বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা

বিজ্ঞানের একটি অন্তঃর্নিহিত সীমাবদ্ধতা হল ‘Problem of Induction’। বিজ্ঞান কাজ করে অনুমিতি (Assumptions)-এর উপর ভিত্তি করে। কিন্তু, বিজ্ঞানবাদীরা বিজ্ঞান যে ‘অনুমিতি’ নির্ভর তা সুকৌশলে এড়িয়ে যায়।

একটু খুলে বলি। ধরুন, আপনি পরীক্ষা করে দেখতে চান কাকের রং কি। যেই ভাবা সেই কাজ। আপনি ১০০০ হাজার কাক র‍্যানডমলি বাছাই করে পর্যবেক্ষণ করলেন। আপনি দেখলেন কাকের রং কালো। আপনি সিদ্ধান্তে আসলেন যে কাকের রং কালো। কিন্তু, ‘কাকের রং কালো’ এই সিদ্ধান্তটি কি ১০০% সত্য (Fact)। উত্তর হচ্ছে: না। কারণ, আপনার বন্ধু যদি কয়েকবছর পর ঘটনাক্রমে একটি সাদা কাক আবিস্কার করে ফেলে তাহলে ‘কাকের রং কালো’ সিদ্ধান্তটি প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

বিজ্ঞানীদের কাজ হল পর্যবেক্ষনলব্ধ তথ্য উপাত্তের উপর ভিত্তি করে একটি তত্ত্ব (Theory) দাড় করানো। উক্ত তত্ত্বের কাজ দুটো: একটি হল বর্তমান তথ্য উপাত্তের একটি কার্যকরী ব্যাখ্যা দেয়া এবং দ্বিতীয়টি হল উক্ত তত্ত্বের আলোকে প্রেডিকশন করা যে মহাবিশ্বের অদেখা জায়গাগুলো ‘যদি একই রকমের নিয়ম মেনে থাকে’ তাহলে একই রকম তথ্য পাবার কথা।

উক্ত ‘একই রকমের নিয়ম মেনে থাকে” বাক্যটি হচ্ছে আমাদের অনুমিতি যা হয়ত পরবর্তী পর্যবেক্ষণে সত্য নাও হতে পারে।

সুতরাং মহাবিশ্বের (মানে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীবজগৎ সহ) কোন অংশ আমরা কিভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং কতটুকু পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছি, আমাদের প্রকল্প (Hypothesis) এবং তত্ত্ব তার উপর নির্ভর করে।

যেমন টলেমীর জিওসেন্ট্রিক মডেল (তথা পৃথিবীর চারপাশে সূর্য ঘুরে) ততক্ষণ পর্যন্ত কার্যকর ছিলো যতক্ষন পর্যবেক্ষণলব্ধ তথ্য উক্ত মডেল দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছিল। কিন্তু, যখনই নতুন পর্যবেক্ষণলব্ধ তথ্য উক্ত মডেল দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছিল না তখন কোপারনিকাসের হেলিওসেন্ট্রিক মডেল (তথা সূর্যের চারপাশে পৃথিবী ঘুরে) এসে জায়গা করে নিলো।

আরেকটা মজার বিষয় হল হাতে থাকা তথ্যকে অনেক সময় একাধিক মডেল বা প্রকল্প দিয়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কিন্তু, এর মধ্যে কোন প্রকল্পটি গ্রহন করা হবে তা নির্ভর করছে উক্ত প্রকল্পটির ‘ব্যাখ্যা শক্তি’ (explanatory power) -এর উপর। যে প্রকল্পটি আহরিত তথ্যের সবচেয়ে ভাল ব্যাখ্যা দিতে পারবে এবং যেটি তুলনামূলক সহজ, রীতি হলো সেটি গৃহীত হবে।

বিজ্ঞানী মহলে Occam’s Razor বলে একটি কথা আছে। যার বক্তব্য হচ্ছে- যখন কোন পর্যবেক্ষণ ব্যাখ্যা করতে একাধিক প্রতিযোগী প্রকল্প দাড় করানো হয় তখন সে প্রকল্পটি গ্রহন করতে হবে যেটি সর্বনিম্ন সংখ্যক ‘অনুমিতি’ নির্ভর তথা ‘সহজ’। তার মানে এই নয় যে অন্যান্য প্রকল্প ভুল। বরং, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি এজন্য গ্রহন করা হচ্ছে যে এটি বৈজ্ঞানিকভাব তুলনামূলক সহজে পরীক্ষা (test) করা যাবে।

সুতরাং, দেখা যাচ্ছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কখনও শতভাগ সত্যের নিকটে পৌছতে পারে না। কারণ, বিজ্ঞান নির্ভর করে মানুষের ‘পর্যবেক্ষণ’ সীমার উপর।


‘বিবর্তনবাদ’ ফসিল এভিডেন্স ও স্পিসিস-এর জিওগ্রাফিক লোকেশনের একটা সুন্দর ব্যাখ্যা দেয়। কিন্তু, একটা ব্যাকটেরিয়ার ফ্ল্যাজেলা কিভাবে ‘বিবর্তনের’ মাধ্যমে তৈরী হল তা বিজ্ঞানমহলে প্রচলিত কোন বিবর্তনের ম্যাকানিজম দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। সুতরাং, যারা বিবর্তনবাদকে শতভাগ সত্য (Fact) বলে দাবী করে, তারা তা করে বিশ্বাসের ভিত্তিতে। এই বিশ্বাস যে, বিজ্ঞান মানুষকে শতভাগ সত্যের দিকে নিয়ে যায়। আর, যারা বিবর্তনবাদকে শুধমাত্র একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে বিবেচনা করে, তাদের বিনয়ের সাথেই মেনে নেয় যে নতুন এমন অনেক পর্যবেক্ষন থাকতে পারে যা ‘বিবর্তনবাদ’ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।         

লক্ষ্যণীয় ‘Observation’ তথা পর্যবেক্ষণ হচ্ছে জ্ঞান আহরনের একটি মাধ্যম মাত্র। মানুষের জ্ঞান অর্জনের আরও অনেক মাধ্যম আছে । ‘Epistemology’ তথা জ্ঞানতত্ত্ব হল দর্শনের একটি শাখা যা মানুষের জ্ঞান আহরনের মাধ্যম এবং মানুষের বিশ্বাস-এর ন্যায্যতা প্রতিপাদন (Justification) নিয়ে আলোচনা করে।
শেষ করছি একটি প্রশ্ন রেখে। পাঠক ভেবে দেখুনতো মানুষের জ্ঞান আহরনের  আরও কি কি মাধ্যম আছে?

পাখি

আমি হব সকাল বেলার পাখি

সবার আগে কুসম বাগে

উঠব আমি ডাকি।

(কাজী নজরুল ইসলাম)

ভোরের আকাশে আলোর আভা দেখা দেয়ার পূর্বমূহুর্তে শুরু হয়ে যায় পাখিদের কলকাকলী। কি সুমধুর সেই কণ্ঠ! যুগে যুগে পাখির ডাক মোহিত করেছে কত না কবিদের। জন্ম দিয়েছে কত শত কবিতার! পাখির অপরুপ গঠন এবং শরীরে রঙের মোহনীয় বিন্যাস অনেক শিল্পীর চিত্রকল্পে ঠাই করে নিয়েছে। আবার, পাখি সংক্রান্ত বিজ্ঞান জন্ম দিয়ে একটি স্বতন্ত্র শাখার।

আমরা অধিকাংশ মানুষ হয় পাখিদের বৈজ্ঞানিক গঠন নিয়ে আগ্রহী নই। ওটা বিজ্ঞানীদের কাজ। কিন্তু, জানালের পাশে বসে অপূর্ব সুরে ডাকতে থাকা পাখি নিয়ে কখনও ভাবনার গভীরে হারিয়ে যাই নি এমন মানুষ হয়তো নেই। হয়ত পড়ন্ত বিকেলে কমলাভ-লাল আকাশে নীড়ে ফিরতে থাকা পাখিদের দেখে শিহরিত হয়েছি। ডানা মেলে নির্দ্বিধায় ভেসে বেড়ানো পাখিগুলোকে দেখে হয়েছি ইর্ষান্বিত।

কিন্তু, কখনও কি ভেবে দেখেছি কিভাবে পাখিগুলো বাতাসে ভেসে বেড়ায়? কেন তারা তাদের শরীরের ভারে পড়ে যায় না? কেন এক লাফে ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে উড়ে যেতে পারে অনিমেষে?

বিজ্ঞানীরা আমাদের জন্য কিছু উত্তর বের করে এনছেন। তারা দেখেছেন যে সকল পাখি উড়তে পারে তাদের হাড়গুলো অন্য প্রাণীদের তুলনায় ফাঁপা। ফলে পাখির শরীর হালকা হয়।

অন্যদিকে পাখির ডানার গঠণও উড্ডয়নের জন্য যথাযথ। আপনি কখনও কবুতর বা ময়ুরের পালকের দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকালে দেখবেন প্রতিটি পালকে একটি লম্বা কাঠির মত অংশ (শ্যাফট) থেকে নারকেল গাছের পাতার মত ছোট ছোট লম্বা অনেকগুলো অংশ (বার্ব) বেড়িয়ে গেছে। বার্বগুলো পরস্পর সমান্তরালে থাকে। প্রতিটি বার্ব থেকে সমকোণে আরও ক্ষুদ্র কাঠির মত বার্বিউল বের হয়ে আসে যার মধ্যে আবার কাঁটার মত হুক থাকে। একেকটি বার্বকে বার্বিউল সহ দেখতে চিরুনীর মত লাগে। আপনি যদি দুটি চিরুনীর দাতগুলো একটিকে আরেকটির ভেতর প্রবেশ করান, কি হবে বলুন তো? এরা পরস্পর সংলগ্নভাবে আটকে যাবে। পাখির বার্বগুলোও এভাবে একটির সাথে আরেকটি আটকে থাকে। ফলে তাতে বাতাস প্রবেশ করতে পারে না। কি অসাধারণ তাই না?

পাখির মসৃণ গঠনও পাখির ওড়ার জন্য সাহায্য করে। এমনকি শক্ত জোয়ালের পরিবর্তে চঞ্চুর উপস্থিতি ওড়ার জন্য উপকারী। পাখির বুকের প্রশস্ত হাড় (স্টার্নাম) পাখার মাংসপেশী শক্তভাবে লেগে থাকার জন্য প্রয়োজনীয়।  

পাখি যখন উড্ডয়নের জন্য ডানা ঝাপটাতে থাকে তখন পাখাগুলো একবার নিচে এবং আরেকবার উপরে যায়। নিচে চাপ দেয়ার সময় পাখির প্রশস্ত পাখা উপরিতলের বাতাস নিচের তুলনায় দ্রুত প্রবাহিত হয় । ফলে, পাখার উপরস্থিত বাতাসের চাপ কমে যায় এবং নিচের বাতাসের চাপে পাখি উপরে উঠতে থাকে।

‘ক্লোজ-আপ’ জাহান্নামের কাছে আসার গল্প

“শয়তান তোমাদেরকে অভাব অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বেশী অনুগ্রহের ওয়াদা করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সুবিজ্ঞ”।–সূরা বাক্বারা: ২৬৮

কোন জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসার জন্য শয়তান ধীরে ধীরে উক্ত জাতির মধ্যে অশ্লীলতার বিস্তৃতি ঘটায়। শয়তার এই কাজটা করে ধীরে ধীরে। একটু মনোযোগ দিয়ে চিন্তা করলেই দেখা যাবে, মুসলিম জাতিতে অশ্লীলতা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য শয়তান কি পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। শয়তান প্রথমে নারী ও পুরুষকে পর্দার বাইরে নিয়ে এসেছে। এটা ছিলো বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে। এরপর, রেডিও ও টেলিভিশন জমানার আগে অসংখ্য গল্প, উপন্যাস, নাটক, সাহিত্যে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যবর্তী কথাবার্তা ও হাত ধরাধরি না করে গল্প করাকে (তথা প্রেম) স্বাভাবিক হিসেবে সাবকনসাস মাইন্ডে ঢুকিয়ে দিয়েছে।

রেডিও ও টেলিভিশন আসার পরে প্রথম উপরোক্ত ধরনের বিষয়গুলোকে ‘শোনা’ ও ‘দেখা’ এ দুটো পদ্ধতিতে মগজে প্রথিত করেছে। তার ফলে আমাদের বিংশ শতাব্দীর শেষের দশ ও একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে এমন একদল তরুণ তৈরী হয়েছে যারা উপরোক্ত ধরনের প্রেমকে ‘হারাম’ মনে করত না (আল্লাহ আমাকে এ ধরনের নিকৃষ্ট ধারণা থেকে হেফাজত করুন)।

প্রথম প্রথম শয়তানের স্ট্র্যাটেজি ছিলো আকারে ইঙ্গিতে অশ্লীলতার বীজ মন-মগজে রোপন করা। কিন্তু কিন্তু, সময়ের সাথে যখন শয়তানের ধোকায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে শয়তান অশ্লীলতা ছড়ানোর স্ট্র্যাটেজিকে আরও বেশী প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে।

টেলিভিশন কেন্দ্রিক মিডিয়া ইন্ড্রাস্ট্রিতেও প্রথম প্রথম সরাসরি অশ্লীলতা প্রবেশ করানো হয় নি। ধীরে ধীরে মননকে কলুষিত করে অশ্লীলতা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রথম প্রথম প্রেমের নামে আপাতদৃষ্টিতে অশ্লীল নয় এমন দৃশ্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে বিভিন্ন সিনেমা নাটকে একটা দুটো স্ন্যাপশট হলেও নগ্নতা ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে পর্ণের দিকে ধাবিত করার প্রথম সুড়সুড়ি। এভাবে প্রথমে তৈরী হয়েছে এমন একদল তরুণ যারা বিনোদনের নামে পর্ণ দেখাকে প্রথমে গোপনে এবং পরে প্রকাশ্যে স্বাভাবিক বানিয়ে ফেলেছে। এছাড়াও তৈরী হয়েছে কিছু পর্ণ এডিক্ট। 

এখন চলছে শয়তানের দাবার শেষ চাল। যৌনতাকে ছড়িয়ে দেয়ার কাজে শয়তানের দোসররা এখন অনেকটাই প্রকাশ্য। ‘ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প’ এবং ‘দেখিয়ে দাও অদেখা তোমায়’ অশ্লীলতাকে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে ছড়িয়ে দেয়ার প্রথম ধাপ।

একটা গুনাহ যতক্ষণ গোপন থাকে ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর ফিরে আসার সুযোগ থাকে। কিন্তু, গুনাহটি যখন প্রকাশ্যে স্বাভাবিকভাবে প্রচলিত হয়ে পরে তখন সেটি উক্ত আক্রান্ত জাতিতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে উপস্থিত করে।

যারা আল্লাহর কৃপায় যারা এখনও ‘জাহান্নামের কাছে আসার গল্পের’ সম্পর্কে সচেতন, উক্ত সচেতনতা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা তাদের কর্তব্য।


দাঁত মাজার জন্য ইউলিভারের ক্লোজ-আপ বা অন্য টুথপেস্ট ব্যবহার করতেই হবে, এমন কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আপনি পাবেন না। তাহলে কেন তাদের পণ্য কিনছেন। 

তারা প্রকাশ্যে ‘অশ্লীলতার’ আদেশ দিচ্ছে দেখেও কি আপনাদের কাছে বিষয়টি ক্লিয়ার নয় যে এরা কার দাসত্ব করছে। আপনি কি টাকা দিয়ে শয়তানের কাছ থেকে পণ্য কিনবেন?  প্রশ্নই উঠে না।

এছাড়া আর কি করতে পারেন? হ্যা, ‘কাছের আসার গল্প’ ও ‘দেখিয়ে দাও অদেখা তোমায়’ জাতীয় ইঙ্গিতপূর্ণ অশ্লীলতার আহবানের বিভ্রান্তি নিয়ে ফেসবুকের নিউজফিডকে ‘অনেকদিন’ সরব রাখতে পারেন। আবার বলছি, ‘অনেকদিন’ এবং ‘অনেকে’ মিলে সরব থাকতে পারেন। আল্লাহ আমাদের শয়তানের ফিৎনা থেকে রক্ষা করুন।

ওজন হ্রাসের উপায়

——————–

সকল প্রশংসা আল্লাহর! মানুষ এখন বুঝতে পারছে যে অতিরিক্ত ওজন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অডিওভিজুয়্যাল ও সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে এখন ওজন কমানোর বিষয়ে আমরা অনেকটাই সচেতন। যদিও ডা. জাহাঙ্গির কবিরের কিটো পদ্ধতি সর্বসাধারনের জন্য সঠিক উপায় নয়। স্বীকার না করে উপায় নেই, তার ভাইরাল হবার প্রেক্ষিতে অনেকেই ওজন হ্রাসের চর্চায় প্রবেশ করেছেন।

ওজন হ্রাসের জন্য ভাল উপায় কি?

এর আসলে সাধারণ কোন উত্তর নেই। অর্থাৎ, সবার জন্য ওজন হ্রাসের একটি সাধারণ নিয়ম বেঁধে দেয়া যায় না।

তবে, ওজন হ্রাসের মূলনীতি প্রায় সবার জন্য এক। (‘প্রায়’ বললাম এই জন্য যে কিছু রোগে শরীরের ওজন অসাভাবিক বৃদ্ধি পায়, যা উক্ত রোগের চিকিৎসা ছাড়া নিরাময় করা কঠিন।)

মূলনীতিটি হচ্ছে, আপনি দৈনন্দিন যে পরিমাণ শক্তি ব্যয় করেন তার চেয়ে কম গ্রহণ করতে হবে, এবং অবশ্যই নিয়মিত, আমি আবারো বলছি ‘নিয়মিত’ এই কাজটি করতে হবে। কনসিসটেন্সিটাই বরং সবচেয়ে বেশী জরুরী।

আপনি দৈনন্দিন যে শক্তি ব্যয় করেন তা হিসেব করবেন কিভাবে? এটি হিসেব করতে হলে প্রথমে আপনার Basal Metabolic Rate (BMR) হিসেব করতে হবে। সবচেয়ে নিখুঁত ভাবে BMR বের করার উপায় হচ্ছে মেশিন দিয়ে হিসেব করা। অন্যদিকে, কিছু অনলাইন ক্যালকুলেটর আছে, যেখানে বহুল ব্যবহৃত কিছু গানিতিক ফর্মুলা দিয়ে আপনাকে BMR হিসেব করে দিবে। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে মোডিফাইড হ্যারিস বেনেডিক্ট ফর্মুলা। উক্ত ফর্মুলা অনুযায়ী BMR ক্যালকুলেট করতে আপনার ওজন, উচ্চতা, বয়স এবং লিঙ্গ সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। ফর্মুলাটা অনেকটা এরকম-

পুরুষ হলে, বিএমআর = ৬৬.৪৭৩০ + (১৩.৭৫১৬ x ওজন কেজিতে) + (৫.০০৩ x উচ্চতা সেন্টিমিটারে) – (৬.৭৭৫০ x বয়স বছর-এ)

নারী হলে, বিএমআর = ৬৫৫.০৯৫৫ + (৯.৫৬৩৪ x ওজন কেজিতে) + (১.৮৪৯৬ x উচ্চতা সেন্টিমিটারে) – (৪.৬৭৫৬ x বয়স বছর-এ)

(অ্যাথলেট হলে এই ফর্মুলা আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে না)

লক্ষ্যনীয়, BMR হচ্ছে আপনি দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম করলে যে পরিমান শক্তি খরচ হয় তার একটি হিসেব। সুতরাং, বুঝতেই পারছেন এটি সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। যে ব্যাক্তি রিকশা চালায়, আর যে ব্যাক্তি ডেস্কে বসে জব করে তাদের শক্তি ব্যয় এক রকম নয়। এজন্য BMR বের করার পর আপনার দৈনিক সর্বমোট শক্তি ব্যায় (Total Daily Energy Expenditure [TDEE]) হিসেব করতে হবে।

নিম্নোক্ত উপায়ে আপনি TDEE হিসেব করতে পারেন।

১. কোন পরিশ্রম না করলে বা খুবই হালকা পরিশ্রম হলে (Sedentary),

ক্যালরি = বিএমআর x ১.২

২. হালকা পরিশ্রম করলে বা সপ্তাহে এক থেকে তিন দিন খেলাধুলা করলে (Lightly active),

ক্যালরি = বিএমআর x ১.৩৭৫

৩. মাঝারী পরিশ্রম করলে বা সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচ দিন খেলাধুলা করলে (Moderately active),

ক্যালরি = বিএমআর x ১.৫৫

৪. ভারি পরিশ্রম করলে বা সপ্তাহে ছয় থেকে সাত দিন খেলাধুলা করলে (Very active),

ক্যালরি = বিএমআর x ১.৭২৫

৫. খুবই ভারি পরিশ্রম করলে বা সপ্তাহে প্রতিদিন খেলাধুলা করলে ও শারীরিক পরিশ্রম করতে হয় এ রকম চাকুরী করলে (Extra active),

ক্যালরি = বিএমআর x ১.৯

এভাবে আপনার দৈনন্দিন শক্তি ব্যয়ের হিসেব পেয়ে যাবেন।

মনে করি আপনি একজন পুরুষ, ওজন ৭০ কেজি, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং একজন সিডেনটারী ওয়ার্কার (অর্থাৎ, অফিসে ডেস্ক জব করাই আপনার কাজ)। তাহলে আপনার TDEE আসবে ১৮৬৩ ক্যালরী।

অর্থাৎ, আপনার বর্তমান ওজন মেইনটেইন করতে আপনাকে প্রায় ১৮৬৩ ক্যালরী গ্রহণ করতে হবে। এখন, আপনি যদি প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ ক্যালরী কম খান তাহলে ধীরে ধীরে ওজন হ্রাস করতে পারবেন। অথবা, আপনি যদি পরিশ্রমের পরিমান ব্যয়ামের মাধ্যমে বাড়িয়ে দেন, তাহলেও ওজন হ্রাস হবে। খাবার কমানোর চেয়ে শরীরচর্চা জরুরী বেশী এই জন্য যে শরীরচর্চা শুধু যে আপনার শারীরিক উন্নতি ঘটায় তা না, আপনার ব্রেইনে এনডরফিন নি:সরণ করার মাধ্যমে আপনার মানসিক অবস্থারও উন্নতি ঘটায়।

তবে যে উপায়ই অবলম্বন করুন না কেন আপনাকে কনসিসটেন্ট হতে হবে। অর্থাৎ, নিয়মিত এই কাজটি করে যেতে হবে।

অতএব, আসুন আমরা ওজনকে স্বাভাবিক রেইঞ্জ (বিএমআই ১৮.৫ থেকে ২২.৯)-এ রাখা চেষ্টা করি এবং সুস্বাস্থ বজায় রাখার চেষ্টা করি।

ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞান (১)

‘God of the gaps’ ফ্যালাসী হল বিজ্ঞানের অমিমাংসিত প্রশ্নগুলোতে স্রষ্টার দোহাই দিয়ে চুপ থাকা।

আপেলটা কেন মাটিতে পড়ল এই প্রশ্নটি নিয়ে চিন্তা করতে আপনি যদি এই বলে থেমে যান যে, আল্লাহর হুকুমে পড়েছে, তাহলে কিন্তু এই প্রশ্নটির উত্তর আর এগুবে না। এ কারণেই বিজ্ঞানের জগতে ‘Methodological naturalism’ অনুসরণ করা হয়। অর্থাৎ, যে কোন প্রাকৃতিক ঘটনার ব্যাখ্যা প্রাকৃতিক নিয়ম দিয়ে করতে হবে এ ধরনের একটি অঘোষিত নিয়ম বিজ্ঞানের জগতে মেনে চলা হয়।

তবে তার মানে এই না যে, বিজ্ঞান একটা ঘটনাকে প্রাকৃতিক নিয়ম দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারলে সে স্রষ্টার অস্তিত্বকে অস্বীকার করলো।

কারণ, বিজ্ঞানের শুরু হয় প্রশ্ন থেকে এবং প্রথম দিককার অধিকাংশ বিজ্ঞানীই তাদের অনুসন্ধানের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে বলেছেন বা স্বীকার করেছেন যে স্রষ্টা কোন নিয়মে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন সে বিষয়টিই অনুসন্ধান করার উদ্দেশ্যেই তাদের গবেষণা।

বিষয়টি একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝাই। ধরুন পৃথিবীতে কিভাবে এত প্রজাতি আসল সেটা নিয়ে আপনি চিন্তা করছেন। এখন আপনি যদি বলেন যে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন তা-ই এসেছে তাহলে কিন্তু ঠিক ব্যাখ্যাটা এসে থেমে যাবে। প্রশ্নটি যদি আপনি একটু প্যারাফ্রেজ করে এভাবে চিন্তা করেন যে, কোন নিয়মে আল্লাহ বিভিন্ন প্রজাতি তৈরী করে থাকতে পারেন? তখন উত্তরে যদি আপনাকে উপযুক্ত প্রমাণ সহকারে দেখানো হয় প্রথম কোষগুলোর মধ্যেই ভ্যারিয়েশন সৃষ্টি ও প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় উক্ত ভ্যারিয়েশনের সিলেকশনের মাধ্যমে বিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন প্রজাতি তৈরী হওয়ার পদ্ধতি দেয়া ছিলো, তাহলে বরং স্রষ্টা সৃষ্টিকুশলতা দেখে আপনার বিশ্বাস আরও দৃঢ় হবে।

ইন ফ্যাক্ট এই প্রেক্ষিতে আপনি যদি নিওডারউইনিজম প্রদত্ত পদ্ধতিতে আনস্যাটিসফাইড থাকেন তখন আপনি ‘বিশ্বাসী’ হয়েও বিকল্প হিসেবে অন্য কোন প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা দাড় করাতে চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ, তখন আপনি যদি নব্য-ডারউইনবাদের সমালোচনা করেন আপনার লক্ষ্য থাকবে নব্য-ডারউইনবাদের ‘পদ্ধতির’ সমালোচনা করে ‘বিকল্প’ প্রাকৃতিক পদ্ধতি উপস্থাপন করার চেষ্টা করা। সেক্ষেত্রে স্রষ্টার অস্তিত্ব ভুল প্রমানিত হয়ে যাবে না।

তাহলে, বিশ্বাসীদের মধ্যে বিজ্ঞানের ভিতর স্রষ্টাকে খুজার এই প্রবণতা আসলো কোথা থেকে? এর একটা অংশ এসেছে মিলিট্যান্ট নাস্তিক ও বিজ্ঞানবাদীতার অনুসারী কতৃক বিজ্ঞানকে নাস্তিকতার পক্ষে প্রমাণ হিসেবে প্রচারণার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ।

যেমন: ডকিন্স বলছেন:

“Although atheism might have been logically tenable before Darwin, Darwin made it possible to be an intellectually fulfilled atheist” (১)

অর্থাৎ, ডকিন্স বিজ্ঞানকে পরোক্ষভাবে নাস্তিকতার পক্ষে প্রমাণ হিসেবে প্রচার করছেন। অথচ, উপরে আমরা দেখেছি যে বিবর্তনবাদ প্রমানিত হলেও স্রষ্টা অপ্রমানিত হয়ে যায় না।

বিখ্যাত নাস্তিক জীবাশ্মবিদ স্টিফেন জে গোল্ড ধর্ম ও বিজ্ঞানকে বলছেন ‘Non Overlapping Magisteria (NOMA)’ (২). অর্থাৎ বিজ্ঞান ও ধর্মের গবেষণা, পড়াশোনা ও প্রয়োগের ক্ষেত্র আলাদা।

কিন্তু, ডকিন্স, হ্যারিস, ডেনেট, হিচেন্সরা এমন একদল তরুন তৈরী করেছে যারা বিজ্ঞানবাদীতার অনুসারী। এদের মতে ধর্মের নিয়মনীতির জায়গাটুকুও (যেমন: মোরালিটি, অ্যারিস্টটালিয়ান ফাইনাল কজ সম্পর্কে প্রশ্ন ) বিজ্ঞান নির্ধারণ করে দিবে। যার মাধ্যমে সূক্ষ্ন ভাবে বিজ্ঞানীদের প্রতি এক ধরনের ঘৃণা বিশ্বাসীদের মন মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে।

এছাড়াও, অন্যান্য অনেক নাস্তিক বিজ্ঞানীও তাদের বৈজ্ঞানিক গবেষণা তথা Methodological naturalism-এর সাথে তাদের বিশ্বাস তথা Philosophical naturalism-কে জুড়ে দিচ্ছে।

অধিকাংশ বিশ্বাসীর ফিলোসফিকাল ডিসকোর্সের এই জটিল নিয়মাবলী (অর্থাৎ অ্যারিস্টটালিয়ান কজোলজীর ম্যাটেরিয়াল, ফর্মাল, ইফিসিয়েন্ট ও ফাইনাল কজ) সম্পর্কে মাথা ঘামানো সময় নেই বিধায় তাদেরকে ডকিন্স এণ্ড গং রা সহজেই ধোকায় ফেলতে পারছে।

আস্তিকদের জানা দরকার যে, উক্ত ফাইনাল কজ অর্থাৎ ‘সবকিছুর সর্বশেষ কারণ কে?’ এই প্রশ্নের উত্তর আমাদেরকে দুটো বিভাগ দেয়: দর্শন ও ধর্ম।

তবে দর্শন আপনাকে ফাইনাল কজ হিসেবে স্রষ্টার অস্তিত্বের নেসেসিটি, তার বৈশিষ্ট্য, ক্ষমতা, গুন সম্পর্কে ধারণা দিবে এবং ধর্ম আপনার উক্ত ধারণাকে তথা স্রষ্টার অস্তিত্বকে কনফার্ম করবে এবং স্রষ্টা আপনাকে কি উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন এবং কি করলে তার সন্তুষ্টি অর্জন করা যাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত নিয়মাবলী জানাবে।

সুতরাং বিশ্বাসীদের একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল বিজ্ঞানবাদীতা (Scientism)-এর আবরণ থেকে বিজ্ঞানকে উন্মুক্ত করে উপস্থাপন করা এবং দেখানো যে বিজ্ঞান আসলে নাস্তিক দর্শনের এনডর্সমেন্ট দেয় না।

তবে একটা প্রশ্ন থেকে যায়, আল্লাহ কোরআনে যে বার বার বলেছেন সৃষ্টিতে তার নিদর্শন আছে। তাহলে সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করলে কি আমরা তার নিদর্শন পাবো না? আমার মনে হয়, বিজ্ঞানের মধ্য দিয়ে স্রষ্টাকে খুজার প্রবণতা তৈরী হওয়ার এটিও একটি কারণ।

এবং, আমি মনে করি স্রষ্টার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করলে তার নিদর্শন পাওয়া যায়। যেমন: মহাবিশ্বের ফাইন টিউনিং, বায়োলজিকাল বিইং-এর ডিজাইন ইনফারেন্স ও হিউম্যান ইনটেলেক্ট-এর ইউনিক ফিচারস থেকে স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে অ্যাবডাকটিভ বা ইনডাক্টিভ ইনফারেন্স আনা যায়।

অর্থাৎ সায়েন্টিফিক ইনভেস্টিগেশন চূড়ান্ত পর্যায়ে দর্শনের দিকে স্বত:স্ফূর্তভাবেই নিয়ে যায়।


রেফারেন্স:
১. Dawkins, Richard. 1986. The Blind Watchmaker. New York: Norton, p 6.
২. Stephen Jay Gould, “Non overlapping Magisteria”. Accessed 15 March 2018; Retrieved

Brainstorming about Mind #1

What is creativity?

What is intelligence?

What is non-computable or non-algorithmic about intelligence?

The Turning halting problem has shown us that there is no program, which could decide whether any arbitrary computer program would halt or loop forever.

Godel’s Incompleteness theorem has shown us that deriving all mathematics from a group of axioms is not possible.

This means, there’s surely something non-computable about the mind that exists.

So, what is non-computable about our minds.

Let us think about the issue.

We know, whenever we face a complex problem, it is easy to deal with it by breaking it into simpler parts.

So when we think, imagine, or get creative about something, what does our mind actually do?

It processes sensory information from vision, hearing, smelling, tasting, and touch. In the sensory cortices of our brain, we process the electrochemical signals coming from sensory organs and perceive them in our own unique ways. This perception, dubbed ‘qualia’, is subjective and can’t be reached objectively.

Now, let’s think of our childhood brain as an empty slate with certain programs installed in it on how to process information. From infancy, we are exposed to a lot of information about relationships between different types of sensory information. For example, a child sees its surroundings and learns how to reproduce them. It sees our gestures during our talk, including facial and bodily movements, and the sounds we produce. It then reproduces this information using its motor apparatus. While processing this information, it learns the relationship between different types of information we have ascribed, knowingly or unknowingly, e.g., the relationship between sounds we produce and the hand movements we do, the minute facial muscle movements, and the sound units produced through this process, etc.

A child while getting acquainted with the ‘letters’ and their corresponding sound units- ‘phonemes’ during learning how to read and write, learns about our ascribed ‘relationship’ between a ‘curved line (e.g., letter ‘p’)’ and the sound (e.g., ‘p’ sound). The child then writes the ‘p’ and uses this information learned from experience.

It seems like a highly sophisticated computer using neural networks or parallel connections could do the same if trained through all the information in its surrounding environment over years (like a child learns through experience over time).

However, what is unique about us is that we can produce a completely ‘arbitrary’ relationship between two types of sensory information. For example, you can, just for fun, ascribe the sound ‘A’ to the letter ‘B’, the sound ‘B’ to the letter ‘C’, and write down cryptic sentences using your new symbolic language. However, a computer, running on algorithms, can’t produce a completely “novel” arbitrary relationship (i.e., ascribe arbitrary meaning between two types of sensory units).

Interestingly, we can also retrieve any arbitrary relationships by getting enough information about a new cryptic symbolic system.

When we do abstract thinking we actually manipulate and examine different types of arbitrary relationships between different sensory information and do logical or intuitive deduction.

If we think about this deeply, we can realize that- “The unique feature of human intellect is the ability to associate two unrelated objects with purpose.”

I came across this realization when I got a deeper understanding of our neuronal structure through several texts and other books. Interestingly, I got a similar insight from Dale Purves’ textbook ‘Neuroscience’ and pediatric neurosurgeon Michael Egnor’s talks.

Long ago, realizing this significant feature of the human mind, I put it in my Facebook profile intro. It now seems this understanding is being confirmed day by day.

Alhamdulillah! Allah is the Greatest.

বিজ্ঞানে তত্ত্বের মিথ্যা প্রমাণ যোগ্যতা

(Falsifiability in science)

ধরুন, আপনার কাছে আপনার বন্ধু এসে দাবী করল তার বাসার চিলেকোঠায় ‘নোম’ নামক এক প্রকার কিম্ভূতকিমাকার প্রাণী আছে। প্রাণীগুলো সাইজে লিলিপুটদের মত। সবুজ রঙের।

আপনি একজন রিজনেবল মানুষ। আপনি জানতে চাইলেন এই প্রাণী আছে তার প্রমাণ কি?

আপনার বন্ধু বলল যে, সে নিজ চোখে দেখেছে। আপনি তার কথায় বিশ্বাস করতে পারলেন না। এজন্য স্বচক্ষে দেখতে তার বাসায় গেলেন। কিন্তু, আপনি দরজা খুলে সম্পূর্ণ পরিচ্ছন্ন গোছানো একটি রুম ছাড়া কিছু দেখতে পারলেন না। আপনার বন্ধুও প্রমাণ হিসেবে তার বিশ্বাস ছাড়া কোন এনোম্যালী তথা বাসার স্বাভাবিক অবস্থা থেকে ব্যতিক্রম কিছু উপস্থাপন করতে পারলো না।

আপনার মনে হল আপনার বন্ধু বোধ হয় হ্যালুসিনেট করছে। কিন্তু, আপনি তার ইভ্যালুয়েশন করে কোন মেডিকেল কারণ খুজে পেলেন না। আপনার কাছে কোন উপাত্ত না থাকায় বা‘নোম’ এর উপস্থিতি প্রমাণ বা অপ্রমাণের কোন উপায় না থাকায়, তার বিশ্বাসকে আপনি মিথ্যাও প্রতিপন্ন করতে পারলেন না।

আপনার বন্ধুর দাবীটি(বা প্রকল্প বা তত্ত্বটি) বৈজ্ঞানিকভাবে মিথ্যা প্রমাণ যোগ্য নয় বিধায় বিজ্ঞানের দর্শনের পরিভাষায় একে বলা হচ্ছে ‘unfalsifiable statement’।

বিজ্ঞানের দার্শনিক (Philosopher of Science) কার্ল পপারের মতে কোন তত্ত্বকে ‘বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব’ হিসেবে স্বীকৃতি দেবার জন্য তা Falsifiable হতে হবে। অর্থাৎ, একদল গবেষক যদি দাবী করে যে নতুন এক ধরনের শ্বসনতন্ত্রের রোগ দেখা দিয়েছে যার পিছনের একটি ভাইরাস দায়ী। অন্য গবেষকদের সেটি পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে মিথ্যা(বা মিথ্যা নয়) প্রমাণ করার সুযোগ থাকতে হবে।

কোন উপাত্ত ব্যাখ্যার জন্য প্রদত্ত তত্ত্ব যদি মিথ্যা প্রমাণ করার সুযোগ না থাকে তাহলে তা বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না।

এখন, কোন উপাত্তের অবস্থা যদি এমন হয় তা ব্যাখার জন্য প্রদত্ত তত্ত্ব পরীক্ষানিরীক্ষা করে পর্যবেক্ষণ সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে দার্শনিক রিজনিং প্রয়োগ করে উক্ত তত্ত্বের বিশ্বাস যোগ্যতা যাচাই করা যেতে পারে। কিন্তু, সেটা বিজ্ঞানের জগতের বাইরে দর্শনের জগতে প্রবেশ করবে।

সুতরাং, আমরা যারা গবেষক হতে চাই, আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ লব্ধ উপাত্ত থেকে রিজনিং-এর মাধ্যমে যে তত্ত্ব দিয়ে উক্ত উপাত্তের কার্যকারণ ব্যাখ্যা করতে চাই, তা যেন ফলসিফাইয়েবল হয়।

গবেষণায় যুক্তিপ্রয়োগ

রিসার্চ বা গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হচ্ছে Inference । বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে সিদ্ধান্ত নেয়া বা অনুমান করা।

আমরা যখন কোন রিসার্চ বা গবেষণা করি, তখন একটি গবেষণা চক্রের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। উক্ত গবেষণা চক্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ইনফারেন্স।

গবেষণা চক্রের গড়নটা হচ্ছে অনেকটা এ রকম- তত্ত্ব (Theory) – প্রকল্প (Hypothesis) – উপাত্ত (Observation) –অনুমান/সিদ্ধান্ত (Inference)- তত্ত্ব (Theory)।

ইনফারেন্স করার জন্য বৈজ্ঞানিকরা যে চিন্তা প্রক্রিয়া ব্যবহার করেন তাকে বলা হয় যুক্তি প্রয়োগ তথা Reasoning।

বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কারণ খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া বা যুক্তি প্রয়োগ (Reasoning) বিভিন্ন রকম হতে পারে। চলুন উদাহরণ দিয়ে বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করি।

এক, ধরুণ আপনি ভিন্ন কোন গ্রহে প্রাণের খোঁজে গিয়েছেন। আপনি জানেন যে, কোন স্থানে জীব থাকলে পানিও থাকবে (প্রস্তাব ১)। আপনি উক্ত গ্রহে একটি জীব খুঁজে পেলেন (প্রস্তাব ২)। সুতরাং, আপনি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনিত হবেন যে উক্ত গ্রহে পানি আছে (সিদ্ধান্ত)। এই ধরণের রিজনিংকে বলা হয় Deductive Reasoning।

অর্থাৎ, ডিডাকটিভ রিজনিং-কে নিচের কাঠামো দিয়ে প্রকাশ করা যায়।

প্রস্তাব ১: সকল ‘ক’-ই ‘খ’।

প্রস্তাব ২: ‘গ’ হচ্ছে একটি ‘ক’।

সুতরাং: ‘গ’-ও একটি ‘খ’।

দুই, আপনি আপনার জীবনে যতগুলো কাক দেখেছেন সবগুলোই কালো (উপাত্ত)। সুতরাং, আপনার প্রকল্প বা হাইপোথিসিস হচ্ছে যে আপনি যদি আরেকটি কাক দেখেন তা কালো হবে (সিদ্ধান্ত)। এই ধরনের রিজনিংকে বলা হয় Inductive reasoning।

উপাত্ত: আপনার দেখা সকল কাক কালো।

সিদ্ধান্ত: সকল কাকই কালো।

ইনডাকটিভ রিজনিং-এর সমস্যা হলো আপনি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন আপনার সীমিত পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে। হতে পারে আপনার একজন বন্ধু একদিন একটি ‘সাদা কাক’ দেখতে পেলো। তখন আপনার পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে প্রাপ্ত সিদ্ধান্তটি ভুল প্রমানিত হবে।

ইনডাকটিভ রিজনিং-কে নিচের কাঠামো দিয়ে প্রকাশ করা যায়।

উপাত্ত: সকল আপাত পর্যবেক্ষণ লব্ধ ‘ক’-ই ‘খ’।

সিদ্ধান্ত: সকল ‘ক’-ই ‘খ’।

তিন, আপনি একজন অনুজীব বিজ্ঞানী। আপনি দেখলেন ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে যে ফ্ল্যাজেলা আছে তাতে চল্লিশটি বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন একটি সুনির্দিষ্ঠ গঠনে পরস্পরের সাথে আন্ত:নির্ভরশীল প্রক্রিয়ায় একটি ফিতার ন্যায় অংশের ঘূর্ণনের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার নড়াচড়ার কাজ সম্পন্ন করে। আপনার মাথায় প্রশ্ন আসলো এ ধরনের একটি গঠন কিভাবে সৃষ্টি হল?

আপনি পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন যে একমাত্র মানুষের মত ‘বুদ্ধিমান’ সত্ত্বাই এ ধরনের জটিল গঠন তৈরী করতে পারে- যেখানে অনেকগুলো পরস্পর নির্ভরশীল অংশের সমন্বয়ে গঠিত কোন যন্ত্র একটি নির্দিষ্ট কাজ বা উদ্দেশ্য সম্পাদন করতে পারে। কোন এলপাতাড়ি প্রক্রিয়া এ ধরনের জটিল গঠন কখনও একা একা তৈরী হয় না। যেখানে আপনি কখনো দেখতে পান নি একটি টর্ণেডো কোন স্তুপীকৃত ইট থেকে কোন ঘর বানিয়ে দিয়েছে। সেখানে কোন একটি মেশিন একা তৈরী হয়ে গিয়েছে সেটা অসম্ভব।

সুতরাং, আপনি অনুসিদ্ধান্তে আসলেন যে উক্ত ব্যাকটেরিয়া ফ্ল্যাজেলাম কোন র‍্যানডম চান্সের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। এর পিছনে নিশ্চয়ই কোন ডিজাইনার ইন্টেলিজেন্স আছে।

এ ধরনের রিজনিং-কে বলা Abductive Reasoning ।

অন্যভাবে একে বলা হয়- Inference to the best explanation

অথাৎ, একাধিক উপাত্তের জন্য যদি কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ বা প্রকল্প থাকে, তার মধ্যে সর্বত্তোম কারণ বা প্রকল্পটিকে বেছে নেয়াই হচ্ছে অ্যাবডাকটিভ রিজনিং।

সুতরাং, অ্যাবডাকটিভ রিজনিং-এর কাঠামো হচ্ছে –

প্রস্তাব ১: ‘ক’ হবার জন্য ‘খ’ বা ‘গ’ দায়ী।

প্রস্তাব ২: পর্যবেক্ষনে দেখা গেছে ‘ক’ জাতীয় কার্যকারণ ‘চ’-এর পিছনে ‘খ’ দায়ী।

সুতরাং: ‘ক’ হবার পিছনে সবত্তোম ব্যাখ্যা হচ্ছে ‘খ’ দায়ী।

অ্যাবডাকটিভ ইনফারেন্স-এর একটি সমস্যা হল, একটি সর্বচ্চো সম্ভাব্য কারণকে নির্দেশ করে। কিন্তু, উক্ত কারণ যে নিশ্চিতভাবেই দায়ী তা বলতে পারে না। ব্যাবহারিক কারণে আনুসঙ্গিক উপাত্ত থেকে এটিকেই বেস্ট ব্যাখ্যা হিসেবে ধরে নেয়া হয়।

সুতরাং, অনুমান/সিদ্ধান্ত কিভাবে নেয়া হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে কারণ অনুসন্ধান (Reasoning) তিন ধরনের হতে পারে।

১. Deductive reasoning

২. Inductive reasoning

৩. Abductive reasoning

এই তিন ধরনের রিজনিং প্রক্রিয়াই যে কোন বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একটি গবেষণায় উক্ত রিজনিং-এর যে কোন একটি বা একাধিক প্রয়োগ হতে পারে।

যারা বৈজ্ঞানিক বা স্বাস্থ্য গবেষক হতে চান, তাদের এই রিজনিং প্রক্রিয়া সম্পর্কে সম্মক ধারণা থাকা এবং তা চর্চা করা জরুরী।

আদিম পৃথিবীতে আদি কোষ বা তার উপাদান প্রোটিন, ডিনএনএ বা আরএনএ দৈবাৎ (Randomly) তৈরী হওয়া আদৌ কি সম্ভব?

দুদিন আগে সার্বজনিন সম্ভাব্যতার সীমা নিয়ে লিখেছিলাম। বিজ্ঞানী David Abel-এর ভাষায় কোয়ন্টাম ওয়ার্ল্ডের কোন ইভেন্ট-এর ইউনিভার্সাল প্লসিবিলিটি ম্যাট্রিক্স (১) হল ১০^১৪০। অর্থাৎ, কোন ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা যদি ১০^১৪০-এর মধ্যে একবার হয় এবং উক্ত ঘটনা ঘটার জন্য মহাবিশ্বের সকল পার্টিকেল ও সকল সময় ব্যবহার করার সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে ঘটনাটি একবার হলেও ঘটবে। কিন্তু, কোন ঘটনা এই সীমাকে ছাড়িয়ে গেলে উক্ত ঘটনা ঘটবার সম্ভাব্যতা কার্যত শূন্য।

আমরা জানি, একটি স্বত:বিভাজনশীল কোষের ভেতর ডিএনএ, আরএনএ ও প্রোটিন কমপ্লেক্স থাকতে হবে। চিন্তার সুবিধার্তে ধরে নেই যে পৃথিবীর আদিম পরিবেশে প্রোটিন বা ডিএনএ বা আরএনএ-আগে এসেছে । এরপর ধাপে ধাপে কোষ তৈরী হয়েছে (যা আসলে সম্ভব কিনা আলোচনা সাপেক্ষ)।

এবার, উপরোক্ত সম্ভাবত্যার সীমার কথা মাথায় রেখে আসুন দেখি আদিম পরিবেশে প্রোটিন বা ডিএনএ বা আরএনএ তৈরী হওয়া সম্ভব কি না।

প্রোটিন (তথা এনজাইম) আগে আসবে?

ডিএনএ না থাকলে প্রোটিনের কোড থাকবে কোথায় বা প্রোটিন কাজ করবে কার উপর? এছাড়া, মাত্র ১৫০টি অ্যামাইনো এসিড দিয়ে নির্মিত একটি মাঝারি সাইজের সুনির্দিষ্ট প্রোটিন আসাও গাণিতিকভাবে অসম্ভব একটি ব্যাপার। ডগলাস এক্স-এর হিসেবে অনুযায়ী এর সম্ভাব্যতা ১০^১৬৪। [২] অর্থাৎ, যে কোন র‍্যাণ্ডম ঘটনা এই সীমাকে ছাড়িয়ে গেলে আমাদের মহাবিশ্বে তা ঘটার সম্ভাবনা নেই। একটি মাঝারি সাইজের প্রোটিনের এই অবস্থা। অথচ, আরএনএ পলিমারেজ এনজাইম ১০০০-এর বেশী অ্যামাইনো এসিড যুক্ত তিনটি প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত হয়। উল্লেখ্য যে, আরএনএ-র কপি তৈরীর জন্য আরএনএ পলিমারেজ এনজাইম লাগবে এবং আরএনএ-র জন্য সুনির্দিষ্ট পরিমানে নিউক্লিউকিওটাইড-এর যোগান সুনির্দিষ্ট তরল মাধ্যমে থাকতে হবে।

ডিএনএ আগে আসবে?

ডিএনএ থেকে তথ্য পড়বে কে? যদি ডিএনএ অণু এমন কোন গঠন তৈরী করতে সক্ষম হত যা এনজাইমের মত কাজ করে তাহলেও চিন্তা করার সুযোগ থাকতো। কিন্তু, আমরা জানি, ডিএনএ বৈচিত্রপূর্ণ গঠন তৈরী করতে পারে না। অর্থাৎ ডিএনএ কোন ক্রিয়াশীল এনজাইম বা স্ট্রাকচারাল প্রোটিনের মত গাঠনিক বৈচিত্র তৈরী করতে অক্ষম। সুতরাং বাকী রইল আরএনএ। আরএনএ কি কেমিকেল এভল্যুশন তথা এবায়োজেনেসিসকে উদ্ধার করতে পারবে?

বিজ্ঞানীরা ল্যাবরেটরীতে এমন এক ধরণের আরএনএ সংশ্লেষ করতে পেরেছেন যা নিয়ন্ত্রিত ও সুনির্দিষ্ট পরিবেশে এনজাইম হিসেবে কাজ কোরে আরএনএ পলিমারাইজেশনেকে (অর্থাৎ আরএনএ থেকে আরএনএ তৈরী হওয়া-কে) প্রভাবিত করতে পারে। অর্থাৎ, একটি সম্পূরক আরএনএ টেমপ্লেট-এর বিপরীতে নিউক্লিওটাইড (A এর বিপরীতে U, U এর বিপরীতে A, G এর বিপরীতে C, এবং C এর বিপরীতে G) যোগ করার মাধ্যমে নিজের একটি কপি তৈরী করতে পারে। এই বিশেষ ধরণের আরএনএকে বলে রাইবোজাইম। এর মাধ্যমে তারা বলতে চাচ্ছেন যে, আদিম পরিবেশে এ ধরণের একটি রাইবোজাইম আসার মাধ্যমে সেল্ফ-রেপ্লিকেশনের সূচনা হয়েছে এবং পরবর্তীতে ‘কোন একটি উপায়ে’ কোষের অন্যান্য গঠনগুলোর (তথা ডিএনএ, ও বিভিন্ন প্রোটিন, ফসফোলিপিড, গ্লাইকোক্যালিক্স) আবির্ভাব হয়েছে! যে কোন ব্যক্তি একটু মাথা খাটালেই বুঝবে এ ধরণের চিন্তা কতখানি অ্যাবসার্ড!

কিন্তু কেন?

এক, পৃথিবীর আদিম পরিবেশ ল্যাবরেটরীর মত নিয়ন্ত্রিত ছিলো না।

দুই, ‘রাইবোজাইম নিজের একটি কপি তৈরী করতে পারে’ এই অবস্থা থেকে ‘আরএনএ প্রোটিনের তথ্য ধারণ করে এবং তা প্রোটিন সংশ্লেষ করে’ এই অবস্থায় যাওয়ার কোন পথ নেই। কারণ, উপরে আমরা ডিএনএ-র ক্ষেত্রে যে রকম বলেছি ঠিক তেমনি কোন্ কোডনটি কোন্ অ্যামাইনো এসিডের জন্য নির্ধারিত হবে সেটি নির্বাচন করা একটি বুদ্ধিমান ‘মাইণ্ড’-এর কাজ। তদুপরি, যদি অপটিমাম ইউনিভার্সাল কোডনের জন্য র‍্যাণ্ডম অনুসন্ধান করা সম্ভবও হতো, সেক্ষেত্রে প্রতি সেকেণ্ডে ১০^৫৫টি অনুসন্ধান চালাতে হতো। কিন্তু, বায়োফিজিসিস্ট হার্বাট ইওকি হিসেব করে দেখিয়েছেন র‍্যাণ্ডম অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় ১.৪০ x ১০^৭০টি সম্ভাব্য কোডনের মধ্যে উক্ত অপটিমাম কোডন সিস্টেমকে খুঁজে বের করতে হবে এবং হাতে সময় পাওয়া যাবে ৬.৩ x ১০^১৫ সেকেণ্ড। [৩] এছাড়াও, রাইবোজোমে যে প্রোটিন সিনথেসিস হয় তাতে অনেকগুলো সুনির্দিষ্ট প্রোটিন ও আর-আরএনএ-র নির্দিষ্ট অবস্থানগত ও তড়িৎ-রাসায়নিক ভূমিকা আছে। অথচ, আরএনএ প্রোটিনগুলোর মত বিভিন্ন ধরণের স্ট্রাকচার গঠন করতে পারে না। কারণ, আরএনএ-র নিওক্লিটাইডের ধরণ সংখ্যা সীমিত এবং তাদের কেমিক্যাল স্ট্রাকচারও অ্যামাইনো এসিডের ন্যায় বৈচিত্রপূর্ণ নয়।

তিন, রাইবোজাইম নিজের কপি করতে পারে তখনই যখন তার সম্পূরক একটি টেমপ্লেট থাকে। অর্থাৎ, আদিম পরিবেশে সেল্ফ রেপ্লিকেটিং রাইবোজাইম আসতে হলে রাইবোজাইম ও তার সম্পূরক টেমপ্লেট দুটো অণুরই একসাথে আসতে হবে। জনসন ও তার সহকর্মীরা দেখিয়েছেন যে, আংশিকভাবে নিজের কপি তৈরী করতে পারে এরকম একটি রাইবোজাইমের নিউক্লিওটাইডের সংখ্যা ১৮৯। সুতরাং, উক্ত স্পেসিফিক রাইবোজাইম এবং তৎসংশ্লিষ্ট সম্পূরক ও সুনির্দিষ্ট টেমপ্লেট-এর একসাথে আসার সম্ভাব্যতা ৪^১৮৯ x ৪^১৮৯ তথা ৪^(১৮৯+১৮৯=৩৭৮) তথা প্রায় ১০^২৭৭, যা বিশ্বজনীন সম্ভাব্যতার সীমা ১০^১৪০ কে ছাড়িয়ে যায় (অর্থাৎ, অসম্ভব)। অথচ, পুরোপুরি কপি করতে পারে এরকম একটি রাইবোজাইমে নিউক্লিওটাইড সংখ্যা লাগবে আরও বেশী। অন্যদিকে, অর্গেল ও জয়েস দেখিয়েছেন যে, এরকম দুটি আরএনএ খুজে পাওয়ার জন্য ১০^৪৮ টি অণু খুঁজতে হবে যা পৃথিবীর মোট ভরকে অতিক্রম করে যায়। [৪] অর্থাৎ, আমরা দেখতে পেলাম আরএনএ এবায়োজেনেসিসকে উদ্ধার করতে কোন অবস্থাতেই সক্ষম নয়।

শুধুমাত্র একটা প্রোটিন বা আরএনএ আসতে যদি এত হার্ডেল পার হতে হয়। আপনারা একবার অনুমান করে দেখুনতো অসংখ্য সুনির্দিষ্ট মাত্রা ও গঠনের ডিএনএ, আরএনএ, প্রোটিন, ফসফোলিপিড, কার্বহাইড্রেট, মিনারেল কম্পোজিশান সহ আন্ত:কোষ তরল সমেত কোষ দৈবাৎ আসা কি আদৌ সম্ভব?

রেফারেন্স:

১. Abel DL. The universal plausibility metric (UPM) & principle (UPP). Theor Biol Med Model. 2009;6(1):1–10.

২. Meyer SC. Signature in the Cell. HarperCollins Publisher Inc. 2009; Page: 172

৩. Rana F. The Cell’s Design. Baker Books. 2009; Page: 175

৪. Stephen C. Meyer. Signature in the Cell. HaperCollins Publisher Inc. 2009; Page: 250

পৃথিবী থেকে নক্ষত্রের দূরত্ব, রেডশিফট, এবং মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ

গত ১৩/০৭/২০২২ তারিখে নাসার James Webb Space Telescope দিয়ে তোলা মহাশূণ্যের প্রায় ধূলিকনার সমান একটি অংশের ছবি প্রকাশিত হয়। উক্ত স্থিরচিত্রে ধরা পড়েছে প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগের অসংখ্য নক্ষত্ররাজী ও ছায়াপথের ছবি।

একটা বিশেষায়িত দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে বিজ্ঞানীরা মহাশূন্য পর্যবেক্ষণ করছেন। এতে বিভিন্ন ছায়াপথ থেকে আসা আলো ধরা পড়েছে। কিন্তু, তারা কিভাবে পরিমাপ করছেন যে কোন্ ছায়াপথ কত দূরে অবস্থান করছে? কিভাবে তারা হিসেব করলেন ৪.৬ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরত্বের নক্ষত্র থেকে আসা আলো দূরবীক্ষণ যন্ত্রে ধরা পড়ছে?

সহজ কথায়, পৃথিবী থেকে একটি নক্ষত্রের দূরত্ব কিভাবে হিসেব করা হয়?

এটি বিজ্ঞানীরা করেন দুটো উপায়ে।

এক, পৃথিবীর কক্ষপথের দূরত্ব এবং পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান নক্ষত্রের কোণ এর সাহায্য নিয়ে জ্যামিতিক উপায়ে। এ প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞানীরা পৃথিবী কক্ষপথের এক প্রান্তে পৌছার পর নক্ষত্রের সাথে পৃথিবীর কোণ হিসেব করেন এবং ৬ মাস পর আরেক প্রান্তে গেলে উক্ত নক্ষত্রের কোণ আবার হিসেব করেন। এভাবে পৃথিবীর কক্ষপথের সাথে নক্ষত্রের যে স্থানিক বিচ্যুতি তৈরী হয় (Parallax) তার সাহায্যে নক্ষত্রটি থেকে পৃথিবীর দূরত্ব হিসেব কসে বের করা যায়। তবে এই ধরণের হিসেব সম্ভব হয় শুধুমাত্র পৃথিবী থেকে ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত তারকাসমূহের ক্ষেত্রে।

পৃথিবীর সাথে নক্ষত্রের সৃষ্ট প্যারালাক্স থেকে দূরত্ব নির্ণয় (সূত্র)

দুই, পৃথিবী থেকে ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত তারকার ক্ষেত্রে অনুরূপ সরাসরি দূরত্ব মাপার কোন পদ্ধতি নেই। ফলে বিজ্ঞানীরা আলোর উজ্জ্বলতার পরিমাপ হিসেব করে দূরত্ব নির্ণয় করেন। মজার বিষয় হলো তারকার কালার স্পেকট্রাম উক্ত তারকার উজ্জ্বলতার একটি ভালো নির্দেশক। তারকার রঙের সাথে উজ্জ্বলতার এ সম্পর্ক বের করা হয়েছে পৃথিবী থেকে সরাসরি দূরত্ব পরিমাপযোগ্য তারকার উপর গবেষণা করে।

দূরবর্তী ছায়াপথের উজ্জ্বলতা অনেক কম হয়। তবে ছায়াপথ সমূহের Gravitational Lensing এর কারণে, দূরবর্তী ছায়াপথ সমূহের আলো উজ্জ্বলতা একেবারে শূণ্য হয়ে যায় না।

অন্যদিকে ছায়াপথ (Galaxy) বা নক্ষত্রপুঞ্জের রং-থেকে আবিস্কার হয়েছে যে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ হচ্ছে। ডপলার ইফেক্টের কারণে একটি গতিশীল বস্তু আপনার থেকে যত দূরে যাবে, উক্ত বস্তু থেকে নি:সৃত তরঙ্গের দৈর্ঘ তত বাড়তে থাকবে। ফলে আলোর ক্ষেত্রে তা লাল আলো বা ইনফ্রারেড আলোতে পরিণত হবে। এ ঘটনাকে বলে Redshift । বিজ্ঞানী স্লাইফার প্রথম আবিস্কার করেন যে দূরবর্তী ছায়াপথ গুলো থেকে আসা আলোর রেড-শিফট হয়েছে। বিজ্ঞানী এডউইন হাবল দেখান যে গ্যালাক্সীগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তথা মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ হচ্ছে।

মজার বিষয় হল, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণজনিত এই রেড শিফট তারকার নিজস্ব গতির ফলে হয় না। বরং, তারকাররাজীর মধ্যবর্তী শূণ্যস্থানের সম্প্রসারণের ফলে হয়। কোন একটি তারকা থেকে নি:সৃত আলো পৃথিবী পর্যন্ত সম্প্রসারমান স্পেস দিয়ে আসতে গিয়ে রেড-শিফট হয়ে যায়।

মহাশূণ্যের সম্প্রসারণের ফলে সৃষ্ট দূরবর্তী ছায়াপথের রেডশিফট
মহাশূণ্যের সম্প্রসারণের ফলে সৃষ্ট দূরবর্তী ছায়াপথের রেডশিফট (সূত্র)

বিজ্ঞানী হাবল আরও দেখান যে কোন একটি ছায়াপথের দূরে সরে যাওয়ার গতি উক্ত ছায়পথ থেকে পৃথিবীর দূরত্বের সমানুপাতিক। সম্প্রসারমান মহাবিশ্বের কোন কোন জায়গায় সম্প্রসারণের গতি আলোর গতির সমান বা তার বেশী। ফলে উক্ত জায়গা থেকে কোন আলো আমাদের কাছে কখনও পৌছে না। একে বলে Cosmic Event Horizon । ইভেন্ট হরাইজনের অন্তর্গত মহাবিশ্ব হচ্ছে ‌’দৃশ্যমান’ মহাবিশ্ব। আমরা জানিনা এই ইভেন্ট হরাইজনের পরে মহাবিশ্বের কোনো অংশ আছে কি নেই? বা কতটুকু আছে।

Cosmic event horizon
Cosmic Event Horizone (সূত্র)

প্রিয় পাঠক, একবার চিন্তা করে দেখুনতো যেই মহাবিশ্ব এত বিশাল, এত বিস্তৃত! সেই মহাবিশ্বের স্রষ্টার ক্ষমতার বিশলতা কত বেশী?

সুবহানআল্লাহ!

“যিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সাত আসমান। রহমানের সৃষ্টিতে আপনি কোনো খুঁত দেখতে পাবেন না; আপনি আবার তাকিয়ে দেখুন, কোনো ত্রুটি দেখতে পান কি?” (সুরা মূলক ৬৭, আয়াত- ৩).

“আর আসমান আমরা তা নির্মাণ করেছি আমাদের ক্ষমতা বলে এবং আমরা নিশ্চয়ই মহাসম্প্রসারণকারী।” (সুরা আল যারিয়াত ৫১, আয়াত-৪৭)

“মানুষ সৃষ্টি অপেক্ষা আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি অবশ্যই বড় বিষয়, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।” (সুরা গাফির ৪০, আয়াত-৫৭)

“আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে নিদর্শনাবলী রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্য। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহ্‌র স্মরণ করে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে, আর বলে, ‘হে আমাদের রব! আপনি এগুলো অনর্থক সৃষ্টি করেননি , আপনি অত্যন্ত পবিত্র, অতএব আপনি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।’” (সুরা আল ইমরান ৩, আয়াত-১৯০,১৯১).

তথ্যসূত্রঃ

1. https://science.howstuffworks.com/question224.htm

2. https://www.space.com/30417-parallax.html

3. https://swimone21.medium.com/how-is-the-expansion-of-the…

4. https://en.wikipedia.org/wiki/Event_horizon

5. https://en.wikipedia.org/wiki/Cosmological_horizon