan আপনি যতগুলো প্রাণীর নাম নিলেন, তাদের টিকে থাকার ইতিহাস খুঁজতে গেলে তো খবর আছে। আপনিই বরং নিয়েন, তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে ‘survival the fittest’ নিয়ামকটাই হয়তো এদের টিকে থাকার পেছনে কারণ। আর আমি যা দেখছি, আপনি বিবর্তনের সমালোচনা করছেন, কিন্তু refuse অস্বীকার করতেছেন না। বিজ্ঞানের মূল মজা তো যোগ্য সমালোচনায়। যাই হোক আজ আলোচনা করে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।[OM8] 

সুতরাং, কাদের বিশ্বাসটি যে আসলে ‘অন্ধবিশ্বাস’, সেটা আর বলা লাগে না, স্পষ্টই বোঝা যায়। পরিশেষে নাস্তিকতা নামক দের অন্ধ বিশ্বাসের আরেকটা উদাহরণ টেনে লেখাটি শেষ করছি :

In this philosophy (Determinist Materialist), observable matter is the only reality and everything, including thought, will, and feeling, can be explained only in terms of matter and the natural laws that govern matter. The eminent scientist Francis Crick (codiscoverer of the genetic molecular code) states this view elegantly (Crick and Koch, 1998): ‘You, your joys and your sorrows, your memories and your ambitions, your sense of personal identity and free will, are in fact no more than the behavior of a vast assembly of nerve cells and their associated molecules. As Lewis Carroll’s Alice might have phrased it: ‘You’re nothing but a pack of neurons (nerve cells).’’ According to this determinist view, your awareness of yourself and the world around you is simply the by-product or epiphenomenon of neuronal activities, with no independent ability to affect or control neuronal activities.

 Is this position a ‘proven’ scientific theory? I shall state, straight out, that this determinist materialist view is a ‘belief system’; it is not a scientific theory that has been verified by direct tests.  It is true that scientific discoveries have increasingly produced powerful evidence for the ways in which mental abilities, and even the nature of one’s personality, are dependent on, and can be controlled by, specific structures and functions of the brain. However, the nonphysical nature of subjective awareness including the feelings of spirituality, creativity, conscious will, and imagination, is not describable or explainable directly by the physical evidence alone. [15]

ডিডেটারমিনিস্ট ম্যাটেরিয়ালিস্ট দর্শন অনুযায়ী, দৃশ্যমান বস্তুই একমাত্র বাস্তবতা; চিন্তা, ইচ্ছা, অনুভূতির মতো বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা শুধু বস্তু এবং বস্তুর নিয়ন্ত্রক প্রাকৃতিক নিয়ম দিয়েইঅনুযায়ী প্রদান করতে হবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। বিখ্যাত বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিক (জেনেটিক আনবিক কোডের সহ-আবিস্কারক) এই বিষয়টিকে সুন্দরভাবে বলেছেন এইভাবে– ‘আপনি, আপনার আনন্দ ও বেদনা, আপনার স্মৃতি ও আকাঙ্ক্ষা, আপনার সত্তা নিয়ে অনুভূতি ও স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি- সব অসংখ্য স্নায়ুকোষের বিশাল সমাবেশ ও তৎসংশ্লিষ্ট অণুগুলোর কর্মযজ্ঞ ছাড়া আর কিছু নয়। লুলাউইস ক্যারোলের এলিস হয়তো এভাবে বলতো, ‘তুমি একটি স্নায়ুকোষের প্যাকেট ছাড়া কিছুই নও’। এই ডিডেটারমিনিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী আপনার নিজ এবং চারপাশের জগৎ সম্পর্কে আপনার যে চেতনা, তা নিউরনের কার্যক্রমের ফল বা এপিফেনোমেনোন নিউরনের ওপর যার আপনার চেতনার নিজস্ব কোনো স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ শক্তি বা ভূমিকা নেই।

এটি কি প্রমাণিত কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব? আমি সরলভাবে বলব, এইআমার সরল উত্তর হলো, ডেডিটারমিনিস্ট ম্যাটেরিয়ালিস্টষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি এক ধরনের ‘বিশ্বাস ব্যবস্থা’রীতি’; এটি কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নয়, যা সরাসরি পরীক্ষা করে প্রমাণ করা গেছে। এটি সত্য যে, নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কাস্কারগুলো মস্তিস্কের সুনির্দিষ্ট গঠন এবং কার্যক্রম কীভাবে মানসিক সক্ষমতা ও পারসোনালিটি ব্যক্তিত্ব বাড়ায়, সেই বিষয়ে দিনে দিনে শক্ত প্রমাণ জড়ো করছে। [OM9] তবুও আধ্যাত্মিকতা, সৃজনশীলতা, সচেতন ইচ্ছা ও কল্পনাশক্তি জাতীয় অনুভূতি সংক্রান্ত যে ব্যক্তিক চেতনা তার অবস্তুগত প্রকৃতিকে কোনো সরাসরি শুধু বস্তুগত প্রমাণ দিয়ে ব্যাখ্যা বা বর্ণনা করা আসলেই যায় সম্ভব নয়া। 

তথ্যসূত্র :

[1] Benjamin Libet, Mind Time: The Temporal Factors in Consciousness; page: 3

[3] Colin Patterson, ‘Cladistics’, Brian Leek ile Röportaj, Peter Franz, 4 Mart 1982, BBC;

Lee M. Spetner, Not By Chance, Shattering the Modern Theory of Evolution, The Judaica Press Inc., 1997, s. 175 Retrieved

আরো দেখুন :

Divine Action and Natural Selection: Science, Faith, and Evolution bBy Joseph Seckbach

https://is.gd/XjVuTf

The Modern Creation Trilogy bBy Henry Madison Morris, John David Morris

https://is.gd/LT7yrC

[4] Stephen J. Gould, Evolution’s Erratic Pace, Natural History, Vol. 86, No. 5, May 1977, p. 14 [Emphasis added]

[5]  Niles Eldredge, Reinventing Darwin: The Great Evolutionary Debate, [1995], phoenix: London, 1996, p. 9; Retrieved from: http://www.living-fossils.com/2_1.php

[6]  http://textbookofbacteriology.net/growth_3.html

[7]  http://myxo.css.msu.edu/ecoli/overview.html

[8] William A. Dembski, Jonathan Wells, The Design in Life, Page: 44   

[9] Gordon Rattray Taylor, The Great Evolution Mystery, Sphere Books Ltd., 1984, s. 4

[10] Nicholas Comninellis, Creative Defense, Evidence Against Evolution, Master Books, 2001, s. 81

[11]  আর্কিব্যাকটেরিয়া থেকে আর্কিঁয়া: বিবর্তনবাদীদের অস্বস্তি– ডা. আব্দুল্লাহ সাঈদ খান (সদালাপ ব্লগ)

https://is.gd/GPdBeG

[12] Stephen C. Meyer, Signature in The Cell;

[13] পাভেল আহমেদ, বিবর্তনবাদ ও তার সমস্যা– ৭ : সম্ভাবনার অসম্ভাব্যতা ২ বিবর্তনবাদ ও তার সমস্যা– ৮ : সম্ভাবনার অসম্ভাব্যতা ৩ (ছক্কা বনাম প্রোটিন) (সদালাপ ব্লগ)

https://is.gd/I1GLcE[15] Benjamin Libet, Mind Time: The Temporal Factors in Consciousness; page: 4,5 [Emphasis added]


[1] প্রকৃতিতে চারটি মৌলিক শক্তি কার্যরত রয়েছে। যথা: শক্তিশালী পারমাণবিক শক্তি, তড়িৎ চৌম্বকীয় শক্তি, দুর্বল পারমাণবিক শক্তি, মহাকর্ষ বল। এগুলো সামান্যতম কম-বেশি হলেও এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হত না। তাই এগুলো কোথা এলো এবং কেন ঠিক এমন অনুপাতেই হলো যা দ্বারা মহাবিশ্ব রূপ পেল সেটা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আরো জানতে দেখুন অ্যান আপিল টু কমনসেন্স’, জবাব-১, সমকালীন প্রকাশন।— সম্পাদক

[2] এখানে শুধু প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ব্যবহার করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বোঝানো হচ্ছে। কারণ আলোচ্য শক্তিগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে সৃষ্টি দেখাতে হলে আগে আল্লাহর অস্তিত্ব থাকা আবশ্যক। কিন্তু এটা যাচাই করার মাধ্যম বিজ্ঞান নয়কারণ বিজ্ঞান পদ্ধতিগত প্রকৃতিবাদের দর্শনের উপর দাঁড়ানো। অর্থাৎ বস্তুজগতের ভিতরে তার ব্যাখ্যা সীমাবদ্ধ। এর বাইরের কোনোকিছু তার ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে না। বিজ্ঞান সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স থেকে জানা যায়, ‘বিজ্ঞান হলো প্রাকৃতিক জগৎ সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের একটি উপায়। প্রাকৃতিক জগৎ সম্পর্কে জাগতিক ব্যাখ্যা প্রদানেই এটি সীমাবদ্ধ। অতিপ্রাকৃত কিছু আছে কি না, সে বিষয়ে বিজ্ঞান কিছুই বলতে পারে না। স্রষ্টা আছে কি নেই, এ প্রশ্নের ব্যাপারে বিজ্ঞান নীরব। আল্লাহর অস্তিত্ব যেহেতু বস্তুগত জগতের বাইরের বিষয় তাই এ ব্যাপারে বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কোনো মাধ্যম হিসেবে বিজ্ঞান নিজেই গণ্য করে না। তাই আস্তিক্যবাদ বা নাস্তিক্যবাদ কোনোটির পক্ষেই বিজ্ঞান রায় দেবে না। তাই কখনোই বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার দ্বারা আল্লাহর অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব প্রমাণ করা যাবে না। এরকম দাবিও অমূলক আলোচ্য ফোর্সগুলো মুসলিমদের জন্য যেহেতু আল্লাহর অস্তিত্বের উপর নির্ভরশীল, তাই তারা স্বাভাবিকভাবেই বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে মানদণ্ড মনে করেনি।  কিন্তু এর বিপরীতে নাস্তিক্যবাদীদের অধিকাংশই নিজেদের বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাকে মানদণ্ড জ্ঞান করে  যা একেবারেই অমূলক; বিস্তারিত জানতে দেখুন- ‘বিজ্ঞান ও বিশ্বাস-যা আমাদের অজানা’, জবাব-১ সম্পাদক

[3] সুরা আল-বাকারা, আয়াত : ২-৩

[4] ব্যাকটেরিয়ার নির্দিষ্ট একটি কলোনি যে সময়ে সংখ্যায় দ্বিগুণ হয়ে যায়, তাকে বলে জেনারেশন টাইম।


 [OM1]বক্তব্য আরেকটু ভালোভাবে উপস্থাপন করা যায় কিনা?

 [OM2]ডিটারমিনিস্ট ম্যাটেরিয়ালিস্ট মতবাদের সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞা টীকাকারে যুক্ত করতে হবে।

বক্তব্য  [OM3]স্পষ্ট নয়। অনুবাদ আরো সাবলীল হলে ভালো হয়।

 [OM4]সংখ্যাটা সম্ভবত ঠিক নেই। পুনরায় যাচাই করতে হবে। 

 [OM5]বিগব্যাং থেকে এখন পর্যন্ত কীভাবে মাত্র ১০১৬ সেকেণ্ড পার হয়?

 [OM6] [OM6] [OM6]সংখ্যাটা সম্ভবত ঠিক নেই। পুনরায় যাচাই করতে হবে। 

 [OM7] [OM7] [OM7]সংখ্যাটা সম্ভবত ঠিক নেই। পুনরায় যাচাই করতে হবে। 

 [OM8]প্রেক্ষাপট না থাকায় বোঝা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেক্ষাপট থাকলে বোঝা সহজ হত।

 [OM9]বক্তব্য স্পষ্ট নয়, অনুবাদেও অসম্পূর্ণতা আছে সম্ভবত।

ডারউইনবাদ যেভাবে টিকে আছে

কয়েকদিন আগে লিখেছিলাম যে ডারউইনবাদী প্যারাডাইম সমাপ্তির পথে। ডারউইনবাদী বিজ্ঞানীরা বিবর্তনের ডারউইনবাদী ব্যাখ্যার বিকল্প পথগুলোর ব্যাপারে ‘সেমেলওয়াইজ রিফ্লেক্স’-এ আছে। অর্থাৎ যেহেতু বিকল্পগুলো ডারউইনবাদী প্যারাডাইম-কে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, ফলে এর অনুসারীরা ওগুলো মেনে নিতে পারছে না।

ডারউইনবাদীতার ক্ষেত্রটি অন্যান্য বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব থেকে একটু ভিন্ন। কারণ, এটি জৈবজগতের একটি বস্তুবাদী ব্যাখ্যা দাড় করানোর চেষ্টা করে। ফলে, এর উপর দাড়িয়ে আছে বস্তুবাদ, ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদ এবং নাস্তিকতাবাদ-এর ভিত্তি। যে তত্ত্বটির ওপর এতগুলো ‘ইজম’ তথা ‘মতবাদ’-এর ভিত্তি দাড়িয়ে আছে, সেটির বিরুদ্ধে যখন কোন প্রমাণ আসে তখন শুধু তত্ত্বটি আক্রান্ত হয় না সাথে অন্যান্য মতবাদগুলোও দুর্বল হয়ে যায়। এ কারণে আপনি পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক মহলে ডারউইনবাদের বিপরীত কোন ব্যাখ্যা গ্রহণ করলে আপনাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অপদস্থ করা হবে। বিজ্ঞানের মহলে আপনার অবদান যা-ই হোক না কেন। এমনকি আপনার নামে যদি অনেকগুলো প্রজাতির নামকরণও হয়ে থাকে, আপনাকে তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে অপমান করবে- প্রথমে কোন সুনির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে আপনার গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অপসারিত করবে এবং তারপর আপনার অবদানকে অপপ্রচার এবং তথ্য লুকানোর মাধ্যমে অস্বীকার করবে।       

জিন ডুপ্লিকেশন

আমার লেখার “স্বয়ংক্রিয় ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় বিবর্তনের বিষয়টি তখনই পুরোপুরি মানা যেতে পারে যখন আপনি মলিকিউলার লেভেলে ‘বড় আকারের’ জেনেটিক ইনফরমেশন যোগ হওয়ার প্রসেস দেখাতে পারবেন” কথাটির প্রেক্ষিতে একজন নিচের লিংকটি দিয়েছেন যার শিরোনাম:
“Gene Genesis: Scientists Observe New Genes Evolving from Mutated Copies”

https://www.scientificamerican.com/article/gene-genesis-scientists/

এবং বলেছেন যে, র‍্যানডম মিউটেশনের মাধ্যমে নাকি অহরহ নতুন জিন তৈরী হচ্ছে। তার দাবী কেন সঠিক নয় তার উত্তরটি আমি কমেন্টে দিলেও সবার জানার জন্য এখানে সংযোজন করা প্রয়োজন মনে করছি-

এই লিংকে জিন ডুপ্লিকেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। জিন ডুপ্লিকেশনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত সর্বচ্চো যেটা করা গিয়েছে তা হলো নিম্নরুপ- ধরুন, একটি ব্যাকটেরিয়াতে অলরেডি এক্সিসটিং এনজাইম, যার ডুয়েল ফাংশন আছে, এর মধ্যে একটি ফাংশন ‘ক’ শক্তিশালী এবং একটি ফাংশন ‘খ’ দুর্বল। উক্ত ব্যাকটেরিয়াতে ‘খ’ ফাংশন সম্পাদনকারী শক্তিশালী এনজাইমটি না থাকলে যেটা হবে (প্রয়োজনীয় প্রতিকূল পরিবেশে যেখানে উক্ত ‘খ’ এনজাইমটির ফাংশন খুবই জরুরী) প্রথম এনজাইমটির জিন ডুপ্লিকেটেড হবে এবং ডুপ্লিকেটেড কপিতে মিউটেশনের মাধ্যমে ‘খ’ ফাংশনটি এক পর্যায়ে শক্তিশালী হয়ে যাবে।

এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়-

এক, আগে মনে করা হতো এই প্রক্রিয়াটি পুরোপুির র‍্যানডম। কিন্তু, জেমন শ্যাপিরো দেখাচ্ছেন যে, ব্যাকটেরিয়ার ভিতর কঠিন পরিবেশে এডাপ্ট করার জন্য কতগুলো প্রক্রিয়া ইনবিল্ট আছে। ফলে ব্যাকটেরিয়া নতুন কোন পরিবেশে এলে তার ‘নির্দিষ্ট’ কিছু জেনেটিক রিজিওনে ‘র‍্যানডম মিউটেশন জেনারেটিং’ প্রক্রিয়া এক্টিভেট করে। যেন অভিনব পরিবেশে সে খাপ খাওয়াতে পারে। অর্থাৎ, আদতে এই প্রক্রিয়াটি র‍্যানডম না। বিষয়টার সাথে ভার্টিব্রেট জীবের ইমিউন সিস্টেমের পদ্ধতিগত মিল আছে।

দুই, জিন ডুপ্লিকেশনের মাধ্যমে যদি এমন কোন এডাপটেশনের প্রয়োজন হয় যেখানে দুই বা ততোধিক অ্যামাইনো এসিড দরকার হবে এবং ফলে একাধিক পয়েন্ট মিউটেশনের দরকার হবে, সেক্ষেত্রে উক্ত এডাপটেশনটি জিনোমে ফিক্স হতে যে পরিমাণ অর্গানিজম দরকার তার সংখ্যা অনেক বেশী ১০^৯। কার্যত, ব্যাকটেরিয়া জাতীয় এককোষী প্রাণী ছাড়া এ ধরনের মিউটেশন সম্ভব নয়। (১)

তৃতীয়ত, ক্লোরোকুইন রেজিসেন্ট-এর প্রাকটিকেল উদাহরণ হতে দেখা যায় যে যেখানে দুটো প্রোটিন প্রোটিন ইন্টারেকশন সাইটে সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশন লাগে সেখানে মিনিমাম অর্গানিজম দরকার ১০^২০। (২)

চতুর্থত, একটি এনজাইমকে ভিন্ন ফাংশনের একটি এনজাইমে পরিণত করতে দরকার ৭ বা ততোধিক সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশন। (৩)

অর্থাৎ, আপনার আর্টিকেল থেকে র‍্যানডম প্রক্রিয়ায় নতুন তথ্য যোগ অহরহ হয় বলে যে দাবী করলেন এটা এক্সাজারেশন। বরং, র‍্যানডম প্রক্রিয়ায় নতুন তথ্য যোগ হওয়া সম্ভব হলেও তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্গানিজম আপনি পৃথিবীর ইতিহাসে খুজে পাবেন না। বস্তুত, চারটি সাইমুলটেনিয়াস মিউটেশনের জন্য দরকার ১০^৪০ টি ব্যাকটেরিয়া (অর্গানিজম)। যা পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো ব্যাকটেরিয়া তৈরী হয়েছে তার সমান। (২)

1. http://onlinelibrary.wiley.com/doi/10.1110/ps.04802904/full

2. Michael Behe, Edge of evolution

3. http://bio-complexity.org/…/view/BIO-C.2011.1/BIO-C.2011.1

চিকুনগুনিয়া

চিকুনগুনিয়ার অন্যতম লক্ষণ হল জ্বর, অস্থি:সন্ধি তথা গিড়ায় ব্যাথা, স্কিন র‍্যাশ, মাংসপেশীর ব্যাথা, মাথাব্যাথা, চুলকানী এবং শরীর ফুলে যাওয়া। সাধারনত চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত হলে জ্বর দিয়ে লক্ষণ শুরু হয়, অতঃপর অন্যান্য লক্ষণগুলো আসে। তবে, আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে  ৭০%-এর বেশী রোগীর সমস্যা শুরু হয়েছে জ্বরের আগে গিড়া ব্যাথা দিয়ে । পরবর্তীতে শতভাগ রোগীই ব্যাথায় আক্রান্ত হন। পঁচাশি শতাংশ রোগী তীব্র ব্যাথার কথা বলেন।

আমাদের গবেষণায়, ব্যাথার তীব্রতা পরিমাপ করতে নিউমেরিকাল পেইন রেটিং-স্কেল নামক একটি স্বীকৃত পরিমাপক ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্কেল অনুযায়ী রোগীকে ব্যাথার তীব্রতা অনুপাতে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত যে কোন একটি নাম্বার দিতে বলা হয়। ব্যাথার তীব্রতা কম হলে ১ এবং ব্যতার তীব্রতা বেশী হলে ১০। এই স্কেল অনুসারে আমাদের গবেষণায় রোগীদের গড় ব্যাথার তীব্রতা ছিলো ৮.৩।

প্রায় ৫৬% রোগীর চার-এর অধিক গিড়া আক্রান্ত পাওয়া গিয়েছে এবং প্রায় ৪০% রোগীর ক্ষেত্রে আক্রান্ত গিড়ার সংখ্যা ছিলো দুই থেকে চারটি। দেহের বিভিন্ন গিড়ার মধ্যে পায়ের গোড়ালী এবং হাতের কবজির সন্ধি আক্রান্ত হয়েছিলো সবচেয়ে বেশী।  রোগী ব্যাথার জন্য প্রায় ৭০% রোগীর দৈনন্দিন কাজে ব্যঘাত ঘটে এবং প্রায় ৬৬ শতাংশ রোগীর ঘুমে ব্যঘাত ঘটে।

আমাদের গবেষণায় বয়স, লিঙ্গ এবং পূর্বাপর শারিরীক অবস্থার উপর ভিত্তি করে রোগের লক্ষনের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। পনের বছরের নিচের বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দুই থেকে চারটি গিড়ায় ব্যাথা এবং স্কিন র‍্যাশ বেশী দেখা যায়। অন্যদিকে ষাটোর্ধ্ব রোগীদের ক্ষেত্রে গিড়া ফুলে যাওয়া ছিলো অন্যতম প্রধান লক্ষণ। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যথার তীব্রতা অভিযোগ ছিল সবচেয়ে বেশী।

এ গবেষণা দেখা গেছে চিকুনগুনিয়ার কারণে ৯৫% রোগী বিছানায় পড়ে আছেন। আক্রান্ত রোগী কাজে যেতে পারছেন না, ঘরের কাজ করতে পারছেন না এবং বাচ্চার স্কুলে যেতে পারছে না। প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী ১০ দিন পর্যন্ত কোন কাজই ঠিক মত করতে পারেন নি। এ মহামারীতে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশী চাপে ছিলো তারা যাদের মাসিক আয় ২৫০০০ টাকার কম।  এমন কি দীর্ঘদিন কাজে অনুপস্থিত থাকার কারণে কারও কারও ক্ষেত্রে চাকুরী চলে যাওয়ার ঘটনাও পাওয়া গেছে।

বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত ও বহুল ব্যবহৃত প্রশ্নমালা দিয়ে জীবনযাত্রার মান যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে যাদের বয়স ৬০-এর বেশী, যাদের মাসিক আয় ৫০০০০ টাকার বেশী, চাকুরীজীবি এবং ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান অন্যদের তুলনায় বেশী কমে গিয়েছিলো। 

আমাদের এ গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশের চিকুনগুনিয়ার প্রধান লক্ষনগুলো চিহ্নিত করেছি এবং জীবনযাত্রার উপর এর প্রভাব নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক অধ্যয়ন করেছি। আমরা আশা করছি এই গবেষণা জাতীয় পর্যায়ে চিকুনগুনিয়া রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধে নীতিনির্ধারনে সহায়ক হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দালিলীক অবদান হিসেবে থেকে যাবে।         

ঢাকা শহরে গতবছর চিকুনগুনিয়ার বড় আকারের মহামারী হয়ে গেল। এ সময়  আমরা চেষ্টা করেছি চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীদের লক্ষণ, জীবনযাত্রার মান( Quality of Life) এবং রোগাক্রান্ত থাকার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি নিয়ে গবেষণা করার।  আমাদের গবেষণায় আমরা ১৩২৬ জন চিকুনগুনিয়া রোগী থেকে তথ্য নিয়েছি। যেটি আমাদের জানামতে বিশ্বে এ সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় কাজ।

চিকুনগুনিয়ার অন্যতম লক্ষণ হল জ্বর, অস্থি:সন্ধি তথা গিড়ায় ব্যাথা, স্কিন র‍্যাশ, মাংসপেশীর ব্যাথা, মাথাব্যাথা, চুলকানী এবং শরীর ফুলে যাওয়া। সাধারনত চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত হলে জ্বর দিয়ে লক্ষণ শুরু হয়, অতঃপর অন্যান্য লক্ষণগুলো আসে। তবে, আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে  ৭০%-এর বেশী রোগীর সমস্যা শুরু হয়েছে জ্বরের আগে গিড়া ব্যাথা দিয়ে । পরবর্তীতে শতভাগ রোগীই ব্যাথায় আক্রান্ত হন। পঁচাশি শতাংশ রোগী তীব্র ব্যাথার কথা বলেন।

আমাদের গবেষণায়, ব্যাথার তীব্রতা পরিমাপ করতে নিউমেরিকাল পেইন রেটিং-স্কেল নামক একটি স্বীকৃত পরিমাপক ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্কেল অনুযায়ী রোগীকে ব্যাথার তীব্রতা অনুপাতে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত যে কোন একটি নাম্বার দিতে বলা হয়। ব্যাথার তীব্রতা কম হলে ১ এবং ব্যতার তীব্রতা বেশী হলে ১০। এই স্কেল অনুসারে আমাদের গবেষণায় রোগীদের গড় ব্যাথার তীব্রতা ছিলো ৮.৩।

প্রায় ৫৬% রোগীর চার-এর অধিক গিড়া আক্রান্ত পাওয়া গিয়েছে এবং প্রায় ৪০% রোগীর ক্ষেত্রে আক্রান্ত গিড়ার সংখ্যা ছিলো দুই থেকে চারটি। দেহের বিভিন্ন গিড়ার মধ্যে পায়ের গোড়ালী এবং হাতের কবজির সন্ধি আক্রান্ত হয়েছিলো সবচেয়ে বেশী।  রোগী ব্যাথার জন্য প্রায় ৭০% রোগীর দৈনন্দিন কাজে ব্যঘাত ঘটে এবং প্রায় ৬৬ শতাংশ রোগীর ঘুমে ব্যঘাত ঘটে।

আমাদের গবেষণায় বয়স, লিঙ্গ এবং পূর্বাপর শারিরীক অবস্থার উপর ভিত্তি করে রোগের লক্ষনের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। পনের বছরের নিচের বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দুই থেকে চারটি গিড়ায় ব্যাথা এবং স্কিন র‍্যাশ বেশী দেখা যায়। অন্যদিকে ষাটোর্ধ্ব রোগীদের ক্ষেত্রে গিড়া ফুলে যাওয়া ছিলো অন্যতম প্রধান লক্ষণ। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যথার তীব্রতা অভিযোগ ছিল সবচেয়ে বেশী।

এ গবেষণা দেখা গেছে চিকুনগুনিয়ার কারণে ৯৫% রোগী বিছানায় পড়ে আছেন। আক্রান্ত রোগী কাজে যেতে পারছেন না, ঘরের কাজ করতে পারছেন না এবং বাচ্চার স্কুলে যেতে পারছে না। প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী ১০ দিন পর্যন্ত কোন কাজই ঠিক মত করতে পারেন নি। এ মহামারীতে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশী চাপে ছিলো তারা যাদের মাসিক আয় ২৫০০০ টাকার কম।  এমন কি দীর্ঘদিন কাজে অনুপস্থিত থাকার কারণে কারও কারও ক্ষেত্রে চাকুরী চলে যাওয়ার ঘটনাও পাওয়া গেছে।

বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত ও বহুল ব্যবহৃত প্রশ্নমালা দিয়ে জীবনযাত্রার মান যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে যাদের বয়স ৬০-এর বেশী, যাদের মাসিক আয় ৫০০০০ টাকার বেশী, চাকুরীজীবি এবং ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান অন্যদের তুলনায় বেশী কমে গিয়েছিলো। 

আমাদের এ গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশের চিকুনগুনিয়ার প্রধান লক্ষনগুলো চিহ্নিত করেছি এবং জীবনযাত্রার উপর এর প্রভাব নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক অধ্যয়ন করেছি। আমরা আশা করছি এই গবেষণা জাতীয় পর্যায়ে চিকুনগুনিয়া রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধে নীতিনির্ধারনে সহায়ক হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দালিলীক অবদান হিসেবে থেকে যাবে।         

গড়েছে ওরা মিথ্যাচারের বাদশাহি

প্রিয় কাশ্মীর,

গড়েছে ওরা মিথ্যাচারের বাদশাহি,

জনগন আজ গোলাম ওদের ‍শক্তিহীন,

ওদের কথায় চললে তোমার নিত্য ঈদ।

আযাদী তোমার আত্মত্যাগের রক্তে আঁকা

এটাই সত্য শিক্ষা ইতিহাসের কাছে।      

‘ক্লোজ-আপ’ জাহান্নামের কাছে আসার গল্প

“শয়তান তোমাদেরকে অভাব অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বেশী অনুগ্রহের ওয়াদা করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সুবিজ্ঞ”।–সূরা বাক্বারা: ২৬৮

কোন জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসার জন্য শয়তান ধীরে ধীরে উক্ত জাতির মধ্যে অশ্লীলতার বিস্তৃতি ঘটায়। শয়তার এই কাজটা করে ধীরে ধীরে। একটু মনোযোগ দিয়ে চিন্তা করলেই দেখা যাবে, মুসলিম জাতিতে অশ্লীলতা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য শয়তান কি পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। শয়তান প্রথমে নারী ও পুরুষকে পর্দার বাইরে নিয়ে এসেছে। এটা ছিলো বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে। এরপর, রেডিও ও টেলিভিশন জমানার আগে অসংখ্য গল্প, উপন্যাস, নাটক, সাহিত্যে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যবর্তী কথাবার্তা ও হাত ধরাধরি না করে গল্প করাকে (তথা প্রেম) স্বাভাবিক হিসেবে সাবকনসাস মাইন্ডে ঢুকিয়ে দিয়েছে।

রেডিও ও টেলিভিশন আসার পরে প্রথম উপরোক্ত ধরনের বিষয়গুলোকে ‘শোনা’ ও ‘দেখা’ এ দুটো পদ্ধতিতে মগজে প্রথিত করেছে। তার ফলে আমাদের বিংশ শতাব্দীর শেষের দশ ও একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে এমন একদল তরুণ তৈরী হয়েছে যারা উপরোক্ত ধরনের প্রেমকে ‘হারাম’ মনে করত না (আল্লাহ আমাকে এ ধরনের নিকৃষ্ট ধারণা থেকে হেফাজত করুন)।

প্রথম প্রথম শয়তানের স্ট্র্যাটেজি ছিলো আকারে ইঙ্গিতে অশ্লীলতার বীজ মন-মগজে রোপন করা। কিন্তু কিন্তু, সময়ের সাথে যখন শয়তানের ধোকায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে শয়তান অশ্লীলতা ছড়ানোর স্ট্র্যাটেজিকে আরও বেশী প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে।

টেলিভিশন কেন্দ্রিক মিডিয়া ইন্ড্রাস্ট্রিতেও প্রথম প্রথম সরাসরি অশ্লীলতা প্রবেশ করানো হয় নি। ধীরে ধীরে মননকে কলুষিত করে অশ্লীলতা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রথম প্রথম প্রেমের নামে আপাতদৃষ্টিতে অশ্লীল নয় এমন দৃশ্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে বিভিন্ন সিনেমা নাটকে একটা দুটো স্ন্যাপশট হলেও নগ্নতা ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে পর্ণের দিকে ধাবিত করার প্রথম সুড়সুড়ি। এভাবে প্রথমে তৈরী হয়েছে এমন একদল তরুণ যারা বিনোদনের নামে পর্ণ দেখাকে প্রথমে গোপনে এবং পরে প্রকাশ্যে স্বাভাবিক বানিয়ে ফেলেছে। এছাড়াও তৈরী হয়েছে কিছু পর্ণ এডিক্ট। 

এখন চলছে শয়তানের দাবার শেষ চাল। যৌনতাকে ছড়িয়ে দেয়ার কাজে শয়তানের দোসররা এখন অনেকটাই প্রকাশ্য। ‘ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প’ এবং ‘দেখিয়ে দাও অদেখা তোমায়’ অশ্লীলতাকে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে ছড়িয়ে দেয়ার প্রথম ধাপ।

একটা গুনাহ যতক্ষণ গোপন থাকে ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর ফিরে আসার সুযোগ থাকে। কিন্তু, গুনাহটি যখন প্রকাশ্যে স্বাভাবিকভাবে প্রচলিত হয়ে পরে তখন সেটি উক্ত আক্রান্ত জাতিতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে উপস্থিত করে।

যারা আল্লাহর কৃপায় যারা এখনও ‘জাহান্নামের কাছে আসার গল্পের’ সম্পর্কে সচেতন, উক্ত সচেতনতা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা তাদের কর্তব্য।


দাঁত মাজার জন্য ইউলিভারের ক্লোজ-আপ বা অন্য টুথপেস্ট ব্যবহার করতেই হবে, এমন কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আপনি পাবেন না। তাহলে কেন তাদের পণ্য কিনছেন। 

তারা প্রকাশ্যে ‘অশ্লীলতার’ আদেশ দিচ্ছে দেখেও কি আপনাদের কাছে বিষয়টি ক্লিয়ার নয় যে এরা কার দাসত্ব করছে। আপনি কি টাকা দিয়ে শয়তানের কাছ থেকে পণ্য কিনবেন?  প্রশ্নই উঠে না।

এছাড়া আর কি করতে পারেন? হ্যা, ‘কাছের আসার গল্প’ ও ‘দেখিয়ে দাও অদেখা তোমায়’ জাতীয় ইঙ্গিতপূর্ণ অশ্লীলতার আহবানের বিভ্রান্তি নিয়ে ফেসবুকের নিউজফিডকে ‘অনেকদিন’ সরব রাখতে পারেন। আবার বলছি, ‘অনেকদিন’ এবং ‘অনেকে’ মিলে সরব থাকতে পারেন। আল্লাহ আমাদের শয়তানের ফিৎনা থেকে রক্ষা করুন।

কোরআনের প্রাণী মশা (১)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা মানুষকে তার বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ব্যপারে বার বার তাকিদ দিয়েছেন। একই সাথে তিনি মানুষের অন্তরে স্রষ্টা সম্পর্কে ফিতরাহ দিয়েছেন। বুদ্ভিমত্তা ও ফিতরাহ ব্যবহার করে একজন মানুষ তার স্রষ্টাকে সহজেই চিনতে পারে।  এ কারণে তিনি কোন কোন জায়গায় মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করতে বলেছেন। কোথাও মানুষের নিজের গঠনের ব্যপারে চিন্তা করতে বলেছেন। আবার কোন জায়গায় ছোট-বড় বিভিন্ন প্রানীর উপমা টেনে উক্ত প্রাণীর সৃষ্টিশৈলী নিয়ে গবেষণা করে সত্য সম্পর্কে সিদ্ধান্তে উপনিত হতে উৎসাহিত করেছেন। কোরআনের শুরুর দিকে সুরা বাকার ২৬ নং আয়াতে আল্লাহ এরকম একটি দৃষ্টান্ত নিয়ে বলছেন-

“অবশ্য আল্লাহ লজ্জা করেন না মশা বা তার চেয়ে তুচ্ছ কোন জিনিসের দৃষ্টান্ত দিতে ৷ যারা সত্য গ্রহণকারী তারা এ দৃষ্টান্ত –উপমাগুলো দেখে জানতে পারে এগুলো সত্য, এগুলো এসেছে তাদের রবেরই পক্ষ থেকে, আর যারা (সত্যকে) গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয় তারা এগুলো শুনে বলতে থাকে , এ ধরনের দৃষ্টান্ত –উপমার সাথে আল্লাহর কী সম্পর্ক ?” (১)

চলুন মশার গঠন নিয়ে ভেবে দেখি এতে আমাদের জন্য কি চিন্তার উপাদান আছে।

দৈনন্দিন জীবনকে দূর্বিষহ করার জন্য মশার মত ছোট প্রাণীই যথেষ্ট। আর্থোপোডা গোত্রের এই ক্ষুদ্র প্রাণীটি ডেংগু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি প্রাণঘাতী রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে। ফলে আমাদের প্রতি সন্ধ্যার রূটিন হয় মশা থেকে নিস্তার পাওয়ার উপায় উপকরণ ব্যবহার করা। অধিকন্তু, প্রতিদিনের অসংখ্য অগুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোকে আমাদের সাবকনসাশ ব্রেইন চমৎকারভাবে ইগনোর করতে পারে। এ কারণে আমরা মনে করি মশা নিয়ে আলাদা ভাবে ভাববার কি আছে?

কিন্তু, বিজ্ঞানীরা সবকিছু ভিন্নভাবে চিন্তা করেন। তারা মশার গঠন ও জীবনপ্রণালী থেকে শুরু করে মশা কিভাবে রক্তচুষে এবং কিভাবে উড়ে বেড়ায় তা নিয়েও বিস্তর গবেষণা করেছেন।

যে কোন উড্ডয়নশীল প্রাণীর জন্য একটা বড় বিষয় হল তার এরোডাইন্যামিক্স। অর্থাৎ কিভাবে সে মাটিতে বসা থেকে উড়তে শুরু করে, কিভাবে সে বাতাসে উড়ে বেড়ায় এবং কিভাবে সে উড়ন্ত অবস্থা থেকে অবতরণ করে। আমরা জানি পাখিদের উড়ার কৌশল নিয়ে গবেষণা করতে করতেই উড়োজাহাজের আবিস্কার হয়েছে।

পাখির তুলনায় কিটপতঙ্গের উড্ডয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল কিটপতঙ্গ পাখা ঝাপটে বাতাসে এক জায়গায় স্থির থাকতে পারে। এ ধরনের উড়াকে বলে হোভারিং। এর বাইরেও সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া, পাশে যাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের উড্ডয়ন আছে যা আমরা প্রতিদিনই দেখি।

আমাদের হাত পা নাড়াচারা করতে যেমন অনেকগুলো সুনির্দিষ্ট মাংসপেশী লাগে। কীটপতঙ্গের ক্ষেত্রেও উড়ার জন্য মাংসপেশী প্রয়োজন। কিছু কিছু কীটের পাখার জন্য আলাদা মাংসপেশী আছে এবং কিছু কীটের ক্ষেত্রে উক্ত মাংসপেশী থাকে বুকে। এদের ক্ষেত্রে পাখাদ্বয় পিঠে লাগানো থাকে। মাংসপেশীর সংকোচন ও প্রসারনের মাধ্যমে বক্ষপিঞ্জরের সংকোচন ও প্রসারন হয়। ফলে সংযুক্ত পাখাদ্বয় ঝাপটাতে থাকে। (২) আমাদের আলোচ্য মশা শেষের উল্লিখিত পদ্ধতিতে উড়ে বেড়ায়।

মশার প্রায় স্বচ্ছ ও ক্ষুদ্র দুটো পাখা আছে, যা সুনির্দিষ্ট ব্যাসাল গঠন দিয়ে থোরাক্সের সাথে লাগানো থাকে। সুনির্দিষ্ট বললাম এই জন্য যে অন্যান্য কীটপতঙ্গের তুলনায় মশার পাখার বেজ এ গঠনের পার্থক্য আছে (৩)।

কীট পতঙ্গ উড়ার সময় পাখা সামনে পিছনে এবং উপরে নিচে এমনভাবে ঝাপটায় যাতে পাখার সামনের দিকের এজ (Edge) বাতাসে এক ধরনের ভর্টেক্স তৈরী করে। যাকে বলা হয় লিডিং এজ ভর্টেক্স। এই ভর্টেক্স পাখা ও শরীরের নিচে গিয়ে কীটের শরীরকে বাতাসে ভাসিয়ে রাখে। কিন্তু, মশা পাখা এমনভাবে ঝাপটায় যে পাখার সামনে লিডিং এজ ভর্টেক্স এর পাশাপাশি তৈরী হয় পাখার পিছনের দিকে ট্রেইলিং এজ ভর্টেক্স (৪)।

ফলে মশাকে ভেসে থাকতে অনেক দ্রুত পাখা ঝাপটাতে হয়। একটা মশা প্রতি সেকেন্ডে ১৬৫ থেকে ৫৮৭ বার পাখা ঝাপটাতে পারে (৩)। এই কারণেই মশা কানের কাছে ঘুরতে থাকলে আমরা ভো ভো শব্দ পাই ও বিরক্ত হই। মশার পাখার শব্দ আমাদের কাছে বিরক্তিকর লাগলেও মশার নিজের কোর্টশিপের (স্ত্রী-মিলন) জন্য এটি জরুরী। এমনকি কোর্টশিপের সময় মশার তার পাখার ঝাপটানোর ফ্রিকোয়েন্সী নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে শব্দের টোন পরিবর্তন করে (৫)।

প্রিয় পাঠক এবার চিন্তা করে দেখুন একটা মশাকে শুধুমাত্র উড়ার সক্ষমতা দেয়ার জন্য কতগুলো জিনিস জানতে হবে- বাতাসের ফিজিক্স, মশার পাখার বিস্তৃতি কতটুকু হওয়া যাবে, পাখা ঝাপটানোর স্পিড কতটুকু হতে হবে, পাখার ঝাপটানোর দিক কেমন হওয়া চাই, পাখার ঝাপটানোর জন্য থোরাক্সের মাংসপেশী কতটুকু হতে হবে, প্রতিটা ঝাপটার সময় পাখায় অক্সিজেন সরবারহ নিশ্চিত করতে হবে, ইত্যাদি।  এই ভাবে যেতে থাকলে লিস্টটা অনেক বড় হবে। এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল সবগুলো গঠন ও ফাংশন একটার সাথে আরেকটা অতপ্রত ভাবে জড়িত হয়ে একটি কমপ্লেক্স সিস্টেম দাড় করিয়েছে।

পরিস্কারভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে এই গঠনের পিছনের সুনির্দিষ্ট ডিজাইন ও পরিকল্পনা আছে। কোন এলপাতাড়ি ও অন্ধ প্রক্রিয়ায় মশার উড্ডয়ন ক্ষমতা উদ্ভব হয়নি।

একটা মশা মানুষকে কুপোকাত করে দিতে পারে। অথচ, আমরা নিজেরা আল্লাহর দেয়া জ্ঞান অর্জনের যোগ্যতা ব্যবহার করে আমাদের স্রষ্টার নিয়মাতকে অস্বীকার করি। নিজেদের সীমাবদ্ধতাকে ভুলে যাই।

আমাদের কি একটু বোধোদয় হবে না। 

 ১. আল কোরআন, সুরা বাকারা, আয়াত-২৬

২. Wikipedia. Insect Flight [Internet]. 2019 [cited 2019 Nov 6]. Available from: https://en.wikipedia.org/wiki/Insect_flight

৩. Snodgrass RE. The Anatomical Life of The Mosquito. Smithson Misc Collect. 1959;139(8):65–6.

৪. Bomphrey RJ, Nakata T, Phillips N, Walker SM. Smart wing rotation and trailing-edge vortices enable high-frequency mosquito flight. Nature [Internet]. 2017 Mar 29 [cited 2019 Jun 11];544(7648):92–5. Available from: http://www.nature.com/doifinder/10.1038/nature21727

৫. Arthur BJ, Emr KS, Wyttenbach RA, Hoy RR. Mosquito ( Aedes aegypti ) flight tones: Frequency, harmonicity, spherical spreading, and phase relationships. J Acoust Soc Am. 2014;135(2):933–41.

ওভার ফিটিং

যে কোন তরল বা গ্যাসীয় পদার্থে দুটি অনু যখন পরস্পর মিথ:স্ক্রিয়া করে তখন নিউটনের সূত্রগুলো মেনে চলে। কিন্তু, তরল বা গ্যাসীয় পদার্থে অসংখ্য অনুর নড়াচারা আপনি শুধু এই সুত্র থেকে প্রেডিক্ট করতে পারবেন না। যেহেতু অসংখ্য অনুর প্রতিটির গতি প্রকৃতি ও আনুসঙ্গিক প্রভাবক আলাদা ভাবে মাপা সম্ভব নয়, সেহেতু আপনি সুনির্দিষ্টভাবে একদল অনুর গতিবিধি প্রেডিক্ট করতে পারবেন না। তবে পূর্ববর্তি গতিবিধির উপর ভিত্তি করে পরবর্তী গতি বিধির একটি সম্ভাব্যতা হিসেব করতে পারবেন। এটি স্ট্যাটিসটিক্যাল মেকানিক্স-এর কাজ।

অনুরুপভাবে, ধরি একজন মানুষ নিয়মিত ধুমপান করেন এবং কয়েক বছর পর তার ফুসফুসের ক্যান্সার হলো। কিন্তু, শুধু মাত্র এই একজনের তথ্য থেকে আপনি বলতে পারবেন না ধুমপানের সাথে ক্যান্সারের সম্পর্ক আছে কি না। কারণ, মানুষ ভেদে ধুমপানের প্রভাবে পার্থক্য হয়।   আপনি যা করতে পারবেন তা হলো ক্যান্সার আক্রান্ত অনেক রোগী এবং ক্যান্সার নেই এরকম অনেক ব্যাক্তি নিয়ে ধূমপানের কারণে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা হিসেব করতে পারবেন। এক্ষেত্রে বায়স্ট্যাটিসটিক্স এর সাহায্য লাগবে।

স্ট্যাটিস্টিসিয়ানগণ কোনো বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য এর উপর ভিত্তি করে গানিতিক সমীকরণ (ম্যাথমেটিকেল মডেল) দাড় করান। এই মডেলগুলো উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন প্রভাবককে বিবেচনায় নিয়ে একটি ঘটনার সম্ভাব্যতা হিসেব করা। কোন কোন ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নমুনা তথ্যের উপর ভিত্তি করে এমন একটি মডেল দাড় করানো, যেটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে প্রত্যাশিত ঘটনাটি সম্পর্কে প্রেডিক্ট করতে পারে।

ওভার ফিটিং

 তবে আপনি যদি আপনার নমুনা ডেটা দিয়ে প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে সঠিক প্রেডিকশন দেয় এমন একটি মডেল দাড় করান, সেটি প্রকৃতপক্ষে আপনি যে সকল নমুনা নিয়ে কাজ করেছেন সেগুলোর ব্যাপারেই সঠিক প্রেডিকশন দিতে পারে। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে সংগৃহীত নমুনার ক্ষেত্রে এটি শতভাগ প্রেডিকশন দিতে পারবে না।

এর কারণ, আপনি তখনই কোন স্ট্যাটিসটিক্যাল মডেলিং করেন, যখন আপনার লক্ষ্যবস্তুতে অন্ত:র্নিহিত র‍্যানডমনেস থাকে। এই র‍্যানডমনেস আসে প্রকৃত পক্ষে অনেক জানা এবং অজানা প্রভাবক (ফ্যাক্টর)-এর মিথস্ক্রিয়ার কারণে।

প্রায় শতভাগ প্রেডিকশন দিতে পারার এই বিষয়টিকে বলা হয় ওভার ফিটিং। ওভার ফিটিং কেন গ্রহনযোগ্য নয়? কারণ, ওভারফিটেড মডেল আমার স্যাম্পলের ভিতর যে ত্রুটি আছে তা সহ ফিট করে। ফলে, নতুন পর্যবেক্ষনের ক্ষেত্রে তা সাধারনীকরণ করা যায় না।  

নিউরাল নেটওয়ার্ককে যখন ট্রেইনিং দেয়া হয় তখনও একধরনের নন-লিনিয়ার ম্যাথমেটিকাল মডেলিং কর হয়। নিউরাল নেটওয়ার্কের সুবিধে হল আপনি প্রাথমিক মডেলের আউটপুট সঠিক হয়েছে কিনা এই ফিডব্যাক (ট্রেইনিং) দিতে পারেন। উক্ত ফিডব্যাকের আলোকে নেটওয়ার্কের ভিতর ব্যাকপ্রপাগেশনের মাধ্যমে সিগনাল ভ্যারিয়েশন (Weight variation) তৈরী হয়। ফলে পরবর্তীবার ইনপুট হিসেবে উক্ত ভ্যারিয়েশন সহ ডাটা মডেলে প্রবেশ করে। এভাবে প্রতিটি ইটারেশনের সময় মডেলটির প্রেডিকটিভ ক্ষমতা বাড়তে থাকে। কিন্তু, একই সাথে তৈরী হয় ওভার ফিটিং প্রবলেম।

লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলো ওভারফিটিং হলে অনেক সময় এমন কিছু বাক্য তৈরী করে যার কোন সিনটেক্স ও সিমেনটিক্স অনুযায়ী হয়ত ঠিক আছে। কিন্তু, বাক্যগুলোর অর্থহীন এবং কোন সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ণকে অনুসরণ করে না। এই ঘটনাকে মেশিন লার্নিং-এর ভাষায় বলা হয় হ্যালুসিনেশন। তবে মজার বিষয় হল ইমেজ বিল্ডিং বা এ ধরনের কাজে এই হ্যালুসিনেশকে কাজে লাগানোর সুযোগ আছে। তবে হেল্দ ডেটারর প্রেডিকটিভ মডেলিং আমাদের টার্গেট থাকতে হবে আন্ডার ফিট বা অভার ফিট পরিহার করা।